রংপুর রাইডার্স, এটাই বাস্তব! হাহাহা!

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের বাজারি বাস্তবতায় তারকাদের উড়িয়ে এনে সরাসরি খেলিয়ে দেওয়ার প্রবণতা নতুন কিছু নয়। কিন্তু ক্রিকেট তো বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড না, যে নাম বড় দেখালেই কাজ হয়ে যাবে!

এক্সেপশন কখনও এক্স্যাম্পল হয় না। এলাম, দেখলাম আর জয় করলাম – বিষয়টা আসলে এক্সেপশনাল। কিন্তু, বাস্তবতা হল, হঠাৎ করে অজানা কন্ডিশনে এসে বড় বড় তারকাদেরও পায়ের নিচের মাটি কাঁপবেই। আর সেই ঘটনাই ঘটল রংপুর রাইডার্সের ক্ষেত্রে। সকালে ঢাকায় নেমে দুপুরেই মাঠে নেমে যাওয়া তারকারা একে একে ফ্লপ হলেন।

ফ্র্যাঞ্চাইজি হোক বা আন্তর্জাতিক হোক – ক্রিকেটের বাস্তবতা ওই একই রকমই। এখানে টিম বন্ডিং, কন্ডিশনে অ্যাডজাস্টমেন্ট, দলীয় মানসিকতা, টুর্নামেন্টের চাহিদা, প্রতিপক্ষের বোলিংয়ের খুটিনাটি সব বোঝার দরকার হয়। যত বড় তারকাই হন না কেন, পেশাদার ক্রিকেটকে আপনি সহজ ভাবে নিয়েছেন তো ফেঁসেছেন।

সকালে ঢাকায় নামা, দুপুরে মাঠে নেমে যাওয়া—ক্রিকেটে এমনটা সচরাচর দেখা যায় না। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের বাজারি বাস্তবতায় তারকাদের উড়িয়ে এনে সরাসরি খেলিয়ে দেওয়ার প্রবণতা নতুন কিছু নয়। কিন্তু ক্রিকেট তো বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড না, যে নাম বড় দেখালেই কাজ হয়ে যাবে! মাঠে নামতে হলে দরকার প্রস্তুতি, দরকার কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়ার সময়। আর সেটা না পেলে? ব্যাটিং লাইনে ধস নামতে সময় লাগে না।

কোয়ালিফায়ারে রংপুর উঠেছিল শেষ চার ম্যাচ হারার পরও। শুরুর টানা আট জয়ের পর অনেকটা ছন্নছাড়াই ছিল গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ জয়ী দলটির। শেষ চারের লড়াইয়ের জন্য তাঁরা উড়িয়ে এনেছিল এক ঝাঁক তারকা। সেখানে টি-টোয়েন্টির দানব টিম ডেভিড, আন্দ্রে রাসেলের সাথে জেমস ভিন্সও ছিলেন।

এলিমিনেটরের প্রথম ম্যাচে পাওয়ার প্লে-তে রংপুর তুলল ১৯ রান। উইকেট হারাল পাঁচটি। এর মধ্যে ইংলিশ ওপেনার জেমস ভিন্স সাত বলে এক রান করে ফিরলেন। সাথে বোনাস হিসেবে সৌম্য সরকারকে দাওয়াত দিয়ে রান আউট করলেন। এসে খেলতে নামলেই হয় না, সঙ্গীর সাথে বোঝাপড়াও দরকার!

অস্ট্রেলিয়ার টিম ডেভিড নয় বল খেলে করলেন সাত রান। ক্যারিবিয়ান দানব নয় বলে চার রান করে ফিরে গেলেন। তাঁদের মাঠে নামাতে গিয়ে ডাগ আউটে বসিয়ে রাখা হয়েছে ইফতিখার আহমেদকে। অথচ, পুরো মৌসুম তিনি দলকে সার্ভিস দিয়েছেন, রান করেছেন।  কিন্তু, রংপুরের তো টাকার খেলা দেখাতে হবে। দেখাতে হবে – কত টাকা খরচ করে তাঁরা কত বড় তারকা আনতে পারে! তাতে লাভ হোক বা নাই হোক!

ব্যাটিংয়ের এতটাই বাজে অবস্থা ছিল যে মাত্র ৫০ টা রান বোর্ডে জমা করতেও হিমশিম খেতে হয় রংপুরকে। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের ২৩ রানটাই সর্বোচ্চ হয়ে থাকত, যদি না শেষ দিকে আকিব জাভেদ ঝড় না তুলতেন। আকিব জাভেদও হয়তো এই কাজটা করতে পারতেন না যদি তিনি সকালে এসে দুপুরেই খেলতে নেমে যেতেন!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link