সেমির টিকেটে আফগান মিথের আরেক জবাব

এইতো দিন দুয়েক আগে আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টি দলকে ধবলধোলাই করেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল; এবার ‘এ’ দলের এশিয়া কাপেও আফগানদের হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা পেয়েছে সৌম্য, নাইমরা।

আফগানিস্তানের নাম শুনলেই নাকি বাংলাদেশ ভয় পায়, লেগি আর রহস্য স্পিনারে ভরা দলটির সামনে নাকি অসহায় বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তবে সেসব মিথ উড়িয়ে দিয়েছে টিম টাইগার্স।

এইতো দিন দুয়েক আগে আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টি দলকে ধবলধোলাই করেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল; এবার ‘এ’ দলের এশিয়া কাপেও আফগানদের হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা পেয়েছে সৌম্য, নাইমরা।

বাঁচা-মরার ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ এ দলের অধিনায়ক সাইফ হাসান। তবে তাঁর সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণ করেন বাংলাদেশের টপ অর্ডার। ইন ফর্ম ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ফেরেন দ্রুতই; দুই চারের সাহায্যে নয় বলে নয় রান করেন তিনি। তিন নম্বরে নামা সাইফ হাসানও স্থায়ী হতে পারেননি, আউট হন মাত্র চার রানের মাথায়।

আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাইম শেখও বড় করতে পারেন নি ইনিংস। সালিম শাফির বলে রিয়াজ হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তাঁর ১৯ বলে ১৮ রানের ইনিংস। ৩৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশের হাল ধরেন জাকির হাসান এবং মাহমুদুল জয়। দুজনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে চালকের আসনে ফেরে বাংলাদেশ।

৭২ বলে ৬২ করে জাকির হাসান ফিরলে ভাঙে জয়-জাকিরের ১১৭ রানের জুটি। এরপর সৌম্য সরকারকে নিয়ে দলের স্কোর বাড়াতে থাকেন তরুণ ব্যাটার জয়।

কিন্তু, ৪৮ করে সাজঘরে ফিরতে হয় সৌম্যকে, এদিনও আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি আকবর আলী। অন্যপ্রান্তে মাহমুদুল হাসান জয় দারুণ এক সেঞ্চুরি করলেও পরের বলেই তাঁকে আউট করেন সালিম শাফি।

দ্রুত উইকেট হারালেও হাল ছাড়েননি অলরাউন্ডার শেখ মাহেদী; ডানহাতি এই অফ স্পিনার ছয়টি চার আর এক ছয়ের সাহায্যে মাত্র ১৯ বলে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। আর সঙ্গী রাকিবুল হাসান করেন ১২ বলে ১৫ রান; দুজনের সময়োপযোগী ব্যাটিংয়ে ভর করে ৩০৮ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ এ দল।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ধীরে সুস্থে শুরু করে দুই আফগান ওপেনার রিয়াজ হাসান এবং জুবায়েদ আকবারী। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে জুবায়েদকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন রাকিবুল হাসান; কিন্তু এরপর বোলারদের হতাশ করেন আফগানরা।

৯০ রানের জুটি গড়েন নুর আলী এবং রিয়াজ। নিজের পঞ্চম ওভারে আগের ম্যাচের নায়ক তানজিম সাকিব সেই জুটি ভাঙেন।

কয়েক ওভার পরেই হাফ সেঞ্চুরিয়ান রিয়াজ হাসান কাটা পড়েন পার্ট টাইমার সৌম্য সরকারের বলে। এর আগে অবশ্য ১০৫ বলে ৭৮ রান করে আফগানিস্তানকে ম্যাচে রেখেছিলেন তিনি। রিয়াজের বিদায়ের পর শহিদুল্লাহ কমল আর বাসির শাহের ব্যাটে ছড়ে আবারো স্বপ্ন দেখতে শুরু করে আফগানিস্তান।

তবে, এই জুটিতে ২০০ রানের পেরুনোর পরেই ভেঙে পড়ে দলটির ব্যাটিং লাইনআপ। একে একে ফিরে যান ইকরাম আলি খিল, শরাফুদ্দিন আশরাফরা।

শেষপর্যন্ত নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে ২৮৭ রানেই থেমে যায় আফগানিস্তান এ দলের ইনিংস। বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিন উইকেট পেয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব, এছাড়া দুইটি করে উইকেট গিয়েছে সৌম্য এবং রাকিবুলের ভাগেও। সবমিলিয়ে ব্যাটিং বোলিং দুই বিভাগেই আধিপত্য দেখিয়ে ২১ রানের জয় তুলে নিয়েছে।

জয়ের ব্যবধান দেখে ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে তেমনটা ভাবা ভুল হবে। ম্যাচের একেবারে শুরুটা বাদ দিলে বাকিসময় নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতেই ছিল; বিশেষ করা বোলাররা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নেয়ায় সেভাবে চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি রশিদ, মুজিবদের উত্তরসূরীরা। ইমার্জিং এশিয়া কাপের বাকি অংশেও নিজেদের এমন আধিপত্য ধরে রাখতে চাইবে সাইফ, নাইমরা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...