Social Media

Light
Dark

বাংলার মাটিতে ইংলিশরা বাংলাওয়াশ

টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ এই কথাটাই বোধহয় ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি কেউ। কিন্তু শুধু সিরিজ জয়ই নয়, টি-টোয়েন্টিতে ইংলিশদের হোয়াইট ওয়াশ করলো টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের বাদে এই প্রথম কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবল ধোলাই করলো বাংলাদেশ।

লিটন দাসের রানে ফেরার দিনে বাংলাদেশের দেয়া ১৫৯ রানে টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড মালানের হাফ সেঞ্চুরির পরেও তাসকিন, মুস্তাফিজদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত হয় ইংলিশদের।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা পায় বাংলাদেশ। সিরিজ জুড়ে অফফর্মে থাকা লিটন দাস আর রনি তালুকদারের ব্যাটে চড়ে পাওয়ার প্লেটা নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। ২০২২ সালে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটন যেন নতুন বছরের প্রথম সিরিজে নিজের ফর্মের সাথে লড়াই করছিলেন। ওয়ানডে সিরিজের পর প্রথম দুটি টি-টোয়েন্টিতেও হাসেনি লিটনের ব্যাট। তবে এই ম্যাচে শুরু থেকেই দারুণ টাচে লিটন।

৫৫ রানের পার্টনারশিপে লিটনকে দারুণ সঙ্গ দিতে থাকেন রনি তালুকদারও। তিন চারে ২২ বলে ২৪ রান করে আদিল রশিদের শিকার হন রনি তালুকদার। এরপর সিরিজে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা নাজমুল শান্তকে নিয়ে ইংলিশ বোলারদের ওপর চড়াও হন লিটন। শুরু থেকেই মারমুখী ছিলেন শান্ত।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রীতিমতো ঝড় বইয়ে দেন শান্ত আর লিটন। ৫৭ বলে ৮৪ রানের পার্টনারশিপে বাংলাদেশকে একটা সময় ২০০ রানের স্বপ্নও দেখাচ্ছিলেন এই দুই ব্যাটার। লিটন দাসের ক্যারিয়ারের নবম হাফ সেঞ্চুরি ইনিংসে ছিল ১০ চার আর এক ছক্কা। শেষ পর্যন্ত ক্রিস জর্ডানের বলে আউট হবার আগে লিটন করেন ৫৭ বলে ৭৩ রান।

১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ যখন ১ উইকেটে ১৩১ রান তখন ২০০ রানের স্বপ্ন বাড়াবাড়ি ছিল না মোটেও। তবে তখনই খেই হারায় বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের দারুণ ডেথ বোলিংয়ে শেষ পাঁচ ওভারে নয় উইকেট হাতে রেখেও বাংলাদেশ তুলতে পারে মোটে ২৭ রান। শেষ পাঁচ ওভারের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত দুই উইকেটে ১৫৭ রানে থামে বাংলাদেশ। দুই ছক্কা আর এক চারে ৩৬ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন নাজমুল শান্ত।

হোয়াইটওয়াশ ঠেকাতে ১৫৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। অভিষিক্ত তানভির ইসলামের করা ইনিংসের প্রথম ওভারে কোনো রান করার আগেই লিটন দাসের দারুণ স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন ফিল সল্ট। এরপর অধিনায়ক জস বাটলারকে নিয়ে ইংল্যান্ডকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মালান।

ক্যারিয়ারের ১৫ তম হাফ সেঞ্চুরি করে তখন চোখ রাঙাচ্ছেন মালান। ম্যাচ যখন বাংলাদেশের হাতের মুঠো থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে তখনই মুস্তাফিজের ১০০ তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি শিকার হয়ে আউট হন ডাভিড মালান। পরের বলেই মেহেদী হাসান মিরাজের ম্যাজিক। দুর্দান্ত এক ডিরেক্ট থ্রোতে রান আউট করেন বাটলারকে। ম্যাচ আবারো তখন বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে।

এরপর ১৭ তম ওভারে মঈন আলি ও বেন ডাকেটকে ফিরিয়ে ম্যাচ পুরোপুরি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন তাসকিন আহমেদ। ৪-০-২৬-২- বোলিং ফিগারটিও এ ম্যাচে তাসকিনের বোলিং নৈপুণ্যকে বোঝাতে পারবে না ঠিক করে। অপর প্রান্তে মুস্তাফিজুর রহমানও যেন ছিলেন তাঁর পুরনো ছন্দে। ইংলিশ ব্যাটাদের নাকানিচুবানি খাইয়ে চার ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে নেন মহাগুরুত্বপূর্ণ মালানের উইকেট।

তাসকিন, মোস্তাফিজদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় ইংলিশরা। শেষ পর্যন্ত ১৬ রানে হেরে প্রথমবার বাংলাদেশের কাছে ধবলধোলাই হল ইংল্যান্ড। প্রায় এক যুগ পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পেলো টাইগাররা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link