আপনার গ্যারেজে যদি একটি টেসলা গাড়ি থাকে, তাহলে কোথাও যাওয়ার জন্য আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত সেই টেসলাটিই। আপনি যদি বুদ্ধিমান হন তবে টেসলার কর্মদক্ষতাই আপনাকে বাধ্য করবে এটিকে বেঁছে নিতে। পারফরমেন্সের দিক দিয়ে ভারতীয় ফাস্ট বোলার উমরান মালিক হলেন টেসলার মতো। কথাটা অবশ্য আমার না। কিংবদন্তি অজি গতিমানব ব্রেট লি-র। বিষয়টি হলো, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে উমরান মালিককে না রাখায় বেশ অবাক হয়েছেন ব্রেট লি।
কিংবদন্তি এই ক্রিকেটার বলেন, ‘আপনার কাছে যদি বিশ্বের সেরা গাড়ি থাকে এবং আপনি সেটিকে গ্যারেজে রেখে দিয়েছেন। তাহলে সেই গাড়িটি রেখে কী লাভ? টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য উমরান মালিককে ভারতীয় দলে নেওয়া উচিত ছিল।’
অবশ্য উমরান মালিক জাতীয় দলে বরাবরই বঞ্চিত। অথচ সেই তিনিই আইপিএলের আসরে আগুন ঝরিয়ে দেন রীতিমতো। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে নিয়মিত ১৫০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিতে বল করে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের নাস্তানাবুদ করে দেন এই গতিমানব। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে ওমরান মাত্র চৌদ্দটি ম্যাচে বাইশ উইকেট নিয়েছেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে তাঁর আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটলেও, মাত্র তিন ম্যাচ খেলার পর দল থেকে বাদ পড়েন তিনি।
বিশ্বকাপের স্কোয়াডে নিজের নাম খুঁজে পাননি উমরান। ব্রেট লি মনে করেন এই তরুণ পেসারকে বিশ্বকাপের এই বড় ইভেন্টের জন্য ভারতের স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত ছিল। এই বিষয়ে ব্রেট লি বলেন, ‘হ্যাঁ, সে তরুণ। সে নবাগত।কিন্তু সে ১৫০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিতে বল করতে পারে। তাই তাঁকে দলে যুক্ত করে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যান। ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করার মতো একজন বোলার এবং ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করার মধ্যে পার্থক্য আছে।’
প্রধান পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ ব্যাকস্ট্রেস ইনজুরির কারণে স্কোয়াড থেকে ছিটকে যাওয়ায় তাঁর বিকল্প নিয়ে সংকটে ভারতীয় দল। ভারতের ভাগ্যের চাকা একা হাতে ঘুরাতে পারা প্রধান পেসারের অনুপস্থিতিতে তাঁর যোগ্য রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে একবারও ম্যানেজমেন্ট উমরান মালিকের কথা চিন্তা করেনি। সে জায়গায় দীপক চাহার, মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজকে বিবেচনায় রাখা হয়েছিলো। অবশ্য সম্প্রতি দীপক চাহারও ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে পড়েছেন। তবুও কোন এক অজানা কারণে উমরানের মতো গতিদানবকে দলে সুযোগ দেয়ার চিন্তা করা হয়নি।
অথচ অস্ট্রেলিয়ার দ্রুতগতির পিচে উমরান মালিক দারুণ এক হাতিয়ার হতে পারতেন দলের জন্য। হয়তো সুযোগ পেলে এই পেসার বিশ্ব আসরে নিজেকে আইপিএলের মতো জাতীয় দলের জার্সিতেও নতুনভাবে চেনাতে পারতেন। কিংবা তিনিই হতে পারতেন ভারতীয় দলের নতুন তুরুপের তাস।