স্বরুপে সম্রাটের কিউই রাজ্যজয়

তিনি যেন প্রমাণই করলেন দলের প্রয়োজনে সবসময় তিনি নিষ্প্রভ থাকেন না। প্রয়োজনে নিজের ব্যাটিংয়ের ধরণেও পরিবর্তন আনতে পারেন তিনি। বৃষ্টির আগে-পরে দুই ভিন্ন গতিতে ব্যাট চালিয়েছেন বাবর।

ইশ সোধির গুগলি আগেভাগেই ধরে ফেললেন। চোখের পলকে সে বল গিয়ে পড়ল সীমানার বাইরে। সোধি তার মাথার উপর দিয়ে যাওয়া বলটা স্রেফ একরাশ হতাশা নিয়ে দেখলেন। বাবর আজম তার গুগলিকে এভাবে সীমানা ছাড়া করবেন সেটা নিশ্চিতরুপেই কল্পনাতীত ছিল সোধির জন্যে।

নিজের দিনে বাবর আজম ঠিক এভাবেই কল্পনার বাইরের সব দৃশ্যের মঞ্চায়নই করেন। যেমনটি করলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। পাকিস্তানের সেমিফাইনালের কিঞ্চিৎ আসা বাঁচিয়ে রাখতে ব্ল্যাকক্যাপসদের বিপক্ষে জয় ব্যতীত অন্য কোন চিন্তা অমূলক।

এমন এক ম্যাচে ব্যাঙ্গালুরুতে ব্ল্যাকক্যাপস ব্যাটাররা চালালেন তাণ্ডব। শাহীন শাহ আফ্রিদি, হাসান আলীদের যেন কোন জবাব জানা ছিল না রাচিন রবীন্দ্র আর কেন উলিয়ানমসনদের ব্যাটিং দৃঢ়তার সামনে। শেষের দিকে গ্লেন ফিলিপসরা পাকিস্তানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেওয়ার সকল আয়োজনই যেন সেরে ফেলতে চাইলেন।

তাতেই নিউজিল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে জমা হলো ৪০১ রান। এবারের বিশ্বকাপে যা কি না দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। পাকিস্তানকে জিততে তাই ম্যাজিকাল কিছুই করতে হতো। সেই দায়িত্বটা অবশ্য নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ফখর জামান। কিউই বোলারদের একা হাতে শাসন করেছেন তিনি।

বাইশ গজে তাকে সাহস জুগিয়ে গেছেন বাবর আজম। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। জয়ের পথ থেকে স্বাভাবিকভাবেই ছিটকে পড়ার কথা। তবে হয়েছে উল্টোটা। প্রথম দফা বৃষ্টি বাঁধা আসার আগে বৃষ্টি আইনে দশ রানে এগিয়ে ছিল পাকিস্তান।

কৃতীত্ব যেমন ফখর জামানের। শতকরা হিসেবে ৪০ শতাংশ কৃতীত্ব বাবর আজমেরও। ফখরের ব্যাটে-বলে সংযোগ হয়েছে দূর্দান্ত। তাইতো বাবর সঙ্গ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তাকে। তবে তিনি দলের উপর চাপ বাড়তে দেননি। ফখর জামানকে নির্ভরতা দিয়েছেন অপরপ্রান্ত আগলে রেখে।

তবে খুব একটা ধীরস্থির গতিতে তিনি খেলেছেন, সেটাও বলার সুযোগ নেই। ৬৬ রান করেছেন তিনি ৬৩ বলে। দু’খানা বিশাল ছয়ের পাশাপাশি ছয়খানা চার এসেছে তার ব্যাট থেকে। বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে রানের চাকা কোনভাবেই স্লথ হতে দেননি বাবর।

তাতে অবশ্য শেষ অবধি অপ্রত্যাশিত এক জয়ের দেখা পেয়ে যায় পাকিস্তান। বৃষ্টি আইনে ২১ রানের জয় পায় পাকিস্তান। ৬৬ রানে বাবর ছিলেন অপরাজিত। তিনি যেন প্রমাণই করলেন দলের প্রয়োজনে সবসময় তিনি নিষ্প্রভ থাকেন না।

প্রয়োজনে নিজের ব্যাটিংয়ের ধরণেও পরিবর্তন আনতে পারেন তিনি। বৃষ্টির আগে-পরে দুই ভিন্ন গতিতে ব্যাট চালিয়েছেন বাবর। ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে দেননি তিনি পাকিস্তানকে। বরং এগিয়েই রেখেছেন শেষ অবধি। প্রথম দফা বৃষ্টি বিঘ্ন ঘটানোর পর হাতখুলে ব্যাট চালিয়েছেন। তাতে করে রানের হিসেবে এগিয়ে ছিল পাকিস্তান।

যদিও এই জয়ে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে খেলার রাস্তাটা একেবারে পরিষ্কার হয়ে যায়নি। তবে সেই আশার আলো একেবারে নিভে যেতে দেননি বাবর আজম। অধিনায়কের কাজটা অন্তত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট হাতে করে দেখিয়েছেন সম্রাট বাবর।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...