উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে- এই মুহূর্তে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার অবস্থা ঠিক এমনই। আগের প্রেসিডেন্ট জোসেপ বার্তামেউ’র অপরিণামদর্শীতার ফল এখনও ভোগ করছে কাতালানরা। প্রায় দেউলিয়ার পথে হাঁটা ক্লাবটি কোনো মতে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। আর এর মধ্যেই আবার পিছু নিয়েছে নতুন এক বিপদ।
রেফারির সাথে বার্সেলোনার উপর আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ অবশেষে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। শুক্রবার বার্সেলোনা আদালতে স্প্যানিশ এ ক্লাবের বিপক্ষে দুর্নীতি, বাণিজ্য চুক্তি জালিয়াতিসহ মিথ্যা নথিপত্রের অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
মূলত গত মাসে বার্সেলোনা বিপক্ষে একটি গুরুতর অভিযোগ আসে। অভিযোগটি ছিল এমন, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের সময়কালে রেফারিদের টেকনিক্যাল কমিটির সহসভাপতি হোসে মারিয়া এনরিকুয়েজ নেগ্রেইরাকে প্রায় ১.৩ মিলিয়ন ইউরো ঘুষ দিয়েছে বার্সা। এক মাস বাদে সেই অভিযোগেরই সত্যতা খুঁজে পেয়েছে বার্সেলোনা আদালত।
বার্সেলোনার পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস থেকে এ নিয়ে বলা হয়েছে, ‘বার্সা আর নেগ্রেইরার মধ্যে গোপনীয় কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। আর তাদের মধ্যে মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে আর্থিক লেনদেনও হয়েছে। এ জন্য সে সময়ের প্রেসিডেন্ট বার্তামেউ আর ডিরেক্টর সান্দ্রো রাসেলকেও পরবর্তী শুনানিতে উপস্থিত হতে হবে।’
আগেই জানা গিয়েছিল, এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে বড় ধরনের শাস্তির মুখে পড়তে পারে বার্সা। এমনকি লিগে তাদের অবনমনও ঘটতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত শাস্তির কথা জানা যায়নি। যদিও লা লিগার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের তেবাস বরাবরই এই ইস্যুতে কঠিন শাস্তির কথা জানিয়ে এসেছেন।
এ দিকে বার্সেলোনা আর নেগ্রেইরার উপর এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলেও তাদের দাবি, বার্সেলোনা কোনো ম্যাচে সুবিধা পাওয়ার জন্য নেগ্রেইরার সাথে চুক্তি করেনি। বরং বার্সার দাবি, টেকনিক্যাল কনসালটেন্সির জন্য তারা রেগ্রেইরার কোম্পানি ডিএএসএনআইএল ৯৫-এর সহযোগিতা নিয়েছিল।
আর এই দিন দুয়েক আগেও বার্সার বর্তমান প্রেসিডেন্ট হোয়ান লাপোর্তা রেফারিকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তিনি অবশ্য বরাবরই বলে এসেছেন, ‘টেকনিক্যাল কনসালটেন্সির জন্য প্রায় সব ক্লাবই রেফারির শরণাপন্ন হয়। এটা মোটেই নতুন কিছু নয়।’
তবে এতদিন উড়িয়ে দিলেও এখন আর ইস্যুটি মোটেই তুচ্ছ কোনো ব্যাপার নয়। জল গড়িয়েছে অনেক দূর। এমনিতে এই মুহূর্তে শত সমস্যায় জর্জরিত ক্লাবটি। সামনের মৌসুমে দলবদলের বাজারে কাতালানরা অংশ নিতে পারবে কিনা সেই নিয়ে রয়েছে প্রবল শঙ্কা।
এর উপর আবার রেফারির সাথে আর্থিক ইস্যু নিয়ে নতুন বিতর্ক। সব মিলিয়ে এখান থেকে উত্তরণের পথটা জটিল থেকে ক্রমশই জটিলতর হচ্ছে কাতালানদের জন্য।