ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তানের দা কুমড়ার সম্পর্ক সেই আদিকাল থেকেই চলছে। বিষয়টা তাদের পারস্পরিক রাজনীতি ও সীমান্ত সংঘাতের সাথে জড়িত। তবুও দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ চলমান ছিল আশি ও নব্বইয়ের দশকৈ। নিয়মিতই ভারত-পাকিস্তান সফর করতো দুই দেশ।
কিন্তু, ২০০৮ এর মুম্বাই হামলা ভেঙে দেয় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে থাকা সকল সম্পর্কের। পাক-ভারত সিরিজ তো বটেই পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের জন্য ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) দরজাও বন্ধ করে দেয় বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)।
২০১১ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি ভারত সফর করলে দুই দেশের সম্পর্কের বরফ কিছুটা গলে। যার ফলাফল, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পাকিস্তান দল ভারত সফরে যায়। ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয় এই বুঝি আবার শুরু হলো ইন্দো-পাক সিরিজ। কিন্তু বিধিবাম, এর পরের বছর সীমান্তে উভয় দেশের সংঘর্ষে আবারো বন্ধ হয়ে যায় ক্রিকেটের দরজা।
এরপর থেকে উভয় দল কেবল আইসিসি ইভেন্টেই মুখোমুখি হয়। মাঝখানে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা করলেও সরকারের অনুমতি না থাকায় তা আর আয়োজন সম্ভব হয়নি।
পাকিস্তানের মাটিতে ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে হামলার কারণে বন্ধ হওয়া ক্রিকেট বছর দুয়েক ধরে আবারো ফিরতে শুরু করলো। বিশ্ব একাদশ, জিম্বাবুয়ের মতো দল দিয়ে শুরু এই যাত্রায় এখন অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দলও পাকিস্তান সফর করছে।
এশিয়া কাপের আগামী আসরের আয়োজনের দায়িত্ব পড়েছে পাকিস্তানের উপর। সাথে সাথে ভক্ত-সমর্থকদের মনে মৃদু উৎকণ্ঠা আদৌ পাকিস্তান সফর করবে কি ভারত? তাদের জন্য আশার খবর, বিসিসিআই আগামী এশিয়া কাপে অংশ নেওয়ার জন্য ভারত সরকারের অনুমতি চাইবে বলে জানিয়েছেন। আগামী ১৮ অক্টোবর বিসিসিআই এর এজিএম এর মূল এজেন্ডা গুলো কি হবে তা নিয়ে রাজ্য ক্রিকেট প্রশাসনগুলোকে দেওয়া এক চিঠিতে পাকিস্তান সফরে যাওয়ার জন্য সরকারের অনুমতি চাওয়ার বিষয়টিও মূল এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ভারতীয় বিজেপি সরকারের অন্যতম প্রধান মুখ অমিত শাহের ছেলে জয় শাহ বর্তমানে বিসিসিআইয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাই, এর পূর্বে ভারত সরকার থেকে বেশ কয়েকবার অনুমতি নাকচ করে দিলেও জয় শাহের উপস্থিতিতে হয়তো ফল ভিন্ন হতে পারে এবার। আর ভিন্ন ফলটা কি সেটা আর বলে না দিলেও চলে!