একটা প্রচণ্ডরকম বাজে দিন পার করল বাংলাদেশ ক্রিকেট। বৈরী কন্ডিশনে নানান প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে একটা লজ্জাজনক হারই কেবল নিজেদের করতে পারল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। দক্ষিণ আফ্রিকার মত একটা কঠিন কন্ডিশনে দূর্দান্ত এক ওয়ানডে সিরিজ জয়ে আশায় বুক বেঁধেছিল যে সাদা পোশাকেও হয়ত হবে নতুন রুপকথা। তবে না তা আর হতে পারেনি। তাঁর জন্যে কঠিন কন্ডিশন যেমনটা দায়ী ঠিক তেমনি আম্পায়ারিংকেও দোষারোপ করছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট।
সে জন্যে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ জানানো হবে আইসিসিকে এমনটাও জানিয়েছেন ক্রিকেট অপারেশন কমিটি চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। এছাড়া ওয়ানডে সিরিজের পরও বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টে পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। ম্যাচ রেফারি বাংলাদেশ দলের সংশ্লিষ্ট কর্তা-ব্যক্তিদের সাথে অসদাচরণ করায় এমন অভিযোগ করেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট।
এ দফায় পুরো ডারবান টেস্ট জুড়ে দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড়দের মাত্রাতিরিক্ত স্লেজিং ও আম্পায়ারদের হঠকারিতা নিয়ে এবার আলাদা নালিশ জানাতে চলেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ওয়ানডে সিরিজ চলাকালীন সময়ে আম্পায়ারিং নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছি। ম্যাচ রেফারি আমাদের টিম ম্যানেজার নাফিস ইকবালের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। আমরা আবার একটি অভিযোগ জানাতে যাচ্ছি।’
টেস্ট ম্যাচ জুড়ে প্রোটিয়া ক্রিকেটারদের স্লেজিং নিয়ে বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ। এর থেকেও তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন আম্পায়ারদের নিরব সমর্থন নিয়ে। তিনি বলেন, ‘স্লেজিং খুবই সাধারণ বিষয়। তবে আম্পায়রা তা দেখেও দেখননি এমন একটা ভাব করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ম্যাচে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত আমাদের হাতে থাকে না, তবে আমি মনে করি আইসিসি এখন পারে আবার নিরপেক্ষ আম্পায়ার পন্থা আবার ফিরিয়ে আনতে।’
আম্পায়ারদের হঠকারি এবং খানিক পক্ষপাতদুষ্টতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে। খোদ সাকিব আল হাসানও এক টুইট বার্তায় নিরপেক্ষ আম্পায়ার দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। পুরো ডারবান টেস্ট জুড়েই আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত ছিল প্রশ্নবাণ জর্জরিত। বেশ কয়েকটি এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে রায় দেয় আম্পায়াররা। এমনকি এবাদত হোসেন ও ডিন এলগারের মধ্যে খানিক উষ্ণতার বিনিময়ে এবাদত হোসেনকে সতর্কও করেছেন আম্পায়ার।
তাছাড়া প্রথম দিনে টস জিতে বাংলাদেশ বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সাইটস্ক্রিন জটিলতায় আধা ঘন্টা দেরি করে খেলা শুরু হয়। প্রথম দিককার পিচ থেকে বাড়তি সুবিধাটুকুও নিতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। সে দিকটাও তুলে ধরেছেন জালাল ইউনুস। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ম্যাচে নিরপেক্ষ আম্পায়ারিং ছিল না। এটা শুরু হয়েছে টেস্টের প্রথম দিন থেকেই। আধা ঘন্টা দেরি করে ম্যাচ শুরু হয়, সাইটস্ক্রিনের সমস্যার কারণে। এর কারণে আমরা প্রথম দিকের সুবিধাটুকু নিতে পারেনি।’
তাছাড়া ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে স্বাগতিকদের উগ্র স্লেজিং নিয়েও বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন জালান ইউনুস, ‘তাঁরা মাহমুদুল হাসান জয়কে ঘিরে ধরে স্লেজিং করে। যেহেতু জয় একজন তরুণ ক্রিকেটার সেহেতু সে তেমন কিছু বলতে পারেনি। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পরিবর্তে বারংবার আম্পায়াররা আমাদের খেলোয়াড়দেরকেই সতর্ক করেছেন।’
সুতরাং এসব কিছু সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয় দল অভিযোগ করতে চলেছে আইসিসির কাছে। তাছাড়া নিরপেক্ষ আম্পায়ারিং বিষয়টাও উল্লেখ করবেন বলে জানিয়েছেন জালাল ইউনুস।