কেউই এখন আর ঘাবড়ে যায় না!

সিলেটের মতো চট্টগ্রামের বৃষ্টি বাংলাদেশের জয়ের পথে কাল হয়ে দাঁড়ায়নি। তবে শুরুতে আইরিশদের ব্যাটিং তাণ্ডব বুকে কাঁপুনি ধরিয়েছিল বটে। কিন্তু শেষমেশ জয়টা পেয়েছে বাংলাদেশই। বৃষ্টি কিংবা আইরিশ ব্যাটাররা, কেউই বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।

লক্ষ্যের পথে ঠিকঠাক এগিয়েও ম্যাচ হেরে অবশ্য খানিকটা হতাশই হয়েছেন আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক পল স্টার্লিং। উইকেট তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, মন্তব্য করে ম্যাচশেষে এ আইরিশ অধিনায়ক বলেন, ‘খানিকটা হতাশ। উইকেট খুব ভাল ছিল। বল ভালভাবে ব্যাটে আসছিল। আমাদের আরো ভাল করা উচিৎ ছিল। আর বোলিংয়ের সময় আমি মনে করেছিলাম, ১০ ওভার পর আমরা ফিরে আসব। কিন্তু কোনো ইউনিটেই আমরা ক্লিক করতে পারিনি। তাই ম্যাচটা আমাদের হাত থেকে ফসকে গিয়েছে।’

৩৮ বলে ৬৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন রনি তালুকদার। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম ম্যাচসেরার পুরস্কারটাই মাঠে থেকে নিতে পারলেন না এ ব্যাটার। ফিল্ডিংয়ের সময় কাঁধে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।

এখন তাঁর এই ইনজুরি কতটা গুরুতর, তা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। তবে ইনজুরির কারণে রনি ছিটকে গেলে ক্ষতিটা হবে বাংলাদেশেরই। কারণ ৮ বছর পর জাতীয় দলে ফিরে, লিটনের সাথে তাঁর দারুণ বোঝাপড়ায় প্রায় প্রতি ম্যাচেই দুর্দান্ত শুরু পাচ্ছিল বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০৯ রানের রানপাহাড়ে তোলার পিছনেও এই জুটির সিংহভাগ ভূমিকা ছিল।

তবে রনি তালুকদারের হয়ে এ দিন ম্যাচসেরার পুরস্কার গ্রহণ করেন সাকিব। আর এ পর্যায়ে তিনি লিটন-রনি জুটিকে প্রশংসাতেই ভাসিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যেমন শুরু চেয়েছিলাম তার চেয়েও ভাল হয়েছে। লিটন আর রনি শুরু থেকেই ইতিবাচক ছিল। আর সেটিই ওদের রান তোলার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। কেউই ঘাবড়ে যায়নি। পরিস্থিতি সামলে সবাই দারুণ ক্রিকেট খেলেছে।’

বাংলাদেশের ২০৯ রানের পর ইনিংস বিরতিতে বৃষ্টি বাগড়া দিলে আয়ারল্যান্ডের সামনে নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৮ ওভারে ১০৪ রান। আর সেই লক্ষ্যে শুরু থেকেই চড়াও হয়েছিল আইরিশরা। তবে তাদের সেই আগ্রাসন থামিয়ে দেন হাসান মাহমুদ আর তাসকিন আহমেদ। শুরুতে বেক থ্রু এনে দেন হাসান। আর তাসকিন তাঁর প্রথম ওভারেই তুলে নেন ৩ উইকেট। তাসকিনের ঐ ওভারের পরেই আইরিশদের জয়যাত্রার পথ থেমে যায়।

পেসারদের এমন বোলিংয়ে দারুণ খুশি সাকিবও। তিনি বলেন, ‘ওরা ক্রিকেটটা খুব উপভোগ করছে। মাঠে ওদের এপ্রোচই খেলাটাকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। শুরুর ধাক্কার পর আমরা যেভাবে বল করেছি, তা এক কথায় দুর্দান্ত।’

একদিন বাদেই আগামী ২৯ মার্চে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আবারো আইরিশদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ জেতার পর সাকিবদের চোখ নিশ্চয়ই, এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জেতার দিকে। প্রথম ম্যাচের মতো এমন পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি ঘটলে অবশ্য পরের ম্যাচেই সিরিজ নিশ্চিত করতে বেগ পেতে হবে না বাংলাদেশকে।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link