বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সব দল লড়াই করে রানার আপ হওয়ার জন্য, এমন একটা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছিল দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। কেননা বিপিএল মানেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ফাইনালে, আর কুমিল্লা কখনো ফাইনাল হারে না – যদিও এই ধারায় ছেদ টেনেছে ফরচুন বরিশাল। প্রথমবারের মত ভিক্টোরিয়ান্সদের ফাইনালে হারিয়েছে তাঁরা।
কিন্তু এই একটা পরাজয়েই কি সবকিছু বদলে যাবে? নাফিসা কামালের ফ্রাঞ্চাইজি কি ঘুমিয়ে যাবে নাকি ভুলে যাবে সফলতার পথ? মোটেই না, এসব কিছু হওয়ার কোন সুযোগই নেই। অন্তত এই ফ্রাঞ্চাইজিকে যারা ঠিকঠাকভাবে চেনেন তাঁরা সবাই আত্মবিশ্বাস নিয়েই বলতে পারবেন এরা ঘুরে দাঁড়াবেই।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সাফল্য কিন্তু কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভাগ্যের জোরে বা কোন ক্রিকেটারের অতিমানবীয় পারফরম্যান্সে তাঁরা সফলতার দিকে যায়নি। বরং দক্ষ টিম ম্যানেজম্যান্ট আর সুদৃঢ় পরিকল্পনার জোরেই এতদূর আসতে পেরেছে দলটি। তাই আগামী দিনগুলোতেও সাফল্য ধরা দিবে তাঁদের হাতে, সেটি প্রায় নিশ্চিত।
পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা যে ভুল করে না তা নয়। এই ফাইনালেও দলটির গেমপ্ল্যান নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। কিন্তু তাঁদের সবচেয়ে বড় গুণ নিজেদের ভুল মেনে নিতে পারা, ভুল শুধরে নিতে পারা – পরের আসরে তাই আরো বিধ্বংসী রূপে ফিরবে তাঁরা; পঞ্চম শিরোপার মিশন-কে পূর্ণতা দিতে আরো বেশি প্রস্তুতি নিয়েই আসবে।
বিপিএলের সবচেয়ে পেশাদার ফ্রাঞ্চাইজি বলা হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। তাঁরাই প্রথম পঞ্চপাণ্ডবদের বাদ দিয়ে দল সাজানোর সাহস দেখিয়েছেন, তারুণ্য নির্ভর স্কোয়াড গড়েছে। লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমানরা এখন তাঁদের ঘরের মানুষের মতই; অন্য কোন ফ্রাঞ্চাইজিই এভাবে ক্রিকেটারদের আপন করে নিতে পারেনি।
উইন অর উইন – কুমিল্লার স্লোগান কিংবা মোটো যাই বলুন। শুধু কাগজে-কলমে নয়, ড্রেসিংরুমের প্রতিটা সদস্যের হৃদয়েও একই কথা লেখা রয়েছে। জয় বিনা তাঁরা কিছুই চায় না, জয়ের জন্য মরিয়া তাঁরা। পরবর্তী আসরে আরো নিখুঁত পরিকল্পনা নিয়ে, আরো শক্তিশালী দল নিয়ে আগমন ঘটবে তাঁদের; এই বিশ্বাস নিয়েই আপাতত দিন গুণতে শুরু করেছে ভক্ত-সমর্থকেরা।