অবশেষে এল আত্মবিশ্বাসের জয়

একটা ভীতি নিয়েই শুরু করে বাংলাদেশ। প্রায় দশ বছর ধরে ঘরের মাঠে নেই কোন হোয়াইট ওয়াশ হওয়ার লজ্জা। অন্তত ওয়ানডে ক্রিকেটে।

অবশেষে স্বস্তির জয়। পছন্দের ফরম্যাটে ২০১৪-তে শেষ ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। আবার তৈরি হওয়া সেই সম্ভবনাকে স্রেফ উড়িয়ে জয়ের ধারায় ফেরে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটের বিশাল এক জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে লিটন দাসের দল।

একটা ভীতি নিয়েই শুরু করে বাংলাদেশ। প্রায় দশ বছর ধরে ঘরের মাঠে নেই কোন হোয়াইট ওয়াশ হওয়ার লজ্জা। অন্তত ওয়ানডে ক্রিকেটে। সেই লজ্জায় নিশ্চয়ই পড়তে চায়নি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। তাইতো পেছনের সব গ্লানি মুছে ফেলে একেবারে পূর্ণ উদ্দ্যমে শেষ ওয়ানডেটা খেলতে নামে বাংলাদেশ দল।

টসে হেরে শুরুতেই বোলিংয়ের নিমন্ত্রণ। আগের দিন রেকর্ড গড়া পার্টনারশীপই যেন আফগানিস্তানকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে আগে ব্যাটিং করবার। তবে এদিন আর পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা হয়নি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে বাংলাদেশ যে পাল্টা আঘাত করতে পারে, সেটারই মঞ্চায়ন হলো জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে।

বাংলাদেশের পেসারদের আগ্রাসনে কুপকাত আফগানদের টপ অর্ডার। প্রথমবারের মত এই সিরিজে বল করতে নামা শরিফুল ইসলামই যেন আফগানিস্তানের জন্যে ত্রাসের কারণ হয়ে গেলেন। শুরুটা করলেন তিনি ইব্রাহিম জাদরানের উইকেট শিকার করে। এক ওভারে জোড়া আঘাতসহ চার উইকেট তুলে নেন শরিফুল।

তার সাথে দলের বাকি বোলাররা সঙ্গ দিয়েছে সমানতালে। শুরুর ১৫ রানের মাথায় আফগানদের টপ অর্ডার সাজঘরে। হোয়াইট ওয়াশের আফগান স্বপ্ন তখন বিলাসিতা। তবে সেই পরিস্থিতিও সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। তার অর্ধশতকের উপর ভর করেই কোনমতে ১০০ ছাড়ায়। পূর্ণ ৫০ ওভার খেলার আগেই ১২৬ রানে অল-আউট হাসমতউল্লাহ শাহীদির দল।

নিতান্তই স্বল্প লক্ষ্যমাত্রা। আর তাছাড়া আগ্রাসী বোলিংটা খানিক মনোবলের নিভু নিভু করে জ্বলতে থাকা আগুনে ঘি ঢালে। তবে মুহূর্তেই শঙ্কা আবার বাড়িয়ে দেন নাইম শেখ। আবারও সেই ফজল হক ফারুকির বিপক্ষে তার অসহায় আত্মসমর্পণ। এবারও ইনসাইড এডজ ও বলের গতিপথ স্ট্যাম্প। সেখান থেকে অধিনায়ক লিটনের সঙ্গী হিসেবে হাজির ফর্মের তুঙ্গে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত।

তবে শান্তও এদিন বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। সেই ফজল হক ফারুকির করা দ্রুতগতির বলের লাইন পড়তে ব্যর্থ হলেন। ফলশ্রুতিতে উপড়ে যায় শান্তর স্ট্যাম্প। বাংলাদেশ আরও একবার ব্যাটিং বিপর্যয়ের ঢালে। তবে সেখান থেকে দলকে পথ দেখালেন সাকিব-লিটন জুটি। দুইজনে মিলে গড়েন ৬১ রানের জুটি। মোহাম্মদ নবীর বলে সাকিব আউট হয়ে ফিরলে ভাঙে সে জুটি।

তবে একপ্রান্তে এদিন অটল অধিনায়ক লিটন। অধিনায়কের দায়িত্বটাই যেন এদিন পালন করতে চাইলেন লিটন দাস। তাতে পঞ্চাশ রান যুক্ত হয়ে যায় তার নামের পাশে। যেই লিটনের ফর্ম নিয়ে উঠেছিল নানা প্রশ্ন, জেগেছিল আশংকা। সেই লিটন দলের জয় নিশ্চিত করেই তবে মাঠ ছেড়েছেন।

এই দাপটাই তো দেখতে চায়। এই জয়ই প্রমাণ করে সিরিজ শুরুর আগে, দলের অন্দরমহল ছিল অস্থিতিশীল। যার প্রভাবেই সিরিজ হয়েছে হাতছাড়া । বয়ে গেছে সমালোচনার ঝড়। তবুও সিরিজটি একটি বার্তাই দিয়ে যায়। বাংলাদেশকে হতে হবে আরও গোছালো। হতে হবে আরও পরিপক্ক। মাঠের বাইরের বিষয়, ফেলে যেতে হবে মাঠের বাইরেই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...