মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় দেওয়ার সবচেয়ে বড় এক মঞ্চ টেস্ট ক্রিকেট। সেখানটায় খেলোয়াড়দের নিজেদের প্রমাণ করার অনেক কিছু থাকে। ঠিক সে জায়গাটায় বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে বেশ একটা দূর্বলতা হরহামেশাই যেন প্রতিলক্ষিত হয়। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যায়। ঠিক সে জায়গাটায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উন্নতির জায়গা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দলের অধিনায়ক ডিন এলগার।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। তবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচেই জন্ম হয়েছে নানান বিতর্কের। সে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে নিজেদের খুঁজে পাচ্ছে গোটা বাংলাদেশ দল। দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁরা নাকি অত্যাধিক স্লেজিং করে। হ্যাঁ ঠিক এরকম এক অভিযোগই এনেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন যে তাঁরা আইসিসিকে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানাতে চলেছেন। তবে বাংলাদেশ দলের এমন অভিযোগকে নাকচ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডিন এলগার। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি তাঁরা যা বলেছে তা ন্যায়সঙ্গত নয়। আমরা খুব গুরুত্ব সহকারে ম্যাচটা খেলেছিলাম। আমরা যা করেছি তা সব কিছু আমরা আমাদের ব্যাটিং ইনিংসে তাঁদের কাছ থেকেই পেয়েছি।’
এলগারের সোজাসাপ্টা কথা থেকে এটাই বোঝা যায় যে দুই দলের মাঝেই সমপরিমাণ কথার আদান প্রদান হয়েছে। তাছাড়া ডিন এলগার বাংলাদেশকে কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। তাঁর মতে বাংলাদেশের মানসিকভাবে আরো দৃঢ়তা অর্জন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা তাঁদের ব্যাটারদের উদ্দেশ্য করে কোন বাজে মন্তব্য কিংবা গালাগালি করিনি কারণ আমরা এখনও তাদেরকে সম্মান করি। আমার মনে তাঁদের আর বেশি মানসিক দৃঢ়তা অর্জন করা উচিৎ এবং তাঁদেরকে বেশি বেশি করে উঁচু পর্যায়ের টেস্ট ক্রিকেট খেলা উচিৎ। তাঁরা বোধহয় এটাতে অভ্যস্ত নয়।’
বাংলাদেশকে উপদেশ দেওয়া ছাড়াও তিনি বলেন যে ডারবান টেস্টের তেমন কোন কটু বাক্য বিনিময় দেখেননি তিনি। কোন দলই তাঁদের সীমা পেরুনো ব্যাকবাণ ছোড়েনি। স্লেজিং ছাড়াও ডারবান টেস্টের আরও এক বিতর্ক ছিল আম্পায়ারিং ইস্যু। সে ইস্যুতেও বাংলাদেশ আইসিসিকে অনুরোধ জানিয়েছে নিরপেক্ষ আম্পায়ারের জন্যে।
সে ইস্যুতেও কথা বলেছেন ডিন এলগার। তিনি বলেন, ‘আম্পায়ারিং করাটা বেশ কষ্টসাধ্য এক কাজ ছিল। কেননা পুরো উইকেটে খুব বেশি অনাকাঙ্ক্ষিত বাউন্স ছিল যা কিনা আম্পায়ারদের বেশ অসুবিধার মধ্যে ঠেলে দিয়েছিল।’ মোট ২১ দফা রিভিউ নেওয়া হয়েছিল দুইদলের পক্ষ থেকে। এতেই আন্দাজ করে নেওয়া যায় আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ঠিক কতটা দোলাচলের মধ্যে ছিল দুই দলই।
এখন দুই দল মুখিয়ে আছে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচের মুখোমুখি লড়াইয়ের জন্যে। তবে মাঠের লড়াইয়ের থেকেও বেশি জায়গা করে নেবে এক অদৃশ্য স্নায়ুযুদ্ধ।