গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদল এসেছে। এরপর দেশের মধ্যে সাময়িক এক রাজনৈতিক সংকটের তৈরি হয়েছে। জনমনে প্রশ্ন জেগেছে। ক্ষমতা বদলের সাথে সাথে বদলে যেতে পারে কি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)?
এমন প্রশ্নের উত্তর নেতিবাচক হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। বদল নিশ্চিতরূপেই আসতে পারে বিসিবি-তে। কিন্তু সেটা অবশ্যই হতে হবে আইসিসির আইন মেনে। কেননা যেকোন দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে থাকতে হয়, সে দেশের সরকারের হস্তক্ষেপমুক্ত। যদি সরকারের হস্তক্ষেপে সরাসরি বদল আনা হয় বোর্ডে, তবে তৎক্ষণাৎ আইসিসির কাছ থেকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে বাংলাদেশকে।
সকল ধরণের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার দুয়ার বন্ধ হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের। ঠিক এমন রাজনৈতিক কারণেই নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছিল শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে। তাতে করে আইসিসি থেকে বছর শেষ পাওয়া বিপুল পরিমাণ লভ্যাংশ থেকেও বঞ্চিত হতে পারে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় দুইভাবে ক্ষমতার রদবদল হতে পারে বিসিবিতে।
প্রথমত বর্তমান সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপনের নেতৃত্বে বোর্ড সভায় অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হতে পারে। তাতে করে বর্তমান বোর্ড ভেঙে দিয়ে, অস্থায়ী দুইজনকে নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। তবে যেহেতু পাপন সাবেক ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ছিলেন, সেহেতু এই মুহূর্তে তিনি বোর্ড সভায় উপস্থিত হবেন, সে সম্ভাবনা ক্ষীণ।
সে সমাধানও রয়েছে। বোর্ডের অন্য কাউকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্বাচন করে এই নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সভার আয়োজন করা যেতে পারে। তবে সবকিছুই হতে হবে বোর্ডের সকল কাউন্সিলরদের সম্মতিক্রমে। যেহেতু ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে বোর্ডের কাউন্সিলররা ভোট দিয়ে থাকেন।
তাছাড়া বোর্ডের কাউন্সিলদের সিংহভাগ যদি বর্তমান সভাপতির উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেন, তবে তারাও চাইলে জরুরি বোর্ড সভা আহ্বান করতে পারে। এরপর বোর্ড সভাপতি ও বর্তমান বোর্ড পরিচালকদের উপর অনাস্থা পোষণ করে অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচনের দাবি জানাতে পারে। তাতে করে দুইজন প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে, যারা কি-না নির্বাচন আয়োজনের সমস্ত প্রস্তুতি নেবেন।
কেবলমাত্র এই দুই উপায়ে বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনা সম্ভব। এর বাইরে যেকোন পদ্ধতিই আইসিসির নিয়মের বরখেলাপ হতে পারে। যার ফলাফল হিসেবে বাংলাদেশের ক্রিকেট চলে যেতে পারে নির্বাসনে। তবে চলমান সময়টা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এমন অবস্থায় হুট করেই কোন সিদ্ধান্ত হয়ত নিতে চাইবে না ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলররা।
পরিবর্তন আনার দাবি জানানো হয়েছে ইতোমধ্যেই। শোরগোল পড়েছে বিসিবি পাড়ায়। এখন দেখবার বিষয়, আইন মেনে পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের পথে হাঁটে কি-না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সময় হয়ত দিয়ে দেবে সকল উত্তর।