আগ্রাসনের চূড়ান্ত উদাহরণ

কি দুর্দান্ত এক ম্যাচ! অসাধারণ ক্রিকেটীয় লড়াই। ব্যাটিংয়ের দারুণ এক প্রদর্শনী। দুই দলের পেশিশক্তির লড়াইয়ে চোয়াল জুড়ে হাসি মাখিয়ে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ২১০ রানে টার্গেটটাও অবলীলায় পার করে ফেলে ইমরুল কায়েসের দল। রেকর্ড গড়া এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কুমিল্লা।

দিনের দ্বিতীয় ম্যাচ। সিলেট পর্বের শেষ। সেই ম্যাচে কুমিল্লা টস জিতে বোলিং করবার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সেই সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণে আগ্রাসনের ঘোড়ায় চেপে ছুটতে শুরু করে খুলনা টাইগার্স। সেই রণতরীর নেতৃত্বটা দিচ্ছিলেন তামিম ইকবাল ও শাই হোপ। খুলনার জন্যে শুরুটা খুব একটা আশান্বরুপ হয়নি। শুরুর ওভারটায় দারুণ চাপে ফেলে দেন নাসিম শাহ।

তবে সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে শুরু করার ঠিক আগ মুহূর্তে মাহমুদুল হাসান জয়ের উইকেট হারায় টাইগার্সরা। কিন্তু এরপর যা হয়ে তা রীতিমত এক রুপকথার গল্প। তামিম ও হোপ নিজেদের মধ্যে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে শুরু করেন। দুই জনই তুলে নেন ব্যক্তিগত পঞ্চাশ রান। এরপর যেন প্রতিযোগিতার মাত্রাটা বেড়ে যায়। দুইজনই বিদ্যুৎ গতিতে ছুটতে শুরু করেন সেঞ্চুরির জন্যে। তবে শেষ অবধি কেউ সেঞ্চুরির দেখাটি পাননি।

তামিম ইকবাল থামেন ৯৫ রানে। অন্যদিকে ৯১ রান করে শাই হোপ ছিলেন অপরাজিত। এই দুই ব্যাটারের রেকর্ড ১৮৪ রানে জুটিতে ভর করে ২১০ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় খুলনা টাইগার্স। বিশাল এক লক্ষ্যমাত্রা। সেই টার্গেট টপকে যাওয়ার কাজটা ভীষণ কঠিনই বটে। এমন সুবিশাল রান তাড়ায় কুমিল্লার আস্থার কাণ্ডারি লিটন কুমার দাস। তবে ভাগ্য বিধাতা এদিন লিটনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন।

তরুণ পেসার শফিকুল ইসলামের বল গিয়ে আঘাত হানে লিটনের হাতে। তাতেই মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন লিটন। সেখানেই জয়ের আশা যেন ক্ষীণ হতে শুরু করে। যদিও মোহাম্মদ রিজওয়ান ও জনসন চার্লসের মস্তিষ্ক জুড়েই তখন রেকর্ড গড়ার ফন্দি। এই দুইজন ব্যাটার তামিম-হোপ জুটির পাল্টা জবাবটাই যেন দিতে শুরু করেন। তাঁরাও খুলনার বোলারদের নাভিশ্বাস তুলে ফেলেন।

একের পর এক বাউন্ডারি আঘাত হানতে শুরু করে সীমানার বাইরে। ২৪ বলে অর্ধশতকের দেখা পেয়ে যান রিজওয়ান। তাঁর এমন মারকুটে ব্যাটিং দেখে অপর পাশে থাকা জনসন চার্লসও হাত খুলে ব্যাটিং করতে শুরু করেন। দুই জনের জুটি থেকে আসে ১২২ রান। মাত্র ৩৯ বলে ৭৩ রান করে রিজওয়ান আউট হয়ে যান। কিন্তু চার্লস তাতে তাঁর আক্রমণ থামিয়ে দেননি। বরং আরও বেশি আগ্রাসনের রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন চার্লস।

১৯১ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করে মাত্র ৫৬ বলে ১০৭ রান করেন চার্লস। যার মধ্যে ছিল ১১টি ছক্কার মার। তাছাড়া পাঁচ খানা চারও মেরেছেন এই ব্যাটার। তাঁর অমন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে যেন ধোপে টেকেনি খুলনার ২১০ রানের বিশাল টার্গেট। এক ওভার চার বল বাকি থাকতেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই জয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানটি পোক্ত করল ইমরুল কায়েসের দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link