ভাল লাগার ওয়েলেলাগে

বাঁ-হাতি বোলারদের বিপক্ষে ভারতের টপ অর্ডারের দুর্বলতা ক্রিকেট দুনিয়ায় বেশ পরিচিত ডানহাতি ব্যাটারের আধিক্য থাকায় কখনো ট্রেন্ট বোল্ট, কখনো শাহীন শাহ আধিপত্য বিস্তার করেন তাঁদের উপর। এবার সেই কাজটা করলেন আরেক বামহাতি; তবে এবার বোলিংয়ে ছিলেন স্পিনার।

বাঁ-হাতি বোলারদের বিপক্ষে ভারতের টপ অর্ডারের দুর্বলতা ক্রিকেট দুনিয়ায় বেশ পরিচিত ডানহাতি ব্যাটারের আধিক্য থাকায় কখনো ট্রেন্ট বোল্ট, কখনো শাহীন শাহ আধিপত্য বিস্তার করেন তাঁদের উপর। এবার সেই কাজটা করলেন আরেক বামহাতি; তবে এবার বোলিংয়ে ছিলেন স্পিনার।

ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের থাকা সময়ের সেরা ব্যাটাররা যেই স্পিনারের কাছে পরাস্ত হলেন তিনি শ্রীলঙ্কার নবাগত তরুণ দুনিথ ওয়েলেলাগে। সর্বশেষ লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) চোখ রাখলে তাঁকে চেনার কথা।

সুপার ফোর রাউন্ডে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। আগে ব্যাট করতে নেমে কোন বাধা ছাড়াই পাওয়ার প্লে পার করেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং শুভমান গিল। এরপরই বাঁ-হাতি স্পিনার দুনিথ ওয়েলেলাগেকে আক্রমণে নিয়ে আসেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা, আর তাতেই বাজিমাত।

ব্যক্তিগত প্রথম ওভারের প্রথম বলেই শুভমান গিলকে বোল্ড করেন দুনিথ ওয়েলেলাগে। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করা এই বল ড্রিফট করে গিলের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে আঘাত করেছিল স্ট্যাম্পে, সহজ ভাষায় যেটা প্রায় আনপ্লেয়বল ডেলিভারি। পরের ওভারে আরো দারুণ বোলিং করেন তিনি, সাজঘরে পাঠান ইনফর্ম বিরাট কোহলিকে।

আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান কোহলিকে এদিন মাত্র তিন রান করে শানাকার তালুবন্দি হয়ে ফিরে যান তিন রানের মাথায়। সেই ওভারে কোন রানই দেননি ওয়েলেলাগে। নিজের তৃতীয় ওভারেও নিয়ন্ত্রিত বোলিং ধরে রাখেন এই স্পিনার, একইসাথে তুলে নেন অর্ধশতক হাঁকানো রোহিত শর্মাকে। শুরুর তিন ওভারে তিন উইকেট শিকার করে স্বাগতিকদের ম্যাচে ফেরান তিনি।

সবমিলিয়ে পাঁচ ওভারের স্পেলে মাত্র ১২ রান খরচ করেছেন দুনিথ ওয়েলেলাগে। এক মেডেন আদায় করে নিয়েছেন, আর বাউন্ডারি হজম করেছেন স্রেফ একটা। ৫-১-১২-৩ এই বোলিং ফিগারই বুঝিয়ে দেয় কতটা কার্যকর ছিল ওয়েলেলাগের বোলিং।

পরবর্তীতে ২৮তম ওভারে আবারো বল হাতে নেন দুনিথ ওয়েলেলাগে। আগেরবারের মত ততটা নিয়ন্ত্রিত বোলিং না করলেও উইকেট তোলার কাজটা ঠিকই করেছেন। লোকেশ রাহুলকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে রাহুল আর ঈশানের ৬৩ রানের জুটি ভাঙ্গেন তিনি।

নিজের শেষ ওভারে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, একেবারে শেষ বলে হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাট ছুঁয়ে যাওয়া একটা বল কুশল মেন্ডিসের গ্লাভসবন্দী হতেই জোরালে আবেদন করে লঙ্কানরা। আম্পায়ার প্রথমে আউট না দিলেও রিভিউতে সিদ্ধান্ত বদল করতে হয় তাঁকে, এরপরই উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো দল আর ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফারের স্বাদ পান ওয়েলেলাগে।

রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল কিংবা হার্দিক পান্ডিয়া – বর্তমান সময়ের সেরা ওয়ানডে ব্যাটারদের এক ঝাঁক তারকাকে একদিনেই আউট করার স্বাদ পেলেন দুনিথ ওয়েলেলাগে। সবমিলিয়ে তাঁর বোলিং ফিগার এমন ১০-১-৪০-৫। এমন দিন বোধহয় জীবনে একবারই আসে।

বড় মঞ্চে খেলা কিংবা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার পরিবর্তে মাঠে নামা – দুনিথ ওয়েলেলাগের মাথায় চাপের কমতি ছিল না। কিন্তু সেসব চাপকে উড়িয়ে দিয়েই নিজেকে প্রমাণ করলেন তিনি। শক্তিশালী ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ একাই গুঁড়িয়ে দিয়ে দেখালেন নিজের সামর্থ্য।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...