সতেরো তম ওভারে ঝড়টা শুরু হল। এরপর রুবেল হোসেন, লুকে উডরা সেই ঝড়ে স্রেফ উড়ে গেলেন। রুবেলের ওভারে পথটা দেখিয়ে দিয়েছিলেন মঈন আলী। এরপরই হাত খুললেন জনসন চার্লসও। রুবেল, উডদের বাউন্ডারি সীমানার ওপারে আঁচরে ফেলেছেন বারবার। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সও টানা দুটি বিপিএল শিরোপা জয়ের স্বাদ পেল তাঁর ব্যাটে চড়েই।
প্রথম ৩৯ বল থেকে করেছিলেন মাত্র ৩৯ রান। তখন পর্যন্ত লিটনের ইনিংসের যা একটু ম্যাচে ছিল কুমিল্লা। শেষ চার ওভারে জিততে হলে করতে হবে ৫২ রান। প্রতি ওভারে প্রয়োজন ১৩ রান করে। বাইশ গজে আছেন মঈন আলী ও জনসন চার্লস। সেই সময় কুমিল্লার স্বপ্নটা জেগে আছে মঈন আলীকে কেন্দ্র করেই।
কুমিল্লাকে শিরোপার পথটা দেখিয়ে দিলেন মঈন আলীই। সতেরোতম ওভারের প্রথম বলেই রুবলকে ছয় মারলেন। পথটা খুঁজে পেলেন চার্লসও। এরপর ক্যারিবীয়ান এই ব্যাটার স্রেফ একটা ঝড় তুললেন। রুবেলের সেই ওভারেই এলো ২৩ রান। আরো দুটি ছয় মেরেছিলেন চার্লস।
প্রথম ৩৯ বলে ৩৯ রান করা চার্লস নিজের ইনিংস শেষ করছেন ৭৯ রানে। দলের শিরোপা নিশ্চিত করেই। তবে পরের ৪০ রান করতে এই ব্যাটার খেলেছেন মাত্র ১৩ বল। এই সময়ে চারটা ছয়ই মেরেছেন চার্লস। রুবেলের পর লুকে উডের উপর দিয়েও ঝড় চালিয়েছেন এই ব্যাটার। তাঁকেও মেরেছেন টানা দুই ছয়।
আর তাতেই নিশ্চিত হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের আরেকটি শিরোপা। আর তাঁকে অনবদ্য সঙ্গ দিয়েছেন মঈন আলীও এই ব্যাটার ১৭ বল থেকে করেছেন ২৫ রান। আর দুজনে মিলে ৪০ বলে গড়েছেন ৭২ রানের জুটি। দলকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন এই দুজন।
শেষ ওভারে মাশরাফি বিন মর্তুজার বলে সিঙ্গেল নিয়ে নিজেদের শিরোপা নিশ্চিত করে কুমিল্লা। সেই সিঙ্গেল নিয়ে ৭৯ রান করা চার্লস খেলেছেন ৫২ বল। ব্যাটিং করেছেন ১৫১.৯২ স্ট্রাইকরেটে। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৭ টি চার ও ৫ টি ছয়। আর এই ১২ টি বাউন্ডারির ৭ টার চার্লস মেরেছেন নিজের শেষ ১২ বলে।
স্লগ ওভারে চার্লস এমন আগ্রাসী হয়ে ওঠাতেই আরেকটা শিরোপা জয়ের স্বাদ পেল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অধিনায়ক হিসেবে এই নিয়ে তিনটি শিরোপা জিতলেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ওদিকে মাশরাফি ফাইনাল না হারার রেকর্ডটাও ভেঙে গেল আজ।
ওদিকে জনসন চার্লসের আগে আজ দলের জয়ের ভীতটা গড়ে দিয়েছিলেন তাঁদের ওপেনার লিটন কুমার দাস। ওপেন করতে নেমে লিটন খেলেছিলেন ৫৫ রানের ইনিংস। তিনিও ব্যাট চালিয়েচেন ১৪০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে। তাঁর ইনিংসেই উড়ন্ত শুরু পেয়েছিল কুমিল্লা। ফলে ১৭৬ রানের টার্গেটটা কখনোই খুব বড় হয়ে ওঠেনি কুমিল্লার জন্য।
আর শেষে তো জনসন চার্লস সিলেটের বোলিং আক্রমণকে স্রেফ তুলোধুনো করলেন। তাঁর ৭৯ রানের ইনিংসে চার বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আর তাতেই নিশ্চিত হল এই নিয়ে কুমিল্লার চতুর্থ বিপিএল শিরোপা।