রিয়াদ ফিরেছেন, ফিরবেন কি বিশ্বকাপে?

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করছেন। পাওয়ারফুল সব শট খেলছেন। এটাই তো ছিল এক সময়কার নিয়মিত চিত্র।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করছেন। পাওয়ারফুল সব শট খেলছেন। এটাই তো ছিল এক সময়কার নিয়মিত চিত্র। তবে সে চিত্রের মাঝে পড়েছিল ভাটা। পবিত্র হজ্জ পালনের বিরতি সহ নানা কারণে খানিকটা আড়ালেই ছিলেন রিয়াদ। তবে ভাটার সময় ফুরিয়েছে। রিয়াদ ফিরেছেন মিরপুর হোম অব ক্রিকেট।

এখনও এক গোলক ধাঁধা বাংলাদেশের সাত নম্বর ব্যাটিং পজিশন। রীতিমত এক মিউজিক্যাল চেয়ারে পরিণত হয়েছে সেই পজিশনের লড়াই। কখনো আফিফ হোসেন, কখনো সৌম্য সরকার, মাঝে মধ্যে মোসাদ্দেক হোসেন, আবার শেখ মেহেদী। টি-টোয়েন্টিতে দারুণ পারফর্ম করা শামিম হোসেন পাটোয়ারির নামও এসেছে সামনে।

তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে বারংবার একটি নামই সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে। সেটি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বয়স হয়েছে, ফিটনেস নেই। এই কারণ দেখিয়ে জাতীয় দল থেকে তাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। তাও আবার লম্বা সময়ের জন্য।

মাঝে বেশ জলঘোলা হলেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে দলে দেখা যায়নি। তবে রিয়াদ আবারও ফিরেছেন মিরপুরে। খানিকটা আভাস হয়ত মিলেছে তাকে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়ার। উপায়ও তো খুব বেশি নেই। সাত নম্বর পজিশনটা যে বাংলাদেশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

লোয়ার মিডল অর্ডারে একজন কার্যকর ব্যাটার যেমন প্রয়োজন দলের। তেমনি একজন পরিপক্ক ছয় নম্বর বোলারও প্রয়োজন টাইগারদের বিশ্বকাপ দলে। সে দিকটা বিবেচনা করে সৌম্য সরকার ও শেখ মেহেদিদের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে ইমার্জিং এশিয়া কাপে। যাতে করে অন্তত তারা প্রস্তুত কি-না যাচাই করা যায়। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্য নেই তেমন কোন মঞ্চ।

তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করবার সবচেয়ে বড় প্রভাবক আইসিসি আয়োজিত বৈশ্বিক কোন টুর্নামেন্টে তার পারফরমেন্স। বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথম সেঞ্চুরিটা এসেছিল রিয়াদের হাত ধরেই। তাছাড়া এখন অবধি যতগুলো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে তিনি অংশ নিয়েছেন, সব খানেই পারফর্ম করেছেন। সেদিক বিবেচনায় হয়ত তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করবার শেষ সুযোগ দেওয়া হতে পারে।

এছাড়াও অভিজ্ঞতা অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বাংলাদেশের কঠিনতম পরিস্থিতিতে দলকে সামলেছেন। দলকে একটা ভাল লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বিশ্বকাপের চাপ সামলে লোয়ার মিডল অর্ডারে পারফর্ম করাটা নিশ্চয়ই সহজ হবে না।

তাইতো রিয়াদের প্রস্তুত থাকা চাই। সে কারণেই পবিত্র হজ্জ পালনের ছুটি শেষে প্রথমবারের মত শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হাজির রিয়াদ। প্রথমে গা গরম করেছেন। দৌড়ে বেড়িয়েছেন মিরপুর একাডেমি মাঠে। এরপর চলে গেছেন জিমনেশিয়ামে। সেখানে খানিকক্ষণ সময় ব্যয় করে ব্যাট হাতে হাজির একাডেমি মাঠের নেটে।

সেখানে দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন তিনি। মূলত নকিং করেছেন। একটা লম্বা বিরতির পর আবারও ফিরেছেন তিনি ক্রিকেটের দুনিয়াতে। সুতরাং ব্যাট আর বলের সংযোগ ঘটিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার প্রচেষ্টাই করে গেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

নকিং শেষে তিনি নেটে স্পিন বল খেলেছেন। বড় বড় সব শট খেলার প্রবণতাও দেখিয়েছেন তিনি। সাবলীল মাটি কামড়ানো শট যেমন খেলেছেন, তেমনি হাওয়ায় ভাসিয়ে পাওয়ারফুল শট অনুশীলনও করেছেন ‘সাইলেন্ট কিলার’।

এশিয়া কাপকে সামনে রেখে ২৯ জুলাই থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ক্যাম্প। প্রায় ২৭-২৮ জন খেলোয়াড় থাকবেন সেই ক্যাম্পে। নি:সন্দেহে রিয়াদকে রাখা হচ্ছে সেই ক্যাম্পে। রিয়াদের প্রতিযোগিতা করতে হবে নিয়মিত খেলায় থাকা খেলোয়াড়দের বিপক্ষে। হুট করে নিজেকে এক ঝাঁক নিয়মিত খেলোয়াড়দের মাঝে ঠেলে দিয়ে বিপদে পড়তে পারেন।

ঠিক সে কারণেই আগেভাগে নিজের মত করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন রিয়াদ। ফিটনেসকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। সাথে ব্যাটিংটাও ঝালিয়ে নিচ্ছেন। এখন দেখবার পালা শেষ অবধি জাতীয় দলের জার্সি আবারও গায়ে তার চড়ে কিনা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...