যেন রূপালি পর্দার কোনো নায়ক ঢুকছেন ড্রেসিংরুমে। আর তাঁকে কেন্দ্র করে ভারতের সাজঘর তখন চাঁদের হাট। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা বা শুভমান গিলদের ছাপিয়ে ওই স্যুটেড-বুটেড লোকটাই সকলের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। কে তিনি?
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ শেষ। বাইশ গজের যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু ড্রেসিংরুমে তখনও চলছিল আরেক মহাযুদ্ধ — উল্লাসের, উচ্ছ্বাসের, জয়ের। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মুখে তখন তৃপ্তির হাসি। কেউ হাই-ফাইভ দিচ্ছেন, কেউ মজা করে একে অপরের মাথায় টোকা দিচ্ছেন, কেউ আবার ব্যাট-প্যাড ছুড়ে দিয়ে সোফায় ধপ করে বসে পড়েছেন। এমন সময় ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপ হাততালি দিয়ে বললেন, ‘একটু শান্ত হও, বিশেষ ঘোষণা আছে!’
সবার চোখ এবার দিলীপের দিকে। তিনিও রহস্যটা ধরে রাখলেন। বললেন, ‘আজকের ম্যাচে আমাদের ফিল্ডিং ছিল দুর্দান্ত! আমরা নিখুঁত থ্রো করেছি, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রান আউট আদায় করেছি। আর সেজন্যই আজ সেরা ফিল্ডারের পুরস্কার থাকছে এক বিশেষ অতিথির হাত থেকে!’
‘বিশেষ অতিথি?’ —এ কসঙ্গে বলে উঠলেন বিরাট কোহলি, রবীন্দ্র জাদেজা আর লোকেশ রাহুল। সবাই একে অপরের মুখের দিকে তাকাচ্ছেন। কে হতে পারে? এরপরই দরজার সামনে ভেসে উঠল এক চেনা হাসি। গোঁফের তলায় লুকোনো সেই পরিচিত দুষ্টুমি। দরজা ঠেলে ভেতরে এলেন শিখর ধাওয়ান! সাবেক সেই ওপেনার, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নাম নিলেই যার প্রসঙ্গ উঠতে বাধ্য।
হাত দুটো উঁচিয়ে, সেই চিরচেনা ক্যারিশমাটিক ভঙ্গিতে বললেন, ‘ক্যায়সে হো ভাইলোগ?’ ড্রেসিংরুম মুহূর্তেই ফেটে পড়ল হাসিতে। কোহলি হেসে বললেন, ‘আরে গাব্বার! তুই এখানে?’ সবাই একে একে এসে হাত মেলালেন, বুকে জড়িয়ে ধরলেন। কুলদ্বীপ যাদব কেমন একটা নাচও দিলেন। রবীন্দ্র জাদেজা আরেকটু এগিয়ে, তিনি শিখর ধাওয়ানের মত করে সেলিব্রেশন করলেন, গাব্বারের আগমনে!
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দূত হয়ে এখন দুবাইয়ে ধাওয়ান। কিন্তু পুরনো বন্ধুরা আছে তো ড্রেসিংরুমে। সেখানে তিনি না গিয়ে থাকেন কি করে। ধাওয়ানের সেই দুষ্টুমি-ভরা উপস্থিতি যেন সবাইকে এক মুহূর্তের জন্য ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে গেল। ড্রেসিংরুমে হাসি, আনন্দ আর বিজয়ের গর্জন যেন থামতেই চাইছিল না।