বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন যাদের অবদানে সামনে এগোচ্ছে তাঁদের পুরষ্কৃত করা হচ্ছিল না অনেকদিন ধরেই। তবে আট বছরের পুরষ্কার গতকাল একসাথে দেয়া হয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের উদ্যেগে। ক্রীড়াঙ্গনে অবদান রাখার জন্য দেশের ৮৫ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে ‘জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার’ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বাংলাদেশ জুডো-কারাতে তথা মার্শাল আর্টের জীবন্ত কিংবদন্তী বীরমুক্তিযোদ্ধা আওলাদ হোসেন।
আওলাদ হোসেনই এদেশে আত্মরক্ষামূলক খেলাধুলার প্রবর্তক। ৬০ এর দশকের শেষের দিকে তৎকালীন জাপান দূতাবাসের সহযোগিতায় শুরু করেন এই খেলা এবং ১৯৬৮ সালে প্রথম বাঙালি হিসেবে অর্জন করেন ব্ল্যাকবেল্ট। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশ জুডো কারাতে ফেডারেশন গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ছিলেন বাংলাদেশ জুডো কারাতে ফেডারেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক।
জুডো-কারাতের প্রচারের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়িয়েছেন, স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েদের আত্মরক্ষার কৌশলগত এ খেলার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে। তিনি ছিলেন জাতীয় খেলোয়াড় ,জাতীয় কোচ, এবং ম্যাচ রেফারিও। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জুডোতে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক ৫ম ড্যান ও জাতীয় ৮ম ড্যান অর্জনকারী এ মানুষটির অবদান বাংলাদেশের জুডো কারাতের ইতিহাসে সর্বদাই স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। সাফ গেমসে জুডো খেলাকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়েও তাঁর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। ফলে বাংলাদেশের জুডো-কারাতেতে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি মিললো জাতীয় ভাবে।
ওদিকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দীর্ঘদিন পর এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য এই ৮৫ জন খেলোয়াড় ও সংগঠককে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। যেখানে ৪৬ জন ছিলেন ক্রীড়াবিদ ও ৩৯ জন রয়েছেন ক্রীড়া সংগঠক। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছে আঠারো ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক, এক লাখ টাকার চেক এবং একটি সম্মাননাপত্র।