অ্যাতলেটিকো বনাম বার্সা, অ্যান অ্যাবসোল্যুট সিনেমা

ফুটবল বিধাতা বোধহয় টুইস্টের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন, তাই তো ৪-২ স্কোরলাইন পছন্দ হলো না তাঁর। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ৮৪ মিনিটের সময় গোল করেন বসেন মার্কোস লরেন্তে। স্বয়ং দিয়েগো সিমিওনেও বোধহয় এমনটা আশা করেননি, অন্তত তাঁর ফুটবলার বদল দেখে মনে হচ্ছিলো আরো রক্ষণাত্মক হয়ে যাবেন।

চোখজোড়া বিস্ময়ে বেরিয়ে আসার উপক্রম, চোয়াল ঝুলে পড়েছে আর ডিরেক্টর মার্টিন স্কোর্সেজি তখন দুই হাত উঁচু করে আছেন – অ্যাবসোল্যুট সিনেমা। বার্সেলোনা বনাম অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের ম্যাচটা দেখার পর আপনার প্রতিক্রিয়া নির্ঘাত এই ছবিটার মতই! কি দেখলেন, কি ঘটলো ক্যাম্প ন্যুর ওই ঘন্টা দেড়েক সময়ে?

জয় নয়, দুই দলই এদিন ব্যস্ত ছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর কাব্য লেখায়। কে কার চেয়ে বেশি বিস্ময় উপহার দিতে পারবেন সেটাই যেন ছিল লক্ষ্য। তা নাহলে ঘড়ির কাঁটা দুই অঙ্কের ঘরে পা রাখার আগেই কিভাবে দুই গোলের লিড পেয়ে যায় অ্যাতলেটিকো, জুলিয়ান আলভারেজ এবং অ্যান্টনি গ্রিজম্যানের গোলে উড়ন্ত সূচনা পায় তাঁরা। প্রতিপক্ষের মাঠে নেমেই এতটা সাহসী হয়ে উঠতে কবে দেখা গিয়েছিল তাঁদের? বিস্ময়ের শুরুটা এখানেই!

এরপরই আসে বার্সেলোনার পালা, স্রেফ দুই মিনিট – ১৮ এবং ২১ মিনিটের মাথায় সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। পেদ্রি গঞ্জালেজ দেখান তাঁর চিরচেনা জাদু আর বার্সার জার্সিতে প্রথম গোল করে পাউ কুবার্সি উপহার দেন ডিগবাজি, সেটা করতে গিয়ে অবশ্য তালগোল পাকিয়ে ফেলেছিলেন তিনি৷

তবে তাঁর দল তালগোল পাকায়নি, মোমেন্টাম পেয়ে আরো চেপে বসেছিল অ্যাতলেটিকোর উপর। বিরতির আগে ইনিগো মার্টিনেজ এগিয়ে দেন কাতালান জায়ান্টদের; লামিন ইয়ামাল কি আর চুপ করে থাকতে পারেন? দুর্দান্ত স্টাইলে গোল করার সুযোগ করে দেন রবার্ট লেওয়ানডস্কিকে, বার্সেলোনার লিড তখন দ্বিগুণ।

ফুটবল বিধাতা বোধহয় টুইস্টের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন, তাই তো ৪-২ স্কোরলাইন পছন্দ হলো না তাঁর। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ৮৪ মিনিটের সময় গোল করেন বসেন মার্কোস লরেন্তে। স্বয়ং দিয়েগো সিমিওনেও বোধহয় এমনটা আশা করেননি, অন্তত তাঁর ফুটবলার বদল দেখে মনে হচ্ছিলো আরো রক্ষণাত্মক হয়ে যাবেন।

যদিও চূড়ান্ত ক্লাইম্যাক্স তখনো বাকি ছিল; একেবারে অন্তিম মুহূর্তে জুলস কুন্দে পিছলে পড়ে যান, লিভারপুল কিংবদন্তি স্টিভেন জেরার্ডের মত। এরপরই লিনোর পাস থেকে অ্যালেক্সান্ডার সরলথ আলতো ছোঁয়ায় অবিশ্বাস্য একটা ড্র এনে দেন দলকে।

কিউলরা অবশ্য সরলথকে প্রশ্ন করতে পারে কেন বার্সার সঙ্গে এত শত্রুতা তাঁর, এইতো গত ডিসেম্বরেই শেষ মুহূর্তে গোল দিয়ে বার্সেলোনাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এবার করলেন সমতাসূচক গোল – যেন বার্সাকে মলিন করে দিতেই পাঠানো হয়েছে তাঁকে। দ্বিতীয় লেগের ভাগ্যও কি ঠিক করে দিবেন এই তারকা? উত্তর তোলা রইলো অদৃশ্যের হাতে।

Share via
Copy link