গত বছরের মার্চে করোনা মহামারীর কারণে বেশ ভালোরকম ভুগতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। পুরো এক মৌসুমের জন্য ফুটবল স্থগিত রাখতে হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে। প্রায় এক বছর মাঠে বল না গড়ানোর পর শেষমেশ গত বছরের ডিসেম্বরে বল মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাফুফে।
গত ডিসেম্বরে ফেডারেশন কাপের মাধ্যমে আবারও মাঠে গড়ায় ঘরোয়া ফুটবল। বসুন্ধরা কিংস অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় সেখানে। সেই থেকে চার মাস ভালোই চলছিল বাংলাদেশের ফুটবল। ফেডারেশন কাপের পর প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বও সমাপ্ত হয়েছিল ভালোভাবে। এরপরই তিন জাতি ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলতে নেপাল পাড়ি দেয় বাংলাদেশ জাতীয় দল। বাংলাদেশ দলের নেপাল যাত্রা ছিল টানা ঘরোয়া লিগের ম্যাচের মধ্যে হালকা দম ফেলবার জায়গা।
কিন্তু সেই ব্রেক আরো বাড়ছে। নেপালে বাংলাদেশ দলের বাজে পারফরম্যান্সের পর ধরা হয়েছিল ঘরোয়া লিগে দেশি খেলোয়াড়দের প্রাধান্য দিবেন কোচেরা। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগ শুরু হওয়ার আগেই শেষের বাঁশি বেজে গিয়েছে। লকডাউনের কারণে আগামীকাল থেকে শুরু হতে চলা ঘরোয়া মৌসুমের দ্বিতীয় পর্বে তাই টানা হচ্ছে সামান্য বিরতি। শুধু প্রিমিয়ার লিগ নয়, সেই সাথে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নসশিপ লিগ (বিসিএল), মহানগর ফুটবল লিগ (তৃতীয় বিভাগ) ও নারী ফুটবল লিগও স্থগিত ঘোষণা করেছে বাফুফে। গতকাল বিকেলে বাফুফে ভবনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাধারণ সম্পাদক জনাব আবু নাঈম সোহাগ।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের যে খেলা গুলা এখন মাঠে রয়েছে সেগুলার ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লক ডাউন যেদিন শেষ হবে তার পরবর্তী নূন্যতম ৭ দিন সময় দিয়ে পুনরায় লিগ গুলা শুরু হবে। আমরা ইতমধ্যে অংশগ্রহণকৃত দল গুলাকে লিখিত ভাবে অভহিত করেছি যে লকডাউন শেষের সাত দিন সময় নিয়ে আমরা আবারো লিগ শুরু করবো এবং সাময়িক ভাবে বাংলাদেশ গেমসের ফুটবল ছাড়া সকল ধরনের ফুটবল স্থগিত ঘোষণা করছি।’
শুধু তাই নয়, এই বিরতিতে চলছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়নসশিপের মধ্যবর্তীকালীন দলবদল, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ৭ এপ্রিল। লকডাউনের কারণে সেই দল বদলের তারিখ বাড়ানো নিয়ে ফিফার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে তারা। সে ফিডব্যাক পেলেই জানা যাবে সিদ্ধান্ত।
তবে লকডাউনে সবচেয়ে বড় বিপদের সম্মুখীন হয়েছে আবাহনী লিমিটেড। এ মৌসুমের এএফসি কাপের প্লে–অফে সুযোগ পেয়েছে তারা। যার ম্যাচ রয়েছে আগামী ১৪ এপ্রিল। যদিও সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ১২ তারিখেই লকডাউন শেষ হবে, তবুও আশঙ্কা তো থেকেই যায়। যে কারণে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় আবাহনী লিমিটেডের ম্যাচটি মাঠে গড়ানো নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও এ নিয়ে বাফুফে ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছে এএফসিকে।
প্লে–অফ পর্বের দুই ম্যাচ জিতে চতুর্থ দল হিসেবে এএফসি কাপে খেলার সুযোগ আবাহনীর সামনে। সেই দুই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ঢাকাতেই। আকাশি-নীলদের প্রতিপক্ষ নির্ধারিত হবে ৭ এপ্রিল, ভুটানের থিম্পু সিটি ও মালদ্বীপের ইগলসের মধ্যকার ম্যাচের বিজয়ী দলের মুখোমুখি হতো আবাহনী। কিন্তু এই লকডাউন চিন্তার বলিরেখা ফেলেছে তাদের কপালে।