নেটে পাশাপাশি ব্যাটিং করছেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। একজন আরেকজনের ব্যাটিংটাও দেখে নিচ্ছিলেন। আগামীকাল নিজেদের প্রথম ম্যাচেও হয়তো একসাথে ব্যাট করতে হবে দুজনকে। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপটা সাজবে সাকিব-লিটনকে কেন্দ্র করেই।
মিডল অর্ডার সামলানোর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাতে হবে এই দুজনকে। খুব সম্ভবত লিটন দাসকে তিনে খেলানোর পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ দল। কেননা ওপেনিং পজিশনে সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত’র উপর ভরসা রাখতে চায় বাংলাদেশ। তবে ডান-বাম কম্বিনেশনের কথা ভাবলে লিটন দাসও ওপেন করতে পারেন।
তবে চারে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের খেলাটা মোটামুটি নিশ্চিতই। যদিও এই সবকিছুই পরিবর্তন হতে পারে ম্যাচ পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে। তবে সৌম্য, শান্ত , লিটন ও সাকিবকে নিয়েই গড়ে তোলা হবে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। এরপরের কাজটা সামলানোর জন্য আফিফ হোসেন, ইয়াসির আলী রাব্বি ও নুরুল হাসান সোহানরা থাকবে।
যদিও, লিটনের পজিশনটা কি হবে – সে ব্যাপারে কোনো খোলাসা করেননি সাকিব। বরং লিটন ওপেন করবেন কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্নই করেছেন এই অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘আপনার কি মনে হয় লিটন ওপেন করলেই বা ওপেনার ঠিক হয়ে গেলে আমরা জিতবো?’
ওদিকে পেস বোলিং আক্রমণের নেতৃত্বে থাকবেন তাসকিন আহমেদ। আজ নেটেও সৌম্য, শান্তদের লম্বা সময় বোলিং করেছেন এই পেসার। তাসকিনের বল খেলতে মোটামুটি সব ব্যাটারকেই ভুগতে হয়েছে।
সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরেছে বাংলাদেশ দল। ব্যাট-বল হাতে নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছে পুরো দলই। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ খেলবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এছাড়া মূল পর্বে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
মূল পর্বে এই দুই দলকে পাওয়ায় হয়তো একটু স্বস্তিই কাজ করবে বাংলাদেশ শিবিরে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে একটা জয়ের অপেক্ষাও হয়তো এবার মেটাতে পারবে বাংলাদেশ। গ্রুপে নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়ে পড়ায় সেই স্বপ্ন আরও বড় হয়েছে।
তবে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে আসা সাকিব আল হাসান অবশ্য এসব মানতে রাজি নন। কোন দলকে সহজ ভাবছে না বাংলাদেশ দল। সাকিবরা তাঁদের সেরা প্রস্তুতিটাই নিয়েছেন। এছাড়া এসব ভাবনা স্রেফ মিডিয়ার সৃষ্টি বলেও উড়িয়ে দিয়েছেন সাকিব।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেন, ‘তারা কিন্তু কোয়ালিফাই করে যোগ্য দল হিসেবেই এসেছে। এই ধারণা হয়তো আপনারাই তৈরি করেছেন যে নেদারল্যান্ডস আসায় বাংলাদেশ স্বস্তি বোধ করছে। আমরা এভাবে কখনো চিন্তা করি না। আমাদের দলের মধ্যে ওরকম কোনো ফিলিংস নেই। সেটা যদি শ্রীলঙ্কা আসত, সেটা যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসত —তাহলেও যে প্রস্তুতি নিতাম, অন্য যে দলের সঙ্গে খেলব একই রকম প্রস্তুতি থাকবে। আর যেটি বললেন স্বস্তি কি না – সেটা আসলে মিডিয়ার সৃষ্টি।’
সাকিব অবশ্য ভুল কিছু বলেননি। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের যে অবস্থা তাতে কোন দলকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। আর অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে নেদারল্যান্ডকে হারাতে হলে বাংলাদেশকে নিজেদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে।
তবে নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট বাংলাদেশের অধিনায়ক। এছাড়া এবার নতুন কিছু করে দেখানোরও সুযোগ দেখছেন সাকিব। অন্য যেকোন বারের চেয়ে এবার নাকি ভাল কিছু করার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের।
বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের আশার কথা জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমরা একটা বিশ্বকাপ খেলতে এসেছি, বাংলাদেশের হয়ে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। এমন একটা ফরম্যাট যেখানে আমরা কখনোই অত একটা ভাল করিনি। তবে আমি বিশ্বাস করি এই বিশ্বকাপে আমাদের এমন কিছু করার সামর্থ্য আছে যেটা আমরা এর আগে কোনো বিশ্বকাপে করিনি।’