খোলসবন্দী সম্রাট বাবরই পাকিস্তানের হারের কারণ

র‍্যাংকিংয়ে এক নম্বর ব্যাটার হিসেবেই বিশ্বকাপ শুরু করেছিলেন বাবর আজম। তবে সেই ভারিক্কি তিনি খুব একটা ধরে রাখতে পারছেন কি-না তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ।

র‍্যাংকিংয়ে এক নম্বর ব্যাটার হিসেবেই বিশ্বকাপ শুরু করেছিলেন বাবর আজম। তবে সেই ভারিক্কি তিনি খুব একটা ধরে রাখতে পারছেন কি-না তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। বিশ্বকাপটা মোটেও ভাল যাচ্ছে না পাকিস্তানের অধিনায়কের। এই যেমন আফগানিস্তানের বিপক্ষেই মন্থর গতির এক ফিফটি করেছেন বাবর। তাতে বরং হারতেই হলো পাকিস্তানকে।

বিশ্বকাপে পাঁচ ইনিংস খেলে ফেলেছেন বাবর আজম। এই পাঁচ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭৪ রান তিনি করতে পেরেছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে। স্ট্রাইকরেট প্রায় ৮০। অথচ এই বিশ্বকাপটা রাঙাচ্ছেন টপ অর্ডার ব্যাটাররাই। সর্বোচ্চ রান সংগ্রহাকদের তালিকায় শীর্ষে থাকা প্রত্যেকেই টপ অর্ডার ব্যাটার।

এমন এক পরিস্থিতিতেও বাবর থেকে যাচ্ছেন বহুদূরে। এমনকি পাকিস্তানের হয়ে রান করার দিক থেকেও বেশ পিছিয়ে আছেন বাবর আজম। এক ম্যাচ কম খেলা আবদুল্লাহ শফিক ম্যাচের মেজাজ বুঝে রান সংগ্রহ করছেন পাকিস্তানের হয়ে। এমনকি রিজওয়ানও খেলছেন কার্য্যকর সব ইনিংস।

তবে বাবর যেন রঙ হারানো এক মুকুট পড়ে খানিকটা দিশেহারা। আফগানিস্তানের বিপক্ষ তিনি ৭৪ রানের ইনিংসটি খেলেছেন ৯২ বল খরচায়। ব্যক্তিগত ইনিংসের ৬৯ তম বলে গিয়ে তিনি দেখা পেয়েছেন এবারের বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতক। নুর আহমেদের উইকেটে পরিণত হওয়ার সেই ওভারটিতেই তিনি হাতখুলে খেলা শুরু করেন।

নুরের করা প্রথম বলে এবারের আসরে ব্যক্তিগত প্রথম ছক্কাটি হাকান পাকিস্তানের কাপ্তান। তিনি যেন খোলসে বন্দী এক ব্যাটিং মহারাজ। আর তাতে দারুণভাবে পীড়ায় রয়েছে গোটা পাকিস্তান দল। দলের সেরা ব্যাটার একেবারে বিপরীতমুখী পারফরম করলে নিশ্চিতরুপেই তা নেতিবাচকতার বিস্তার ঘটায়।

স্বভাবজাত ভঙ্গিমায় তিনি খেলছেন। তবে ভাল শুরু পাওয়া ইনিংসগুলো বড় করতে পারছেন না। অথচ তার কাছ থেকে প্রত্যাশাই থাকে বিশাল সব ইনিংস খেলার। এমনকি আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষের দিকে ২৭ বলে ৪০ রানের এক ঝড় তুলেছিলেন বাবরের সতীর্থ ইফতেখার আহমেদ। অন্যদিকে আফগানিস্তানের ব্যাটাররাও যথেষ্ট ভাল ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনই করেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে বাবরের স্লথ গতির ইনিংস স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের জন্ম দেয়। বড় মঞ্চের তবে বাবর ফিঁকে এমন একটা ধারণার সূত্রপাত ঘটায়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় ভীষণ প্রয়োজন ছিল। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে পাকিস্তানের তাই ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণই ছিল। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই বাবর বাক্সবন্দী হয়ে যান। আর তাই হয়ত বোর্ডে খানিক রান কম জমা পড়েছে। সেই সুযোগটা হাতছাড়া করেনি আফগানিস্তান। জয় তুলে নিয়েছে তারা।

অন্তত এবারের বিশ্বকাপে বাবর সেই বাক্স থেকে বেরিয়ে আসতে এখন অবধি পারেননি। তবে দ্রুতই তার ফেরা প্রয়োজন। অর্ধশতকগুলোকে বড় রানে পরিবর্তন করা প্রয়োজন। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে, চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটারদের এগিয়ে আসার নিদর্শন তো কম নেই। নিশ্চয়ই বাবর আজম পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...