সময়ের ব্যবধানে ক্রিকেটের অনেক নিয়মেই পরিবর্তন এসেছে। এক যুগ বা তার আগের নিয়ম গুলোর সাথেই এখনকার নিয়মের আকাশ পাতাল পার্থক্য। কিন্তু এই পরিবর্তন গুলোর বেশির ভাগই কোন না কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই হয়ে থাকে। তেমনই একটা নিয়মের পরিবর্তন হয়েছিলো বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের করা একটা ডেলিভারির জন্য।
এক যুগেরও বেশি সময় আগের কথা। ২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে পেসার শাহাদাত হোসেনের বোলিং তোপে মাত্র ১৭০ রানেই অল আউট হয়েছিল প্রোটিয়ারা। ঐ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স।
আরো পড়ুন
- এক অধিনায়কের পক্ষে আশরাফুল
- প্রোটিয়া দৈত্য বধের অধ্যায়
- দম ফেলার ফুরসৎ নেই
- ‘সাধারণ চোখ আর নির্বাচকদের চোখ এক হলে হবে না’
- ‘দোষ আসলে সবারই, সব জায়গায়ই সমস্যা আছে’
ডি ভিলিয়ার্স আউট হয়েছিলেন লেগ স্পিনার আশরাফুলের ‘বিতর্কিত’ এক ডেলিভারিতে। আশরাফুলের করা বলটি উইকেটে দুই বাউন্স খেয়ে ভিলিয়ার্সের ব্যাটে গিয়েছিল। দুই বাউন্সের বল খেলতে গিয়ে আশরাফুলের হাতেই ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন প্রোটিয়া এই ব্যাটসম্যান। ভুতুড়ে এই ডেলিভারিতে আউট হয়ে প্রোটিয়া গ্রেট নিজেও বোকা বনে যান। এভাবে উইকেট পাওয়াটা আশরাফুলের জন্যও ছিল অপ্রত্যাশিত।
ঐ ঘটনার পর দুই বাউন্সের বল আলোচনার জন্ম দেয়। এরপরই দুই বাউন্সের বলকে নো বল হিসাবে ঘোষণা করে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। তবে আশরাফুল সম্প্রতি জানিয়েছেন ঐ বল নিয়ে তার কোন কথায় হয়নি ডি ভিলিয়ার্সের সাথে।
ডি ভিলিয়ার্স আউট হওয়ার আগে তার ক্যাচ মিস করেছিলেন আশরাফুলই। ঐ ঘটনার এক যুগ পর খেলা ৭১- এর নিয়মিত আয়োজন ‘ছেলেখেলা লাইভ’-এ এসে জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক জানিয়েছেন ঐ ক্যাচ মিস করে টেনশনে ছিলেন তিনি। তাই ভিলিয়ার্সকে আউট করে মহা খুশি হয়েছিলেন আশরাফুল।
তিনি বলেন, ‘না ওই ওর সাথে (এবি ডি ভিলিয়ার্স) ভাবে কথা হয় নাই। ডি ভিলিয়ার্সের ক্যাচ আমি ছেড়েছিলাম। আমি তো চাপে ছিলাম ডি ভিলিয়ার্সের মতো ব্যাটসম্যানের ক্যাচ ছেড়েছি! কি হবে আল্লাহ জানে। খুব ভয় পাচ্ছিলাম পরে ডাবল বাউন্সে যখন আউট হলো আমি তো মহা খুশি। ঐ বলের কারণেই কিন্তু আইসিসিতে এখন একটা নতুন আইন এসেছে যে ডাবল বাউন্স হলে নো বল হবে।;
২০১৮ সালে হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ডি ভিলিয়ার্স অবসর নিলেও এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণি দেননি আশরাফুল। যদিও আশরাফুল দেশের জার্সিতে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছিলেন প্রায় ৮ বছর আগে।
ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য ২০১৩ সালে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফিরলেও আর জাতীয় দলে ফিরতে পারেননি এই ব্যাটসম্যান।