প্রত্যাশিত ইনটেন্টের অপ্রত্যাশিত মঞ্চায়ন

একেবারে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে যা হয়। হয় মারো, নয়তো মরো। আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে আসলে বাংলাদেশের পেছন ফিরে তাকানোর কোন উপায় ছিল না। সেজন্যই হয়তো মধ্যবিত্ত মানসকিতা থেকে বের হয়ে আজ একেবারে আগ্রাসী একটা একাদশ নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। কেননা আজও ফিয়ারলেস ক্রিকেটটা মাঠে না গড়ালে, দেশে ফিরে আসা ছাড়া যে আর কোন উপায় নেই।

প্রথমদিন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে একাদশ নিয়ে প্রশ্ন ছিল অনেক। বরং সরাসরিই বলা যায় বাংলাদেশ একাদশ তৈরিতে বিরাট ভুল করে ফেলেছিল। সেজন্যই আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বড় তিন পরিবর্তন বাংলাদেশের একাদশে। গত ম্যাচে খেলা নিয়মিত দুই ওপেনারই আজ সাইড বেঞ্চে। এছাড়া পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও জায়গা হারিয়েছেন।

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশ নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে অনেক। তবে সেসব আলোচনা বেশিই সইতে হয়েছে টিম ম্যানেজম্যান্টকে। অথচ অধিনায়ক সাকিবও শুনিয়ে গিয়েছিলেন ফিয়ারলেস ক্রিকেটের গল্প। এছাড়া স্বয়ং বিসিবি সভাপতিও জানিয়েছিলেন একাদশ নির্বাচন সাকিবই করেন।

তাহলে কেন তিনি নাঈম শেখকে হঠাৎ করে দলে এনে তাঁকে দিয়ে আবার ওপেনও করালেন? অনেকদিন পর ইনজুরি কাটিয়ে আসা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনই বা কী করে অটোচয়েজ হয়ে গেলেন। এসব প্রশ্ন নিশ্চয়ই অধিনায়ক সাকিবকেও করা যায়।

তবে এইসবকিছুই ভুলে আজ নতুন করে শুরু করতে চাইলো বাংলাদেশ। কেননা নতুন শুরুর যে গল্পটা এতদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল সেটা দেখানোর আজই শেষ সুযোগ বাংলাদেশের কাছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ হারলে বাংলাদেশের এশিয়া কাপ যাত্রা এখানেই শেষ। আর এই ম্যাচ জিতলেই বাংলাদেশ উঠে যাবে সুপার ফোরে। খেলার সুযোগ হবে আরো তিনটি ম্যাচ।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হচ্ছিল পাওয়ার প্লেতে। বাংলাদেশের ওপেনাররা কোনভাবেই পাওয়ার প্লে ব্যবহার করতে পারছিলেন না। নিয়মিত ওপেনাররা বরং বলগুলো নষ্ট করে আসছিলেন। সেখান থেকে বের হতেই আজ মেকশিফট ওপেনারের পথে হাটলো বাংলাদেশ।

ফলে নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয় দুজনই জায়গা হারিয়েছেন। তাঁদের জায়গায় ওপেন করেছেন সাব্বির রহমান রুম্মন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। পাওয়ার হিটিং এবিলিটির জন্যই লম্বা সময় পরে আবার এশিয়া কাপের স্কোয়াডে ফিরেছিলেন তিনি। আজ একেবারে সুযোগ মিললো দলের হয়ে ওপেন করার।

সাব্বিরের সাথে ওপেনিং এর দায়িত্বে ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজও। মিরাজ যুক্ত হওয়াতে দলে একজন স্পিন বোলিং অপশনও বাড়লো। কেননা এই উইকেটে স্পিনটা বেশ ভালোভাবেই ধরছে।

ওদিকে দলে আরেক পরিবর্তন পেস ডিপার্টমেন্টে। আগের ম্যাচে ডেথ ওভারে রান খরচ করে দলকে ম্যাচ হারিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। একই ভুল অবশ্য করেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমানও। তবে আজও মুস্তাফিজের উপর ভরসা রেখেছে বাংলাদেশ দল। তবে একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন সাইফউদ্দিন। তাঁর পরিবর্তে দলে যুক্ত হয়েছেন এবাদত হোসেন। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আজই অভিষেক হলো এই পেসারের।

তবে মেকশিফট ওপেনারের এই তত্ব বেশ কাজে আসলো বাংলাদেশের জন্য। আজ ম্যাচের শুরু থেকেই অন্তত আক্রমণাত্মক ক্রিকেটটা খেলার চেষ্টা করেছেন সাব্বির রহমান ও মিরাজ। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পারলো ৫৫ রান। পাওয়ার প্লের এমন ব্যবহার বাংলাদেশ শেষ কবে করেছিল মনে পড়ে?

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link