স্কোর কত? টস জিতে সিদ্ধান্তটা কি ঠিক ছিল? ব্যাটিং-বোলিং-ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে কাটাছেঁড়া। আমার টাইমলাইনে এখন এসব নিয়ে ঝড় বয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
হ্যাঁ, চট্টগ্রামে শুরু হওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ, কত কাঙ্ক্ষিত, কত রোমাঞ্চ!
অথচ রোমাঞ্চ বলে কিছু এখন এই দেশে নেই। আছে কেবল শঙ্কা, ভয়, হতাশা, কান্না…. আর, এসবকে সঙ্গী করেই ভালো থাকার চেষ্টা। মনের কোনো কোণে সামান্য আশার যেটুকু আনাগোনা, আসলে তা হয়তো হোপ অ্যাগেনস্ট দ্য হোপ!
জীবনের লড়াই চলছে আমাদের, ক্রিকেটের লড়াই এখানে অতি তুচ্ছ। ১৭ কোটি মানুষের দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জঘন্য কাঠামো দেখছি আমরা, দেশের ক্রিকেট কাঠামোর দুর্বলতার আলোচনা এখন হাস্যকর।
‘স্কোর’ শব্দটার সঙ্গে আপাতত আর ক্রিকেটের সম্পর্ক নেই, এখন তা আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা!
‘আর দুই সপ্তাহ’ করতে করতে তিন মাস হয়ে গেছে, ফা** থ্রি মান্থস! অনেক দেশেই প্রকোপ অনেক কমে গেছে তিন মাস সময়ে, অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। আমাদের এখন দিনপ্রতি তিন হাজার করে বাড়ছে, টেস্ট বেশি করালে হয়তো ৩০ হাজার করে বাড়বে বা আরও বেশি।
জানি না, আরও কত তিন মাস পার হলে অন্ধকার এই সুড়ঙ্গ থেকে বের হতে পারব। জানি না, হাহাকার করার জন্য বা স্বস্তির শ্বাস নেওয়ার জন্য আমরা কতজন টিকে থাকব
জানি, সময়টা খুব নিষ্ঠুর। একটি আইসিইউ বেড, একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য হাহাকার চারপাশে। হাজার হাজার মানুষের যুদ্ধ এখন একটু বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার, পরের নিঃশ্বাসটা একটু শান্তিতে নেওয়ার।
তবু আমার খুব বলতে ইচ্ছে করছে, আবার শের-ই-বাংলার ঘাসের ছোঁয়া পেতে চাই, টেস্ট ম্যাচের সকালে পুলিশ ক্যাফেতে পায়া-নেহারি দিয়ে নাস্তা করতে চাই, প্রেসবক্সে সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে লিখতে চাই, কারও বাজে শটে মেজাজ খারাপ করে টেবিলে চাপড় মেরে হাতে ব্যথা পেতে চাই।
চাই, আরও অনেক কিছু।
– ফেসবুক থেকে