দুর্ভাগা সেই সেকেন্ড বয়

যথেষ্ট প্রতিভা ও স্কিল থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র ভুল সময়ে জন্ম নেয়ার কারণে নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি ম্যাকগিলের। শেন ওয়ার্নের একচ্ছত্র প্রাধান্যের কারণে স্পিনার হিসেবে কখনোই ‘ফার্স্ট চয়েস’ হতে পারেন নি, কিন্তু যখনই সুযোগ পেয়েছেন নিজের লেগ স্পিন জাদুতে ঠিকই ঘোল খাইয়ে ছেড়েছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের!

তাঁকে বলা হয় অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ভাগা ক্রিকেটারদের একজন। তুমুল প্রতিভাবান, তুখোড় পারফর্মার হয়েও ‘ভাগ্যের ফেরে’ দেশের হয়ে নিয়মিত খেলার সুযোগ পাননি! পাবেন কী করে, তার জন্মটা যে হয়েছিল ভুল সময়ে! একজন বিশ্বমানের স্পিনার হয়েও ক্যারিয়ারজুড়ে ‘স্পিন জাদুকর’ শেন ওয়ার্নের তারকাদ্যুতির ছায়ায় ঢাকা পড়ে ছিলেন যিনি, সেই স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল ক্রিকেট ইতিহাসেরই এক অনন্ত আক্ষেপের নাম।

ওয়ার্নের অভিষেক ১৯৯১-১৯৯২ মৌসুমে আর ম্যাকগিলের ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে। ততদিনে ওয়ার্ন তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করছেন। ওয়ার্ন অবসর নেন ২০০৭ সালে। তার ঠিক এক বছর পরই ২০০৮ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান ম্যাকগিলও। তার মানে ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময়ই দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে তাঁকে লড়তে হয়েছে ওয়ার্নের সঙ্গে।

১৯৭১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, আজকের এই দিনে পৃথিবীতে এসেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ‘আনসাং হিরো’, স্পিনারদের ক্লাসের ‘সেকেন্ড বয়’ স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল; সতীর্থদের মাঝে যিনি পরিচিত ছিলেন ‘ম্যাগিলা’ নামে।

স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলকে বলা হয়, ক্রিকেট বলকে টার্ন করানোর জন্য সেরা বোলার।’ইউনিক রাউন্ড আর্ম রিস্ট অ্যাকশন এবং ‘স্লোয়ার থ্রু দ্য এয়ার’ রিলিজ থেকে বড় বড় টার্ন আদায় করতে পারতেন তিনি। তাঁর বিগ টার্নিং লেগ ব্রেক ছাড়াও ছিল গুগলি, ফ্লিপার, ব্যাক স্পিনার, স্লাইডারসহ প্রায় সব ধরনের ভ্যারিয়েশন। বলের স্পীড এবং রিলিজ পয়েন্টেও বৈচিত্র‍্য আনতে পারতেন ইচ্ছেমত। ম্যাকগিলের মতে, ‘The angle of your wrist and point of release determines the type of delivery.’

স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল ছিলেন সর্বোপরি একজন আক্রমণাত্মক স্পিনার যিনি রানের বিনিময়ে উইকেট কিনতে পারতেন। তাঁর দুর্দান্ত স্ট্রাইক রেটও (৫৪) সেই কথাই বলে। একজন এটাকিং লেগ স্পিনার বাজে বল দিবে, মার খাবে আবার উইকেটও নিবে। লেগ স্পিন বোলিং নিয়ে ম্যাকগিলের দর্শনটা ছিল এরকম, ‘আমি সব সময় উইকেট নেওয়াকেই গুরুত্ব দিয়েছি, কত রান হচ্ছে সেটা নিয়ে ভাবিনি। একজন লেগস্পিনার কতগুলো বাজে বল করছেন সেটা দিয়ে তাঁকে যাচাই করা যায় না। কতগুলো উইকেট তিনি পেলেন সেটাই মুখ্য ব্যাপার।’

