ক্রিকেটে পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না—এ কথা অনেকেই বলেন, কিন্তু সত্যি করে দেখাতে পারেন কজন? নাঈম শেখ পারেন। তিনি দেখিয়েছেন। বিপিএলে যখন আলো ছড়াচ্ছেন, তখন মনে রাখা দরকার—এই নাঈম হুট করে আসেননি। ঘণ্টার পর ঘণ্টার নেটে ঘাম ঝরিয়েছেন, দুর্বলতাকে শক্তিতে বদলেছেন, নিজের খেলাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার কে? উত্তর একটাই — নাঈম শেখ। শুধু ধারাবাহিক নন, তিনি এখন দেশের সেরা ওপেনারও। এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, বিপিএলেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। তাঁকে নিয়ে ট্রল করতে পারেন, সেটা এখন তাঁর নিজেরও গা সয়ে গেছে — কিন্তু তাঁর অর্জনকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
নামের সাথে লেগে থাকার সংখ্যাগুলো বলে দিচ্ছে তাঁর দাপট। এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে ৩১৬ রান করেছেন। ৩০-এর ওপর গড়, ১৩৫-এর ওপর স্ট্রাইক রেট। বিপিএলে এসে সেই পারফরম্যান্সকেও ছাড়িয়ে গেলেন। ১৩ ম্যাচে ৪৯২ রান করেছেন, গড় প্রায় ৪৫, স্ট্রাইক রেট ১৫০-এর কাছাকাছি। এলিমিনেটরে তিনি অপরাজিত থাকেন ৩৩ বলে ৪৮ রানে। একাই শেষ করে দিলেন ম্যাচ!
টানা ২৫-৩০ ম্যাচ ধরে এমন পারফরম্যান্স? চাট্টিখানি কথা নয়! নাঈমের এই পরিবর্তনের পেছনের রহস্য কি কী?
উত্তরটা সহজ—অভ্যাস বদলেছেন, নিজেকে ভেঙে গড়েছেন। এনসিএল শেষ হওয়ার পরও বিশ্রাম নেননি, দলীয় অনুশীলনের আগেই একা নেটে সময় কাটিয়েছেন। বিশেষ করে স্পিনের বিপক্ষে নিজের দুর্বলতা কাটাতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। আজ যে নাঈম শেখকে দেখা যাচ্ছে, সেটি রাতারাতি তৈরি হওয়া কোনো গল্প নয়—এটি তাঁর রক্ত-ঘামের বিনিময়ে লেখা অধ্যায়।
আর একটা কথা না বললেই নয়। বিয়ের পর বদলে যাওয়া নাঈম আরও পরিণত হয়েছেন। ‘লেডি লাক’ বদলে দিয়েছেন নাঈমকে। কঠোর অনুশীলনের ফল, সাথে ব্যক্তিগত জীবনের সৌভাগ্য – এই দুয়ে মিলেই মাঠের লড়াইয়ে আরও দৃঢ় হয়ে ফিরেছেন নাঈম। প্রত্যাশা এখন একটাই — নাঈম শেখ এগিয়ে যাক আরও দূরে, আরও উজ্জ্বল হয়ে!