২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। পাকিস্তানের সেই দলটাকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সরফরাজ আহমেদ। যদিও বছর দুয়েক না পেরোতেই দলে নিজের জায়গাই হারিয়ে ফেলেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপাজয়ী এ অধিনায়ক।
তবে এর আগেও একবার দল থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছিলেন সরফরাজ। আর সেই শঙ্কা এড়াতে সাবেক এ অধিনায়ক নাকি তাঁর নির্ধারিত হজ্ব যাত্রাও বাতিল করেছিলেন! সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের সাবেক প্রধান নির্বাচক হারুন রশিদের ভাষ্যে সেই কথাই উঠে এসেছে।
সময়টা তখন ২০১৫। সে সময়ে পাকিস্তানের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক ছিলেন আজহার আলী। তো আজহার আলী, আসাদ শফিক আর সরফরাজ আহমেদ, এই তিনজন মিলে সেবার হজ্বে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেন। কিন্তু বাগড়া দিল জিম্বাবুয়ে সিরিজ। অবশ্য এ তিন ক্রিকেটারই ছুটি চাইলেন। বোর্ডও কোনো আপত্তি ছাড়াই ছুটি মঞ্জুর করে।
তবে ছুটি মঞ্জুর করার ঘন্টা দুয়েকের মাঝেই তখনকার প্রধান নির্বাচক হারুন রশিদের কাছে একটি ফোনকল আসে। ফোনটি এসেছিল সরফরাজ আহমেদের কাছ থেকে। অবাক করা ব্যাপার হলো, হজ্বের জন্য সব বন্দোবস্ত করে ফেলার পরও সরফরাজ তখন প্রধান নির্বাচককে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দলে তাঁকে রাখার অনুরোধ করেন।
নির্বাচক হারুন রশিদের তখন বিস্ময়ে ভেসে যাওয়ার জোগাড়। সরফরাজকে জিজ্ঞেসও করে বসলেন, হজ্বে যাওয়ার ভাবনা থাকার পরও সেখান থেকে সরে আসার কারণ কী? সরফরাজ ঠিক তখনই দলে নিজের জায়গা হারানোর শঙ্কার কথা স্বীকার করেন।
হারুন রশিদের ভাষ্যে, ‘ওরা তিনজনই হজ্বে যাওয়ার জন্য সিরিজ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিল। আমরাও ছুটি দিয়েছিলাম। কিন্তু তার ঘন্টা দুয়েকের পরই আমার কাছে সরফরাজের একটি ফোন কল আসে। সে বলে, আমি খেলতে চাই। আমি তো অবাক হয়ে পড়ি তখন। কারণ জিজ্ঞেস করতে গেলে বুঝলাম, ও দলে নিজের জায়গা হারানোর ভয় করছে। ও আমাকে এটাও বলেছিল যে, অনেকেই তাঁকে দলে চায় না। সুযোগ পেলেই বাদ দিয়ে দিতে পারে। সেদিন ওর ফোনকলে সত্যিই মনে হয়েছিল যে, সরফরাজ দলে নিজের জায়গা হারানো নিয়ে বেশ শঙ্কিত।’
অবশ্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে সিরিজে শেষ পর্যন্ত সরফরাজ আহমেদসহ তিনজনই খেলেছিলেন। তবে সরফরাজের ব্যাকআপ হিসেবে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে দলভুক্ত করা হয়েছিল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২-১ এ সে সিরিজ জিতলেও ঐ সিরিজের পর দল থেকে সরফরাজের বাদ পড়ার শঙ্কা আরো জেঁকে বসে। কারণ ঐ সিরিজে সরফরাজ যেখানে ২৬.৫০ গড়ে ব্যাটিং করেছিলেন, সেখানে ৮৩ গড়ে ব্যাটিং করেছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
অবশ্য সরফরাজের সেই বাদ পড়ার ভয় পরবর্তীতে ঠিকই কেটে যায়। বরং আজহার আলীর পর ২০১৭ সালে তাঁকেই পাকিস্তানের অধিনায়ক করা হয়। আর তাঁর নেতৃত্বেই ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জেতে পাকিস্তান।