সেই এলগারের ফিরে আসা

রঙিন পোশাকে খুব একটা স্বস্তিতে নেই দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে টেস্টে গেল কয়েক সিরিজেই বেশ ভাল অবস্থানে দলটি। দলের গুরুদায়িত্বে থাকা ডিন এলগারও ছিলেন ব্যাট হাতে উজ্জ্বল। অধিনায়ক হিসেবে এখন অবধি এই প্রোটিয়া ওপেনার বেশ সফল। তার অধীনে সাদা পোশাকে অন্তত শক্ত অবস্থানে আছে দল। ব্যাট হাতে চলতি বছরটা খুব একটা ভাল না গেলেও গেল বছর কয়েক ধরেই ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন এলগার।

এইত বাংলাদেশের বিপক্ষে ডারবান টেস্টের প্রথম ইনিংসেই খেললেন ৬৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। ১০১ বলে ১১ চারে ৬৭ রানের পর খালিদ আহমেদের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এই ওপেনার। সবশেষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে করেন মোটে ১ রান! দ্বিতীয় টেস্টে করেন দুই ইনিংসে ৫৪ রান। সিরিজ ১-১ ড্র হলেও এলগার ঠিক নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।

বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগে চলতি বছর চার টেস্টে আট ইনিংসে মাত্র একটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেন এলগার। ভারতের বিপক্ষে জোহানেসবার্গে ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংস ছাড়া চলতি বছর নিজের সেরাটা দিতে পারেননি এই প্রোটিয়া তারকা। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে আবারও ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই টেস্ট অধিনায়ক।

বাংলাদেশের বিপক্ষে এলগারের রেকর্ডটাও বেশ দুর্দান্ত। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ টেস্টে ৫ ইনিংসে ২ সেঞ্চুরিতে ১০১ গড়ে ৪০৫ রান করেছেন এলগার। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে খেলেছিলেন ১৯৯ রানের আক্ষেপময় এক ইনিংস। মাত্র এক রানের জন্য মিস করেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। এটি এখন অবধি টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস এলগারের।

বাংলাদেশের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাই বড় চ্যালেঞ্জ এলগারের উইকেট। সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেই অবশ্য প্রিয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছিলেন এলগার। খালেদের শিকার হয়ে ফেরার আগে ওপেনিংয়ে জুটি গড়েছেন ১১৩ রানের! বছরের প্রথম ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির ইঙ্গিতটাও দিচ্ছিলেন। কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি প্রোটিয়া অধিনায়কের। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিভীষিকাময় ব্যাটিংয়ের পর রানে ফেরায় অন্তত স্বস্তিতে আছেন এলগার।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এই ডিন এলগার। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম চক্রে ১৯ ম্যাচে ৩৫ ইনিংসে ৪০ গড়ে করেছেন ১২৯২ রান। ৭ ফিফটি ছাড়াও আছে ২ সেঞ্চুরি। রানের দিক থেকে এলগারের পরে আছেন কুইন্টন ডি কক (৯০২)। অর্থাৎ পরিসংখ্যান বিচারে সাম্প্রতিক সময় বা গেল বছর কয়েকের মাঝে টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা ব্যাটার ডিন এলগার সেটা নিঃসংকোচে বলা যায়। আর এলগারের ব্যাটে চড়েই বেশ কিছু টেস্টে প্রতিপক্ষের উপর দাপট দেখাতে পেরেছে প্রোটিয়ারা।

তাই গেল কয়েক সিরিজের পারফরম্যান্স দিয়ে বা কিছু সময় অফ ফর্মে থাকা এলগারকে বিবেচনা করলে বরং ভুলই হবে। এলগার রানের ধারায় ফিরলে প্রতিপক্ষের জন্য সেটি হবে অশনি সংকেত। আপাতত বাংলাদেশের জন্য বড় লক্ষ্য সিরিজে বাকি তিন ইনিংসে এলগারের উইকেটটা দ্রুত শিকার করা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে টেস্টে হারাতে হলে এলগারকে অবশ্যই দ্রুত দমাতে হবে সে নিয়ে কোন সন্দেহ নেই!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link