সেঞ্চুরিহীন ‘রানমেশিন’

আবার কিছু ভুতুড়ে রেকর্ডের দেখাও মেলে। এবার তেমনই এক ভুতুড়ে রেকর্ডের কথা বলবো। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে লম্বা সময় ব্যাট করেছেন, কিন্তু কখনোই সেঞ্চুরির দেখা পাননি – এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা নেহায়েৎ কম নয়। এদের কয়েকজন রীতিমত প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান।

বাইশ গজে কত কিছুই ঘটে। কত রেকর্ড হয়। রেকর্ড মানেই তো একজন আরেকজনকে ছাপিয়ে যাওয়া। সর্বোচ্চ রান করার রেকর্ড, বেশি সেঞ্চুরি করার রেকর্ড – কত অবিশ্বাস্য রেকর্ডের সাক্ষী বাইশ গজ।

আবার কিছু ভুতুড়ে রেকর্ডের দেখাও মেলে। এবার তেমনই এক ভুতুড়ে রেকর্ডের কথা বলবো। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে লম্বা সময় ব্যাট করেছেন, কিন্তু কখনোই সেঞ্চুরির দেখা পাননি –  এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা নেহায়েৎ কম নয়। এদের কয়েকজন রীতিমত প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান।

  • শেন ওয়ার্ন (অস্ট্রেলিয়া) 

তাঁর কাজ ছিল মূলত বোলিং করা। সর্বকালের অন্যতম সেরা স্পিনার তিনি। অসংখ্য অর্জন তার ক্যারিয়ারে।দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেকবার ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছেন। ৩৩৯ ম্যাচে ৩০৬ ইনিংসে ব্যাট করেছেন। রান করেছেন ৪১৭২! ১৩ টা অর্ধশতকের দেখা পেলেও, কোনোদিন শতকের দেখা পান নাই তিনি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটা ৯৯ রানের ইনিংস আছে তাঁর। ঐটাই তাঁর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস।

  • চামু চিভাভা (জিম্বাবুয়ে) 

এই জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটারেরও ক্যারিয়ার শেষ হয় একটা সেঞ্চুরি করতে না পারার আফসোস নিয়ে। অনেক গুলা পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন ঠিকই, কিন্তু একটাও শতকে রুপ দিতে পারেননি। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন জিম্বাবুয়ে দলে। ১৪৮ ইনিংসে করেছেন ৩২০৯ রান! ২২টা পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস আছে তাঁর। সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে থাকতে আউট হয়েছিলেন একবার। সর্বোচ্চ ইনিংস ৯৯। শূন্য রানে ফিরেছেন ১২ বার!

  • মাশরাফি বিন মুর্তজা (বাংলাদেশ)

বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। তাঁর সময়ে বাংলাদেশ দল বলার মতো কিছু সাফল্য পেয়েছিল। মাশরাফিকে অলরাউন্ডার হিসেবে গোনা হলেও, তিনি মূলত অসাধারণ বোলিং দিয়ে পরিচিত পেয়েছিলেন। ব্যাটিংয়ে তেমন আলো ছড়াতে পারেননি তিনি। ম্যাচ খেলেছেন ৩১০টা। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ২৬৪ ইনিংসে ব্যাট করেছেন। রান করেছেন মাত্র ২৯৬১! ক্যারিয়ারে মাত্র ৪টা হাফ সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন! কোনোদিন আশির ঘরও পেরোতে পারেননি! সর্বোচ্চ রান করেছেন ৭৯! এর মধ্যে ৩৩ বারই শূন্য রানে ফিরেছেন!

  • সামিউল্লাহ শেনওয়ারি (আফগানিস্তান) 

আফগানিস্তান অলরাউন্ডারেরও কোনো শতক নেই ক্যারিয়ারে! ১৪৮ ম্যাচ খেলেছেন। ব্যাট করেছেন ১৩০ ইনিংসে। রান মাত্র ২৮২৪! পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন ১৩ টা।  শতক নেই! সর্বোচ্চ ৯৬ রানের একটা ইনিংস আছে তাঁর।

  • ম্যালকম মার্শাল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) 

 

তিনি ছিলেন মূলত বোলার। টুকটাক ব্যাটিংও পারতেন। ২১৭ ম্যাচে ১৯০ ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে ২৭৬৫ রান করেছেন। ১২ টা অর্ধশতক করেছেন। শতকের দেখা পান নাই জীবনে। সেঞ্চুরি থেকে আট রান দূরে থাকতে আউট হয়েছেন একবার। ঐ ৯২ রানই তাঁর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। ২০ বারই আউট হয়েছেন শূন্য রানে!

  • আফতাব আহমেদ (বাংলাদেশ)

তাঁর প্রতিভা নিয়ে সংশয় ছিল না। কিন্তু, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি! ছোট্ট ক্যারিয়ার মাত্র ১১২ ম্যাচ খেলেছিলেন। ১২৭ ইনিংসে ব্যাট হাতে রান করেছেন ২৭৬৪। কোনোদিন সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও; ১৬টা হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ৯২ রানের ইনিংসটাই তাঁর ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ইনিংস।

  • চামারা কাপুগেদারা (শ্রীলঙ্কা)

লঙ্কান মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ১৫৩ ম্যাচ খেলেছেন। ১৩৭ ইনিংসে করেছেন ২৭৪৫ রান।এই তালিকায় তাঁর স্থান সপ্তম। অর্ধশতক করেছেন ১৩ টা। সেঞ্চুরি তো করতে পারেন নাই।৯৬ রানই তাঁর ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।

  • কলিন্স ওবুয়া (কেনিয়া)

অলরাউন্ডার হিসেবে খেলতেন কেনিয়া জাতীয় দলে। প্রায় আঠারো বছর ক্রিকেট খেলেছেন। বেশি ম্যাচ তিনি খেলেছেন এটা বলা যাবে না। ১৩৯ ম্যাচে ১২২ ইনিংসে ২৭৩৫ রান করেছেন। অর্ধশতক ১৫ টা। ৯৮ রানে অপরাজিত ছিলেন একবার। এটাই তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস।

  • ব্রেট লি (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ান স্পিড স্টার। ব্যাটসম্যানদের জন্য ছিলেন এক আতঙ্কের নাম। ব্যাট হাতেও অনেক ব্যাটসম্যানের চেয়ে বেশি রান করেছেন তিনি। ২১২ ইনিংসে করেছেন ২৭২৮ রান। পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস ৮টা। সেরা ইনিংস ৬৪।

  • স্টুয়ার্ট মাৎসিকেনেরি (জিম্বাবুয়ে) 

এই জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটারও এই তালিকার সেরা দশে আছেন। ১৩৬ ইনিংসে তাঁর রান ২৬৫১। ১৫টা পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন। শতক বানাতে পারেন নাই একটাও। সেরা ইনিংসটা ৯০ রানের। ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ের জন্য তাঁকে ‘আফ্রিকার বীরেন্দ্র শেবাগ’ বলা হত।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...