হারলেই এশিয়া কাপের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লড়াই থেকে বাদ – এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ আবারো হতাশ করলো দর্শকদের। জয়-পরাজয় তো দূরে থাক নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে পারলেন না লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা; তবু জয়ের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল দল। কিন্তু শেষপর্যন্ত ফিরতে হয়েছে একরাশ হতাশা আর ২১ রানের পরাজয় নিয়ে।
টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কা তেমন কোন বিপর্যয় ছাড়াই পার করে প্রথম পাওয়ার প্লে। এরপর পাথুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে ভর করে এগুতে থাকা লঙ্কানরা। প্রথম দশ ওভারের মধ্যে পঞ্চাশ রান করার পর বাইশ ওভারে দলীয় শতরান হয়। তারপরেই শরিফুল ইসলাম জোড়া আঘাত হানেন এবং খানিক বাদে তাসকিন আহমেদও নাম তোলেন স্কোরবোর্ডে।
১৪৪ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ব্যাটারদের আসা যাওয়া অবশ্য থামেনি, নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। যদিও ক্রিজের একপাশ আগলে রাখেন সামারাবিক্রমা। সতীর্থরা বলার মত কিছু করতে না পারলেও এই ডানহাতি একাই টেনে নেন দলকে। শেষপর্যন্ত তাঁর ৯৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে ২৫৭ রানের চ্যালেঞ্জিং পুজি পায় দাসুন শানাকার দল।
২৫৮ রানের টার্গেটে সূচনাটা ভালোই হয়েছিল বাংলাদেশের। কোন উইকেট না হারিয়ে পাওয়ার প্লে শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাড়ায় ৪৭ রান। কিন্তু বিপর্যয়ের শুরুটা হয়েছিল তখনই, দুই ওপেনার মেহেদি মিরাজ এবং নাইম শেখ ফিরে যান দ্রুতই। ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি অভিজ্ঞ সাকিব, লিটনও। ফলে বাঁচা-মরার ম্যাচে বিশ ওভারের আগেই চার উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পৌঁছে যায় টিম টাইগার্স।
দল যখন এমন বিপদে, তখনি ত্রাতা হয়ে আসেন মুশফিকুর রহিম এবং তাওহীদ হৃদয়। দু’জনের ৭২ রানের জুটিতে জয়ের সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ। কিন্তু দিনের ইনফর্ম বোলার দাসুন শানাকা মুশফিকের উইকেট তুলে নিয়ে আবারো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। শামীম হোসেনকে নিয়ে হৃদয় পুনরায় জয়ের লড়াই শুরু করতে চাইলেও সঙ্গ দিতে পারেননি এই বামহাতি।
তবু হৃদয় একাই চেষ্টা করেছেন, লড়েছেন বুক চিতিয়ে। কিন্তু সাফল্যের দেখা পাননি। ব্যক্তিগত ৮২ রানের মাথায় থিকসানার বলে এলবিডব্লু শিকার হন তিনি, সেই সাথে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতারও ইতি ঘটে; যদি লোয়ার অর্ডারের ব্যাটে ম্যাচের সময় দীর্ঘায়িত হয়েছিল কিছুটা। শেষপর্যন্ত দশ উইকেট হারিয়ে ২৩৬ রান করে সাকিব আল হাসানের দল; এই হারে এবারের এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা শেষ টাইগারদের।