ব্যাটিংয়ে দানবীয়, বোলিংয়ে কার্যকর। ফিল্ডিংয়েও ফিট! এ যেন ঠিক যুবরাজ সিং ফিরে এসেছেন ভারতের ক্রিকেটে। মজার ব্যাপার হল, অভিষেক শর্মার আইডল আবার ওই যুবরাজ সিংই।
আন্তজার্তিক টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটির মালিক এখন অভিষেক শর্মা। দ্রুততম ফিফটির মালিক যুবরাজ সিংয়ের প্রিয় শিষ্য। নিজের আইডলের পুরো কার্বন কপিই যেন অভিষেক। অভিষেকের মধ্যেই নিজের যৌবনটাই হয়ত বাইশগজে দেখতে পান যুবরাজ সিং।
বাঁ-হাতি ব্যাটার, সুদর্শন, নিপুণ পাওয়ার হিটার, ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলছেন ইংলিশ বোলারদের। কি, ভিন্টেজ ফ্ল্যাশব্যাক পাচ্ছেন! হ্যাঁ, স্বয়ং যুবরাজ সিংকেই মাঠে দেখছি এমন ভ্রম হওয়াটা আপাতত দোষের কিছু না। অভিষেকের ব্যাটিং দেখলে অন্তত সেটিই লাগে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৪ বলে ১৩৫ রানের ইনিংসটাকে বিশেষায়িত করার মত বিশেষণ খুঁজে পাওয়া বড্ড মুশকিল। ১৩ ছক্কার বিপরীতে চার মোটে সাতটা! এমন অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটাতে হলে কি লেভেলের পাওয়ার হিটিং বা ক্যাপাবিলির দরকার হয় সেটি কি ভাবতে পারেন! একেই সম্ভবত বলে অউরা, চার্ম, দ্য মেইন ক্যারেক্টার সিন্ড্রোম।
মহেন্দ্র সিং ধোনির জীবনের উপরে নির্মিত সিনেমাটার ওই সিনটার কথা মনে আছে? ধোনিরা ম্যাচ নামের আগেই হেরে গিয়েছিল আগের রাতে শুধু যুবরাজের স্যোয়াগের কাছে।
ইংল্যান্ডের দশাও অনেকটা একই। এই তরুণী তুর্কীর অউরা তেই ধরশায়ী দ্য মাইটি লায়ন্স। জোফরা আর্চার, মার্ক উড, আদিল রাশিদদের রীতিমতো পাড়ার বোলার বানিয়ে ফেললেন তিনি। পয়েন্টের উপরে কাট করে ছক্কা বা আর্চারের ১৪৮ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসা বলকে অনায়াসে কাভার ড্রাইভে ছক্কা। কিংবা উডকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে মিড অন দিয়ে বাউন্ডারি, আহা চোখ জুড়াতে আর কি লাগে!
যতটা দৃষ্টিনন্দন তার ব্যাটিং, ঠিক ততটাই আগ্রাসী আর ভয়ংকর তার ব্যাটিং স্বত্তা। যাতে জ্বলে পুড়ে ছাই ইংলিশ বোলিং লাইন আপ। পুরনো দিনের সেই যুবরাজকেই যেন বারবার মনে করিয়ে দেয়। কিশোর বয়স থেকেই যুবরাজের মেন্টরশিপে বড় হয়েছেন। আইপিএলে খেলেন ২২ গজে বোলাদের আরেক দু:স্বপ্নের নাম ট্রাভিস হেডের সাথে।
সেই দলেরই কোচ আবার দ্য গ্রেট রিকি পন্টিং। অভিষেক এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, একটা ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছিলেন। সাধারণত কোচেরা বলেন, রিস্ক নেওয়া উচিত হয়নি। দেখে খেলা উচিত ছিল। তবে পন্টিং বলেছিলেন ঠিক উল্টো। ধমক দিয়ে বলেছিলেন, নেক্সট বার এই শট মারলে বলটা বাউন্ডারিতে গ্যালারি স্টান্ডে দেখতে চাই।
আগ্রাসন, ভয়ডরহীন ক্রিকেট, পাওয়ার হিটিংটা পেয়েছেন আইডল যুবরাজ থেকেই। সাথে পেয়েছেন অজিদের একরোখা, জেদি মনোভাবটাও। যারা যুবরাজ কে দেখতে পারেননি বলে আফসোস করেন, তারা অভিষেককে দেখতে পারেন। পয়সা উসুলের সাথে চোখের প্রশান্তির গ্যারান্টি আপাতত দেওয়াই যায়।