বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হলেই বাংলাদেশের বোলারদের যেতে হয় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে কিংবা সুদূর ইংল্যান্ডে। কারণ দেশে নেই কোন বায়োমেকানিকস ল্যাবরেটরি। তবে সেই দুর্দিনের অবসান ঘটাতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। প্রায় দশ কোটি টাকা খরচে দেশে এবার বায়োমেকানিকস ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি।
ক্রীড়া জগতে প্রযুক্তির ব্যবহার এখন বিস্তৃত। প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই বৈজ্ঞানিক সব সরঞ্জামের ব্যবহার বেড়েছে। তেমনই এক প্রযুক্তি বায়োমেকানিকস। যার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের প্রতিটা গতিবিধি বেশ সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। পা কিংবা হাতের ব্যবহারের পাশাপাশি, কোন পেশিতে কতটুকু চাপ পড়ছে, ইনজুরির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে কি-না- এমন সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা যায় বায়োমেকানিকস প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
এতে করে শুধু যে বোলিং অ্যাকশন শুধরে নেওয়া যায় তা নয়, ইনজুরি প্রবণতাও হ্রাস করা যায়। তাইতো পূর্বাচলে জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্থাপন করা হবে বায়োমেকানিকস ল্যাব। প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাবনায় সম্মতি জানিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান ফাহিম সিনহা অন্তত তেমনটিই জানিয়েছেন।
যদিও পূর্ণ কার্যক্ষমতার একটা বায়োমেকানিকস ল্যাব স্থাপনের জন্যে প্রায় ১৫-২০ কোটি টাকা প্রয়োজন। তবে এই মুহূর্তে স্বল্প পরিসরে বায়োমেকানিকস ল্যাবের যাত্রা শুরু হবে। ধীরে ধীরে নিত্য-নতুন প্রযুক্তির সংযুক্তি ঘটানো হবে বলেই জানিয়েছেন ফাহিম সিনহা। তবে একটা প্রতিবন্ধকতা অবশ্য রয়েছে। দক্ষ টেকনিশিয়ান নেই দেশে। যেহেতু এই প্রযুক্তির সাথে খুব একটা পরিচিত নন বাংলাদেশের কেউ।
তাইতো বিদেশ থেকে টেকনিশিয়ান নিযুক্ত করা হতে পারে। পাশাপাশি দেশীয় টেকনিশিয়ানদের প্রস্তুত করার কাজটিও চলবে সমান্তরালভাবে। এছাড়াও দেশীয় ফিটনেস ট্রেইনার ও ফিজিওদের দক্ষতা বাড়ানোর দিকেও নজর দেবে বিসিবি। কেননা খেলোয়াড়দের নিয়ে তো তাদেরই শেষ অবধি কাজ করতে হবে, সেক্ষেত্রে তাদের কাজ সহজ ও নিখুঁত করার জন্যে থাকবে বায়োমেকানিকস ল্যাব।
এতে করে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ইনজুরি প্রবণতা হ্রাস হবে। খেলোয়াড়দের টেকনিক্যাল দিকেরও উন্নতি সাধিত হবে। তাইতো বিসিবি উন্নত দেশের মতই বাংলাদেশেও বায়োমেকানিকস ল্যাব স্থাপনের তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। অক্টোবরে বিসিবি নির্বাচনের কারণে এখনই হয়ত বাস্তবায়িত হবে না এই প্রকল্প। তবে পরবর্তী নির্বাচিত বোর্ডের জন্যে একটা কর্মপরিকল্পনা রেখে যেতে চায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড কর্তারা।