ইউরো ২০: সেরা একাদশ

টুর্নামেন্ট শেষ হলেও এখনো কাটেনি এর রেশ। এবারের ইউরোতে তারকারা যেমন দুর্দান্ত খেলেছেন, তেমনি আর্বিভাব হয়েছে অনেক নতুন তারকার। খেলা ৭১-এর বানানো ইউরোর সেরা একাদশটাও তাই যেন নতুন আর পুরনোর মেলবন্ধন।

ফুটবলময় এক মাস শেষে পর্দা নামলো ইউরোর এবারের আসর। ইংল্যান্ডকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ৫৩ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এবারের শিরোপা জিতেছে ইতালি।

টুর্নামেন্ট শেষ হলেও এখনো কাটেনি এর রেশ। এবারের ইউরোতে তারকারা যেমন দুর্দান্ত খেলেছেন, তেমনি আর্বিভাব হয়েছে অনেক নতুন তারকার। খেলা ৭১-এর বানানো ইউরোর সেরা একাদশটাও তাই যেন নতুন আর পুরনোর মেলবন্ধন।

  • জিয়ানলুইজি ডোন্নারুম্মা (ইতালি): গোলরক্ষক

গোলরক্ষক হিসেবে ইতালির জিয়ানলুইজি ডোন্নারুম্মাকে নিয়ে বোধহয় কোনো প্রশ্নের সুযোগ নেই। সব তারকাদের পেছনে ফেলে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন এই গোলরক্ষক। সেমিফাইনালে স্পেন এবং ফাইনালে ইংল্যান্ডের তিনটি করে পেনাল্টি ঠেকিয়ে ইতালির শিরোপা জয়ের মূল কুশিলব তিনিই। ইংল্যান্ডের জর্ডান পিকফোর্ড সবচেয়ে বেশি ক্লিনশিট রাখলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই ম্যাচের পারফরম্যান্স দিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন ডোন্নারুম্মা।

  • লিওনার্দো বনুচ্চি (ইতালি)

ইতালির এই বর্ষীয়ান ডিফেন্ডার পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই অসাধারণ খেলেছেন। কেবল গোল ঠেকানো নয়, গোল করতেও মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন এই ডিফেন্ডার। ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সমতাসূচক গোলটি তারই করা।

  • হ্যারি ম্যাগুয়ার (ইংল্যান্ড)

ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ইনজুরির কারণে ছিলেন না প্রথম দুই ম্যাচে। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামার পর থেকে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে রেখেছেন নিজের ছাপ। তার অসাধারণ পারফরম্যান্সের কারণে পুরো টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ড কেবল দুটি গোল হজম করেছে। এই পজিশনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জর্জিও কিয়েলিনি এবং তারই সতীর্থ জন স্টোনস। কিন্তু সবাইকে পেছনে ফেলে সেরা একাদশে বনুচ্চির সাথে জুটি বাঁধবেন ম্যাগুয়ারই।

  • লুক শ (ইংল্যান্ড)

টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের সবচেয়ে দুশ্চিন্তার জায়গা ছিল লেফটব্যাক পজিশন। ট্রিপয়ার, চিলওয়েলরা কোচের চাহিদা পূরণ করতে না পারলে সুযোগ পান লুক শ। তাতেই বাজিমাত, ডিফেন্সের পাশাপাশি আক্রমণেও রেখেছেন সমান ভূমিকা। তিন অ্যাসিস্টের পাশাপাশি ফাইনালে গোল করে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দিয়েছিলেন তিনিই।

  • জোয়াকিম ম্যাহলে (ডেনমার্ক)

এবারের টুর্নামেন্টে নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছেন জোয়াকিম ম্যাহলে। সাধারণত বাঁ প্রান্তে খেললেও দুই পায়েই সমান পারদর্শী হবার কারণে আমাদের একাদশে তিনি খেলবেন ডান প্রান্তে। টুর্নামেন্টের দুই গোলের পাশাপাশি তিন অ্যাসিস্ট আছে তার নামের পাশে।

  • জর্জিনহো (ইতালি)

