২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বেতন ভাতা বৃদ্ধিসহ ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন দেশের শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটাররা। সেই ১১ দফার ভিতর একটা দাবি ছিলো ক্রিকেটারদের সংগঠন ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) বর্তমান কমিটির পদত্যাগ ও নতুন কমিটি গঠন করা।
কিন্তু, সেই সময় পদত্যাগ করেননি কোয়াবের সভাপতি নাইমুর রহমান দূর্জয় ও সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল। এরপর বর্তমান কমিটি নির্বাচন দিতে চাইলেও করোনার কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। কারণ কোয়াবের নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার ও বিসিবির নিবন্ধিত ক্রিকেটাররা। আর করোনা প্রোকোপের ভিতর সবাইকে এক জায়গাতে করা সম্ভব ছিলো না।
এক বছর পর আবারো নির্বাচন দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কোয়াবের বর্তমান কমিটি। নির্বাচন দেওয়ার বিষয়টি খেলা ৭১-কে নিশ্চিত করে কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল জানিয়েছেন আগামী মে মাসে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ শুরু হলে লিগের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন দিবেন তাঁরা। কারণ প্রিমিয়ার চলাকালীন সব ক্রিকেটাররা তখন ঢাকায় অবস্থান করবেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি যে প্রিমিয়ার লিগ যখন শুরু হবে তখন সবাই ঢাকায় থাকবে। প্রিমিয়াম লিগের মাঝামাঝি সময়ে ভালো একটা দিন দেখে নির্বাচন দিয়ে দেবো। আমাদের প্রেসিডেন্ট সিদ্বান্ত নিয়েছেন এরকমই। কোয়াবের প্রেসিডেন্টসের চিন্তা ভাবনা এরকম। আমরা করোনার ভিতর নির্বাচন দিতে পারি নাই। কারণ সারা দেশের ক্রিকেটারদের এক করা সম্ভব ছিলো না। এক করার একটাই প্ল্যাটফর্ম ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ।’
১৯৯৯ সালে ক্রিকেটারদের সুখে-দু:খে পাশে থাকার জন্য গঠন করা হয়েছিলো কোয়াব। কোয়াবের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ২০১৬ সালে। কিন্তু ২০০৮ সাল থেকে তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্বে রয়েছে বর্তমান কমিটি।
দীর্ঘ দিন পর অবশেষে নতুন নেতৃত্ব পেতে চাচ্ছে কোয়াব। নতুনদের সুযোগ করে দিতেই জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
জায়গা ছেড়ে দিতে ক্রিকেটারদের সেই আন্দোলন কোন প্রভাব ফেলেছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন ঐ আন্দোলনের পর সিনিয়র ক্রিকেটারদের মতামত জানতে চেয়েছিলেন তাঁরা; তবে সাত দিন সময় নিয়েও আর যোগাযোগ করেননি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ক্রিকেটাররা।
দেবব্রত পাল বলেন, ‘সেই আন্দোলন শেষ হওয়ার সাত দিনের ভিতর বর্তমান দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়ে বসেছিলাম। বসার পরে বলছি তাঁদের কি প্রস্তাবনা আছে নতুন কমিটি দেওয়ার জন্য। আমরা তাদের মতামত ও অভিপ্রায় জানতে চেয়েছি। তাঁরা গঠনতন্ত্র সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলো তাঁদেরকে গঠনতন্ত্র সম্পর্কে সম্পূর্ন অবগত করা হয়েছিলো। তাঁরা সাত দিন সময় নিয়েছিলো। কিন্তু তাঁরা আর কোন মতামত জানায়নি।’
নতুনদের জন্য দরজা সব সময় খোলা জানিয়ে দেবব্রত পাল আরো বলেন, ‘আমরা চাই নতুনরা চলে আসুক। নতুনদের জন্য আমাদের দরজা সব সময় খোলা। সাবেক বর্তমান সবাইকে নিয়েই সংগঠন। যারা আসতে চায় দায়িত্বশীল, অভিজ্ঞতা সম্পূর্ন দায়িত্বশীল সবার জন্যই আমাদের দরজা খোলা।’
বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়েই গঠন করা হয়েছে কোয়াব। কিন্তু বর্তমান কমিটির উপর বিভিন্ন কারণেই আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন ক্রিকেটাররা। যার বহি:প্রকাশ ঘটেছিলো ক্রিকেটারদের আন্দোলনের মাধ্যমে। তবে দেবব্রত পাল জানিয়েছেন লক্ষ্য অর্জনে শতভাগ কাজ করেছেন তাঁরা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মকান্ডের যে লক্ষ্য ছিলো তা আমরা শতভাগ পূরণ করেছি। আমরা যে অবস্থানে ছিলাম সেখান থেকে শতভাগের উপরে কাজ করেছি। আর যদি মনে করেন সার্বিক অর্থে ক্রিকেটারদের লক্ষ্য কতটুকু পূরণ করতে পেরেছি তাহলে বলবো আমরা ৮০ ভাগ পূরণ করতে পেরেছি।’