পেসারদের বিপ্লব যেন এক মরীচিকা

কেননা উইকেট শিকারে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে নিউজিল্যান্ডের পেসাররা। প্রতিপক্ষের ৭৬.৯১ শতাংশ উইকেটই কিউই পেসারদের দখলে। তাইতো বাংলাদেশের পেসারদের নিজেদেরকে নিয়ে আরও বেশি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। বিপ্লব ঘটাতে যে এখনও অনেকটা পথ বাকি।

বেশ ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে, বাংলাদেশ ক্রিকেটে চলছে পেসারদের বিপ্লব। তাসকিন আহমেদদের স্বরূপে ফিরে আসা, শরিফুল ইসলামদের উত্থান- বিপ্লবের পক্ষে শোনাচ্ছিল গান। কিন্তু বাস্তবতা খানিক ভিন্ন। নব জাগরণের মাঝেও রয়েছে মরীচিকা। টেস্ট ক্রিকেটে তেমন একটা সফলতা পাচ্ছে না বাংলাদেশের পেসাররা।

এবাদত হোসেনরা বাংলাদেশকে এনে দিচ্ছেন ঐতিহাসিক টেস্ট জয়। ঘরের মাঠেও বাংলাদেশ এখন স্পিনারদের উপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করে না। বরং পেসাররা হাত বাড়িয়ে দেয়, সহয়তা করে প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করতে। যদিও বিশ্ব ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে ততটাও কার্যকর নয়।

২০২০ সাল থেকে এখন অবধি ২৫ খানা টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ দল। এই ২৫ টেস্টে সম্ভাব্য ৫০০ উইকেট নেওয়ার হাতছানি ছিল গোটা দলের সামনেই। কিন্তু বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট ৩৬৫ খানা উইকেট শিকার করতে পেরেছে এই প্রতিবেদন লেখার আগে অবধি।

আর সেখানে বাংলাদেশের পেসারদের উইকেট নেওয়ার হার ৩৮.৭৪ শতাংশ। মোট ১৪২টি উইকেট তুলে নিয়েছে টাইগার পেসাররা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশ প্রশংসনীয় বটে। কিন্তু যখনই একটু বড় চিত্রের দিকে যাবে চোখ, তখনই চক্ষু হবে চড়কগাছ।

টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশি পেসাররা রয়েছেন সবার নিচে। পেসারদের শতকরা উইকেট প্রাপ্তিতে জিম্বাবুয়েও বাংলাদেশের থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে। প্রতিপক্ষের ৬৫.৮১ শতাংশ উইকেট শিকার করতে পেরেছে জিম্বাবুয়ের পেসাররা। যদিও তাতে বাংলাদেশের পেসারদের অগ্রযাত্রাকে খাটো করার কোন মানে নেই।

পেসারদের স্বর্গভূমি খ্যাত পাকিস্তানের অবস্থান নিচ থেকে চার নম্বরে। যদিও সংখ্যার বিচারে পাকিস্তানি পেসারদের সাথে বাংলাদেশের পেসারদের ব্যবধানটা ব্যাপক। ৫৭.০৫ শতাংশ উইকেট নিজেদের করে নিয়েছে পাকিস্তানি পেসাররা। বাংলাদেশকে কেবল স্বস্তি দিচ্ছে শ্রীলঙ্কান পেসাররা।

বাংলাদেশের ঠিক উপরেই রয়েছে শ্রীলঙ্কা। লংকান পেসারদের টেস্ট ক্রিকেটে উইকেট প্রাপ্তির হার ৪২.৮৬ শতাংশ। ব্যবধানটা বিশাল নয়, সেটুকুই এখন বাংলাদেশের পেসারদের সম্বল। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে যদি ছোট্ট একটা পুকুর ধরা হয়, তবে সে পুকুরে বেশ দাপটের সাথেই বিরাজ করছে বাংলাদেশের পেসাররা। কিন্তু যখনই বিশ্ব ক্রিকেটের বিশাল সমুদ্রে উপনীত হচ্ছে তারা, তখনই পালটে যাচ্ছে দৃশ্যপট।

ঠিক সে কারণেই বাংলাদেশের পেসারদের আত্মতৃপ্তিতে ভোগার কোন কারণই নেই। কেননা উইকেট শিকারে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে নিউজিল্যান্ডের পেসাররা। প্রতিপক্ষের ৭৬.৯১ শতাংশ উইকেটই কিউই পেসারদের দখলে। তাই তো বাংলাদেশের পেসারদের নিজেদেরকে নিয়ে আরও বেশি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। বিপ্লব ঘটাতে যে এখনও অনেকটা পথ বাকি।

Share via
Copy link