লাল বলের ক্রিকেটে ভারতের সেরা অধিনায়ক কে? পরিসংখ্যানের দিকে চোখ বোলালে উত্তরটা হবে বিরাট কোহলি। তবে ক্রিকেট তো শুধু পরিসংখ্যানের খেলা নয়। সৌরভ গাঙ্গুলির অধিনায়কত্বে বিদেশের মাটিতে জেতা শুরু করে ভারত।
কিন্তু, টেস্ট সহ বাকি দুই ফরম্যাটেও ভারতের ক্রিকেটকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। মাঠের ক্রিকেটের সাফল্যই শুধু নয়, কোহলি, রোহিত,বুমরাহ, হার্দিক পান্ডিয়া, পূজারা,অশ্বিনদের মত তারকাদের অভিষেক হয়েছে ধোনির অধীনে।
টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে কোহলির মত পরিসংখ্যান ওতটা সমৃদ্ধ না হলেও ধোনির অধীনে লাল বলে বেশ কিছু স্মরণীয় জয় পেয়েছে ভারত। ২০০৯ সালে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে টেস্ট জয় কিংবা ২০১১ সালে দক্ষিন আফ্রিকা সফরে পরপর দুটি টেস্ট জয় তখনকার প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো ভারতের জন্য।
তবে, ধোনির অধীনে সবচেয়ে স্মরণীয় জয় ছিল ২০১৪ সালে লর্ডস টেস্ট জয়। ২০১১ সালে ইংল্যান্ড সফরে ৪-০ তে ধবলধোলাই হয়েছিলো ধোনির ভারত। পরের সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ইংল্যান্ডকে ৯৫ রানে হারায় ভারত।
তিন বছর আগে যেখানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো, তিন বছর পর সেখানেই সিরিজে ভারতের লিড নেয়াটা ছিলো কিছুটা অপ্রত্যাশিত। ভারতের সেই জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন ইশান্ত শর্মা। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ইনিংসে ৭৪ রানে ৭ উইকেট পান ইশান্ত।
নতুন আর পুরোনো দুইরকম বলেই ইংলিশ ব্যাটারদের নাস্তানাবুদ করে ছাড়েন এই ডানহাতি পেসার। টেস্টে ভারতের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা স্পেল বলে ধরা হয় এই স্পেলকে। ইশান্তের সেই স্পেলেই প্রায় তিন বছর পর বিদেশের মাটিতে টেস্ট জেতে ভারত।
ইশান্তের সেই স্পেল নিয়ে আলোচনা কম হয়নি। এখনো ভারতের ক্রিকেট পাড়ায় আলোচনা হয় গতি আর বাউন্সারে ইংলিশদের কাবু করা সেই স্পেল নিয়ে। নয় বছর পর ইশান্ত জানালেন সেই স্পেলের পেছনের গল্প৷ ক্রিকেট ভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের একটি অনুষ্ঠানে ইশান্ত এই নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমার অনেকগুলো প্রিয় স্পেল আছে। লর্ডসে আমি যে স্পেলটি করেছিলাম সেটি অন্যতম। যখন আমরা ড্রেসিংরুমের দিকে যাচ্ছিলাম মাহি ভাই (ধোনি) আমাকে বলছিলো সবকিছু নরমাল রাখতে। তিনি আমাকে বলেছিলো, যদি কোনো কিছু কাজ না করে তাহলে আমরা আবার বাউন্সার করা শুরু করব।আমি বলেছিলাম, ঠিক আছে।’
ইশান্ত বলেন, ‘তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি ক্লান্ত হয়ে যাবে না তো? আমি তাকে বলেছিলাম, আপনি যতক্ষন চান ততক্ষন আমি বোলিং করব। যতক্ষন না ম্যাচ শেষ হচ্ছে আমি বোলিং করে যাব। মাহি ভাইও তখন আমার কথায় অনুপ্রাণিত হয়।’
সেই ম্যাচে ইশান্তের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ।ইশান্তের বোলিংয়ে আট বলের ব্যবধানে আউট হন মঈন আলি, জো রুট ও বেন স্টোকস। সেই স্পেল করার আগে অধিনায়ক ধোনি ও কোচ ডানকান ফ্লেচারের সাথে তাঁর কথোপকথন অনেক কাজে দিয়েছিলো বলে জানান ঈশান্ত।
ইশান্ত বলেন, ‘যখন আমরা ড্রেসিং রুমে ছিলাম তখন আমার,মাহি ভাই ও ডানকানের মধ্যে কথা হচ্ছিলো। তারা দুইজন আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো, “তুমি আবার বোলিং করবে?” আমি তখন বলেছিলাম, আমি ম্যাচের শেষ পর্যন্ত বোলিং করব। তারা আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু আমি বলেছিলাম, আমি যদি ক্লান্ত হয়ে যাই তাহলে আমাকে স্ট্রেচারে করে মাঠ থেকে বের করে নিয়ে এসো। ম্যাচ শেষ হবার আগ পর্যন্ত আমি ফিরে আসব না। এরপর আমি বোলিং করে গেলাম। যদিও ম্যাচ শেষে আমি ইঞ্জুরিতে পড়ি সেটা একটা ভিন্ন ঘটনা।’