চেলসির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পর ইতালির হয়ে ইউরোর শিরোপা জিতলেন জর্জিনহো। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ইতালির মাঝমাঠের প্রাণ ছিলেন তিনি। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৮৬ কি.মি. দৌড়েছেন এই মিডফিল্ডার। পাশাপাশি ফাইনাল থার্ডে সর্বোচ্চ সংখ্যক পাসও বাড়িয়েছেন এই মিডফিল্ডার।

  • পেদ্রি (স্পেন)

গত এক বছর যেন স্বপ্নের মতো কাটছে স্পেনের তরুণ তারকা পেদ্রির। দ্বিতীয় বিভাগের দল থেকে সরাসরি সুযোগ পেয়েছেন বার্সার মূল দলে। ১৭ বছর বয়সেই ডাক পেয়েছেন জাতোয় দলেও, এবার তো খেলে ফেললেন ইউরো। সেখানেও রেখেছেন নিজের ছাপ। স্পেন সেমিতে বাদ পড়লেও সবাইকে পেছনে ফেলে পেদ্রি জিতেছেন সেরা তরুণ ফুটবলারের খেতাব।

  • মিকেল ডামসগার্ড (ডেনমার্ক)

টুর্নামেন্টের শুরুতে তার মূল একাদশে থাকারই কথা ছিল না। কিন্তু প্রথম ম্যাচে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এরিকসেন ছিটকে গেলে সুযোগ পান এই তরুণ। সেই সু্যোগ কি দারুণভাবে না লুফে নিলেন তিনি, তিন গোলের পাশাপাশি করেছেন এক অ্যাসিস্ট। ফ্রি কিক থেকে টুর্নামেন্টের একমাত্র গোলটিও এসেছে তার পা থেকেই। ডেনমার্কের সেমিফাইনাল খেলার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল ডামসগার্ডের।

  • ফেডেরিকো চিয়েসা (ইতালি)

টুর্নামেন্টের নকআউট পর্বের ম্যাচগুলোতে অসাধারণ খেলেছেন ইতালি এবং জুভেন্টাস তারকা ফেডেরিকো চিয়েসা। দ্বিতীয় রাউন্ডে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে জয়সূচক গোল কিংবা সেমিফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে ইতালিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন তিনিই। ফাইনালে গোল না পেলেও যতক্ষণ মাঠে ছিলেন পায়ের জাদুতে মোহাবিষ্ট করে রেখেছিলেন সবাইকে।

  • রাহিম স্টার্লিং (ইংল্যান্ড)

ইংল্যান্ডের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল রাহিম স্টার্লিংয়ের। তিন গোল করার পাশাপাশি সতীর্থকে দিয়ে করিয়েছেন একটি। এছাড়াও সেমিতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পেনাল্টি আদায় করে দলকে জয়ের পথে একধাপ এগিয়ে দিয়েছিলেন এই উইংগার।

  • প্যাট্রিক শিক (চেক প্রজাতন্ত্র)

২০০৪ ইউরোর পর চেক প্রজাতন্ত্র আবারো স্বপ্ন দেখছিলো প্যাট্রিক শিক নামের এক তরুণের পায়ে ভর করে। পাঁচ গোল করে দলকে একাই টেনেছেন তিনি। এই পজিশনে তার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন গোল্ডেন বুটজয়ী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

কিন্তু তার পাঁচ গোলের তিনটিই পেনাল্টিতে করা এবং তারকাবহুল দল নিয়েও তিনি বাদ পড়ে যান দ্বিতীয় রাউন্ডেই। অন্যদিকে খর্বশক্তির চেক প্রজাতন্ত্রকে একাই কোয়ার্টারে ফাইনালে তুলেন প্যাট্রিক শিক। আমাদের একাদশে তাই স্ট্রাইকার হিসেবে থাকবেন তিনিই।

এছাড়াও বেঞ্চে থাকবেন জর্জিও কিয়েলিনি, মার্কো ভেরাত্তি, লুসিয়ানো স্পিনাৎজোলা, এমিল ফর্সবার্গ, পল পগবা, লরেঞ্জো ইনসিগনে, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোরা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...