রাওয়ালপিন্ডিতে যেন এক স্বপ্নের গল্প লেখা হলো। ৩৮ বছর বয়সে টেস্ট অভিষেক, আর সেই ম্যাচেই পাঁচ উইকেট তুলে নিলেন আসিফ আফ্রিদি! বয়স যেন তাঁর কাছে শুধু একটা সংখ্যা।
সিমন হারমারের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর সেই শেষ বলটা ছিল তাঁর পাঁচ উইকেটের পূর্ণতা। বলটি লেগস্ট্যাম্পে সোজা ঢুকে যাচ্ছিল, রিভিউ নিয়েও বাঁচানো গেল না। সঙ্গে সঙ্গে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস—তাঁদের মাঝেই হারিয়ে গেলেন আসিফ। হাসলেন, চোখে জলও চিকচিক করছিল হয়তো।
পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে আসিফ পরিচিত এক পরিশ্রমী মুখ। ২০০৯ সালে অভিষেকের পর থেকে দেড় যুগ ধরে খেলে যাচ্ছেন অবিরাম। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপানোর স্বপ্নটা বুকে বেঁধে তিনি থামেননি।
এখন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলেছেন ৫৭ ম্যাচ, উইকেট নিয়েছেন ১৯৮টি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৬০ ম্যাচে উইকেট ৮৩টি। টি-টোয়েন্টিতেও তাঁর সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা—৮৫ ম্যাচে ৭৮ উইকেট, ইকোনমি সাতের কাছাকাছি। ২০২২ সালে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) প্রথমবারের মতো মাঠে নামেন লাহোর কালান্দার্সের হয়ে।
তবে তাঁর পথচলা একেবারে মসৃণ ছিল না। ঘরোয়া ক্রিকেটে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন আসিফ। ছয় মাস পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড তাঁকে ফিরতে অনুমতি দেয়। ফিরে এসে তিনি প্রমাণ করেছেন—অতীত নয়, বর্তমানে কী করছেন সেটাই আসল কথা।
৩৮ বছর ২৯৯ দিনে পাকিস্তানের টেস্ট দলে অভিষেক হয় আসিফের। বুড়ো বয়সে পাকিস্তানের টেস্ট জার্সি পরাদের মধ্যে তিনি আছেন দ্বিতীয় স্থানে। তাঁর আগে একমাত্র মিরান বখশই আছেন তালিকায়, যিনি ১৯৫৫ সালে ভারতের বিপক্ষে ৪৭ বছর বয়সে করেছিলেন অভিষেক।
রাওয়ালপিন্ডিতে সেই ইতিহাসের পাতায় নিজের নামটা লিখে নিলেন আসিফ আফ্রিদি। শুধু টেস্ট অভিষেক নয়, সঙ্গে যোগ করলেন পাঁচ উইকেটের বীরত্বও। বয়স, প্রতিকূলতা, অতীত—সবকিছু পেছনে ফেলে নিজের গল্পটা তিনি লিখেছেন নতুন করে। এক অনুপ্রেরণার নাম এখন—আসিফ আফ্রিদি।