রাসেল ডমিঙ্গো সবসময় হাসেন।
হাসির সময় তো হাসেনই। দু:খে ভাসার সময়ও তিনি কি করে যেনো হেসে ফেলেন। তার হাসি ছাড়া মুখ কল্পনা করা কঠিন। সেই মুখটাই আজ ম্লান হয়ে গিয়েছিলো।
প্রথম সেশনের প্রথম ঘন্টাতেই ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে তখন বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দু:সহ সময়ের পর টেস্টেও যদি এরকম সময় আসে, তাহলে ডমিঙ্গোর মুখও কালো হতে বাধ্য। তিনি নিশ্চয়ই তখন আরেকটা শত রানের নিচে অলআউটের শঙ্কায় ছিলেন।
কিন্তু জীবন আর ক্রিকেটের মজাটা এখানেই যে, সময় বদলায়। দিনের শুরুতে মুখ কালো করে থাকা সেই রাসেল ডমিঙ্গোরা এখন প্রথম ইনিংসে চার-পাচ শ রান করার পরিকল্পনা আটছেন।
না, lদক্ষিণ আফ্রিকান কোচ ডমিঙ্গো নিজে বলেননি। তার ব্যাটিং কোচ এসেছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। অ্যাশওয়েল প্রিন্স সেখানে এসে বলে গেলেন, চারশ, নাকি পাচশ; কোনটা ভালো স্কোর, সেটা তিনি ঠিক বুঝতে পারছেন না। তবে যেটা ভালো স্কোর হবে, সেটা করেই তারা ইনিংস ঘোষনা করতে চান।
প্রিন্সের শিষ্যরা ওই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে ঘুরে দাড়িয়েছেন, তাতে যারপরনাই মুগ্ধ এই দক্ষিণ আফ্রিকান। বলছিলেন, পাকিস্তানের বোলিং সামলে ওখান থেকে ঘুরে দাড়ানোটা সোজা কথা না, ‘ছেলেরা দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর যেভাবে নিজেদের ক্যারেক্টার দেখিয়েছে, তাতে আমি গর্বিত। কোচ হিসেবে আমাকে ক্রিকেটারদের টেকনিক্যাল দিক নিয়েই বেশি কাজ করতে হয়। কিন্তু আজ আমি ওদের মানসিক শক্তি দেখে মুগ্ধ। ৫০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলাটা কঠিন একটা সময় ছিলো। এরকম অবস্থায় পড়ে গেলে সেখানে আপনার ফিরে আসতে খুব মানসিক শক্তি দেখাবে হবে। আপনার নিজের ওপর, দলের ওপর ভরসা রাখতে হবে। সেটা ওরা করতে পেরেছে।’
আর এই করতে পারাটাই প্রিন্সের মনের জোর বাড়িয়ে দিচ্ছে। কত রান হওয়া উচিত, সে প্রশ্নের জবাবে বলছিলেন, ‘পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো। ৪০০ কী যথেষ্ঠ? নাকি ৫০০ যথেষ্ঠ। কেউ আসলে জানে না। আমাদের আসলে ব্যাটিং করতে থাকতে হবে। অধিনায়ক যতক্ষন না ইনিংস ঘোষনা করার মত যথেষ্ঠ রান হয়েছে বলে মনে না করেন।’
প্রিন্স মনে করেন, উইকেট তাদের অনেক এগিয়ে দিয়েছে। এখান থেকে ভালো একটা স্কোর না করার কোনো কারণ নেই। বিশেষ করে ইতিবাচক থাকতে বলছেন তিনি ব্যাটসম্যানদের।
এই ম্যাচে করণীয় সম্পর্কে প্রিন্স বলছিলেন, ‘আমি আশা করছি, আমরা ইতিবাচক দিকগুলো নিয়েই ভাবতো। আমরা নেতিবাচক কথা বলার প্রয়োজন বোধ করছি না। আমরা বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে খেলছি। শাহিন শাহ আফ্রিদি সাইফকে আউট করার আগে পর্যন্ত দুই ওপেনারকেই আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছিলো। এরপর সে বিশ্বসেরা ফাস্ট বোলারের মত একটা বাম্পার দিলো। আমার মনে হয়, বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানও এই ডেলিভারি খেলতে বিপদে পড়তো। এখন এখানে আপনাকে আউট করতে হলে ওরকম ভালো বলই লাগবে। ফলে আমরা যাতে দুর্বল শট না খেলি, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।’