আয়ারল্যান্ড দল শেষ কবে বাংলাদেশে খেলতে এসেছিল, এমন এক প্রশ্ন ছুড়ে দিলে খানিকটা বিপাকে পড়তে পারেন যে কেউ। প্রায় দেড় দশক বাদে আরও একবার এই বাংলার মাটিতে পা রেখেছে আইরিশরা। মাঝে ক্রিকেট বদলে গেছে বেশ খানিকটা। আয়ারল্যান্ড সহযোগী দেশ থেকে টেস্ট খেলুড়ে দেশ হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে উন্নতির গ্রাফ ধরে উপরে ওঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও একটা পরিবর্তন ঘটেছে। সেই সফরে আয়ারল্যান্ড দলে থাকা ইয়ন মরগান বিশ্বকাপও জিতে ফেলেছেন। তবে তা ইংল্যান্ডের হয়ে। সেবারে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইট ওয়াশ হয়েছিল আয়ারল্যান্ড। দেড় দশকে অনেক কিছু পালটে যাওয়ার পাশাপাশি পালটে গেছে আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটও।
সাম্প্রতিক সময়ে আয়ারল্যান্ড দারুণ সময় কাটাচ্ছে। বাংলাদেশ অবশ্য সদ্যই ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। যদিও শেষ ওয়ানডেতে একটা জয় রয়েছে টাইগারদের। নিজেদেরকে ফিরে পাওয়ার একটা প্রচেষ্টা টাইগাররা নিশ্চয়ই করবে। সুতরাং লড়াইটা জম্পেশ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশ প্রবল।
বাংলাদেশ সফরে এসে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ফেলেছে আয়ারল্যান্ড দল। সেখানে দারুণ ফলাফল ধরা দিয়েছে আইরিশদের হাতে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা খেলোয়াড়দের বিপক্ষে বিশাল এক জয় তুলে নিয়েছে অ্যান্ডি বালবির্নির দল। ৭৭ রানের বিশাল জয়টা আইরিশদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
আগামীকাল দুপুর দুইটায় খেলা গড়াবে মাঠে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একটা সুনাম রয়েছে। এখন অবধি দেশের ক্রিকেটে প্রায় চাপহীন একটি ভেন্যু সিলেট। তাই বোধহয় পিচের কন্ডিশন বেশ ভাল। স্পোর্টিং উইকেটে বাংলাদেশের কঠিন পরীক্ষাই নিতে চলেছে আয়ারল্যান্ড। বালবির্নি, হ্যারি টেক্টর, কার্টিস ক্যাম্ফারদের মত খেলোয়াড়রা এই দেশের কন্ডিশনের সাথে বেশ পরিচিত।
এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে বালবির্নি ও ক্যাম্ফাররা খেলে গেছেন। তাদের কাছে খুব একটা অপরিচিত নয় বাংলাদেশের কন্ডিশন। তাঁরা বেশ আত্মবিশ্বাসী। দলের সতীর্থদের মাঝে সেসব বার্তা দিয়ে রাখার প্রচেষ্টাই করবেন তাঁরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ইতিবাচক ক্রিকেটটাই খেলতে চাইবে আয়ারল্যান্ড।
যদিও সদ্য খেলে আসা সিরিজে আয়ারল্যান্ডের পক্ষেও নেই ফলাফল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটা সমতায় থেকে শেষ হয়েছে। তৃতীয় ম্যাচে আসেনি কোন ফলাফল। র্যাংকিংয়ের ফারাকটাও খুব বিস্তর নেই। তবে অভিজ্ঞতা একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে দুই দলের মাঝে। সে কথা গত দিনই বলে গেছেন আইরিশ ব্যাটার হ্যারি টেক্টর। সাকিব আল হাসানের অভিজ্ঞতার কথা স্পষ্টত জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ আয়ারল্যান্ডের চিন্তার কারণ। এছাড়াও টাইগারদের পেস বোলিং ইউনিটও দারুণ সময় কাটাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পাওয়াটা ভীষণ কঠিন এক কাজই হবে আয়ারল্যান্ডের জন্যে। অন্ততপক্ষে দেড় দশক আগের স্মৃতির পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চাইবে না আইরিশরা।
তবে আগামীকাল মাঠের ক্রিকেটই সকল প্রশ্ন আর সমীকরণের জবাব দিয়ে দেবে। সিলেটের সমর্থকরা নিশ্চয়ই চাইবে বাংলাদেশের জয়ের পাল্লটাই থাকুক ভারী। ওয়ানডে সুপার লিগের সমীকরণ ছাপিয়ে জমজমাট একটা লড়াইয়ের অপেক্ষা করতে পারে দর্শকরা।