বিশ্বসেরা ‘যুব’ একাদশ

খেলাধুলা ব্যাপারটাই আসলে তারুণ্য নির্ভর। ক্রিকেটেও এর ব্যাতিক্রম নয়। স্বয়ং শচীন টেন্ডুলকার কিংবা পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনুস – খুব অল্প বয়সে ক্রিকেটে বিরাট ঝড় তুলেছেন – এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা বিশ্বের ইতিহাসে নেহায়েৎ কম নয়।

ইদানিং এই চল আরো বেড়েছে। খুব অল্প বয়সেই অনেক তরুণ প্রতিভার অভিষেক হয়ে যাচ্ছে। উপমহাদেশেই এই বিষয়টা বেশি দেখা যায়। এদের মধ্যে কেউ কেউ দিব্যি পারফর্মও করছেন। সেই পারফর্ম করাদের নিয়ে একাদশ বানালে কেমন হয়? চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক, একাদশে যারা জায়গা পেয়েছেন তাঁরা সবাই অনূর্ধ্ব-২২।

  • শুভমান গিল (ভারত – ২১ বছর)

ডান হাতি এই ব্যাটসম্যান ভারতের হয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে – দুই ফরম্যাটেই খেলছেন। বিশেষ করে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশনে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। এখনও লম্বা পথ তাঁকে পাড়ি দিতে হবে। তবে, একটু চোখ রাখাই যায়।

  • মোহাম্মদ নাঈম শেখ (বাংলাদেশ – ২১ বছর)

বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি – দু’টি ফরম্যাটে অভিষেক হয়েছে নাঈম শেখের। এর মধ্যে ওয়ানডেতে এখনও মানিয়ে নিতে পারেননি ডান হাতি এই ব্যাটসম্যান। তবে, টি-টোয়েন্টিতে প্রশংসিত হয়েছেন। ব্যাট করেছেন ৩৫-এর মত গড় নিয়ে।

  • পৃথ্বী শ (ভারত – ২১ বছর): অধিনায়ক

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক পৃথ্বীর জাতীয় দলের শুরুটা ছিল স্বপ্নের মত। তবে, ডোপ টেস্ট ও অফ ফর্মের কারণে তিনি যাওয়া-আশার মধ্যেই আছেন। তবে, ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রান করা পৃথ্বীর জন্য জাতীয় দলের দরজা লম্বা সময় বন্ধ থাকে না।

  • ইব্রাহিম জাদরান (আফগানিস্তান – ১৯ বছর)

২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে অভিষেক। এখন অবধি আটটি টেস্ট খেলেছেন মাত্র। তবে, ব্যাটিং গড় প্রায় ৪৫। নি:সন্দেহে আফগানিস্তানের বড় সম্পদ হওয়ার সকল যোগ্যতাই তাঁর মধ্যে আছে।

  • ইকরাম আলী খিল (আফগানিস্তান – ২০ বছর): উইকেটরক্ষক

বাঁ-হাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান এখন অবধি ১২ টি ওয়ানডেতে দু’টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। টেস্ট খেলেছেন একটি। তাঁকে ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলছে আফগানিস্তান।

  • ওয়াশিংটন সুন্দর (ভারত – ২১ বছর)

তিনি মূলত অফ স্পিনার। তবে, যত দিন যাচ্ছে পুরোদস্তর একজন অলরাউন্ডার হয়ে উঠছেন ওয়াশিংটন সুন্দর। চার টেস্টের ছয় ইনিংসেই তিনটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। এছাড়া ৩১ টি টি-টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ২৫ উইকেট।

  • রাচিন রবিন্দ্র (নিউজিল্যান্ড – ২১ বছর)

ভারতীয় বংশদ্ভুত নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটার। ভারতের বিপক্ষে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার জন্য তিনি ডাক পেয়েছেন। মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। টপ অর্ডারে ব্যাট করার সাথে সাথে বাঁ-হাতি স্পিন বোলিং করেন।

  • নাসিম শাহ (পাকিস্তান – ১৮ বছর)

তিনি পাকিস্তানের নতুন বিস্ময়। নয় টেস্টের ১৩ ইনিংসের ক্যারিয়ারে এই ফাস্ট বোলার ২০ উইকেট নিয়েছেন। এর মধ্যে একটা হ্যাটট্রিকও আছে। পাকিস্তানের চোখে তিনি পেস বোলিংয়ের ‘নেক্সট বিগ থিঙ’।

  • শাহীন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান – ২১ বছর)

খুব তরুণ বয়সেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নেমে যাওয়া শাহীন পাকিস্তানের হয়ে একটা বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন। ২৭ টেস্টে ৫৮ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া ২৫ ওয়ানডেতে ৫১ টি ও ২৫ টি টি-টোয়েন্টিতে ২৭ টি উইকেট আছে তাঁর ঝুলিতে।

  • মুজিব উর রহমান (আফগানিস্তান – ২০ বছর): সহ-অধিনায়ক

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আফগানদের যে কয়জন সেনানী নিয়মিত পারফর্ম করছেন তাঁদের একজন হলেন মুজিব উর রহমান। ৪৩ টি ওয়ানডেতে ৭০ টি উইকেটই তাঁর সামর্থ্যের পক্ষে রায় দেয়। এই একাদশে তিনি সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের একজন।

  • নাঈম হাসান (বাংলাদেশ – ২১ বছর)

বাংলাদেশের নাঈম হাসানও কম অভিজ্ঞ নয়। ২০১৮ সালে অভিষেক টেস্টেই তিনি পাঁচ উইকেট নেন। সাত টেস্টের ক্যারিয়ারের ১২ ইনিংসে তিনি নিয়েছেন ২৫ উইকেট। প্রয়োজনে শেষের দিকে রান করার সক্ষমতাও আছে তাঁর।

  • দ্বাদশ ব্যাক্তি: শরিফুল ইসলাম (বাংলাদেশ – ২০ বছর)

বাংলাদেশের নতুন পেস সেনসেশন। জিতেছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা। ফাইনালেও রাখেন বড় অবদান। জাতীয় দলের হয়ে তিন ফরম্যাটেই অভিষেক হয়েছে তাঁর। বড় কোনো তাণ্ডব এখনও সিনিয়র দলে করতে না পারলেও নিজের প্রতি যত্ন আর সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে বড় সম্পদ হয়ে উঠতে পারেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link