ছোটবেলায় ম্যাকগিলের ক্রিকেটে হাতেখড়িটা হয়েছিল পারিবারিকভাবেই। বাবা, চাচা, দাদাসহ পরিবারের প্রায় সবাই ক্রিকেট খেলতেন। বাবা টেরি ম্যাকগিল ভাল লেগ স্পিন করতেন। লেগ স্পিন শেখার ব্যাপারে তাঁর আগ্রহ ও অনুপ্রেরণাও জন্মেছিল বাবাকে দেখেই। তাঁর আইডল ছিলেন কিংবদন্তি লেগ স্পিনার ক্ল্যারি গ্রিমেট।

১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক। অতীতে একই দলের হয়ে খেলেছেন ম্যাকগিলের বাবা টেরি ম্যাকগিল ও দাদা চার্লি ম্যাকগিলও। তবে ফার্স্ট ক্লাস ক্যারিয়ারের শুরুটা বেশ বাজে হয়েছিল তাঁর। মাত্র এক ম্যাচ খেলে উইকেটশূন্য থাকায় বাদ পড়তে হয়েছিল পুরো মৌসুমের জন্যই।

১৯৯৭-৯৮ মৌসুমের শেফিল্ড শিল্ডে ২৪.১৮ গড়ে ম্যাকগিলের শিকার ছিল ৩৫ উইকেট। দুর্দান্ত এই পারফরম্যান্সের পুরস্কারস্বরূপ তিনি ডাক পান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘোষিত টেস্ট সিরিজের দলে।

১৯৯৮ সালের ৩০ জানুয়ারি, অ্যাডিলেড ওভালে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ম্যাকগিলের মাথায় ওঠে স্বপ্নের ‘ব্যাগি গ্রিন’। অভিষেক টেস্টের দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। সে ম্যাচে ওয়ার্নও ছিলেন, সর্বসাকুল্যে যার অর্জন ছিল মাত্র ৩ উইকেট। ম্যাচটি শেষ হয়েছিল অমীমাংসিতভাবে।

ম্যাকগিলের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম উইকেটটা ছিল জ্যাক ক্যালিসের। ২৩ বছর বয়সী লেগ স্পিনারের দুর্দান্ত একটি গুগলিতে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েছিলেন সাবেক প্রোটিয়া কিংবদন্তি।

একই বছর অক্টোবরে দলের সাথে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন ম্যাকগিল। ২৭.৪ গড়ে ১৫ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের কীর্তিটাও ওই সিরিজেই।

রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে একাই নিয়েছিলেন ৯ উইকেট (৫/৬৬ ও ৪/৪৭); অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল এক ইনিংস ও ৯৯ রানে।

পাকিস্তান সফরে পাওয়া দুর্দান্ত ফর্মটা তিনি ধরে রেখেছিলেন ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজেও। চার টেস্টে ম্যাকগিলের ঝুলিতে জমা পড়েছিল ২৭ উইকেট; মাত্র ১৭ গড়ে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ জিতেছিল ৩-১ ব্যবধানে।

সিডনিতে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে ম্যাকগিল একাই নিয়েছিলেন ১২ উইকেট! প্রথম ইনিংসে ৫৭ রানে পাঁচটা, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫০ রানে ৭টা। অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ৯৮ রানে; ম্যাচসেরা হয়েছিলেন যথারীতি ম্যাকগিল।

সিডনি টেস্টের অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়েই তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন পরের বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দলে। তবে ৪ টেস্টে মাত্র ১২ উইকেট নিয়ে নির্বাচকদের হতাশ করেছিলেন ম্যাকগিল। ফলে প্রায় এক বছর দলের বাইরে থাকতে হয়েছে তাঁকে।

২০০১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজের দলে আবারও ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। সিডনিতে সিরিজের শেষ টেস্টে আরও একবার বল হাতে নিজের জাত চেনান স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল! দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর চমৎকার এক স্পেলের (৭/১০৪) কারণেই অস্ট্রেলিয়ার বিজয় নিশ্চিত হয়েছিল।উল্লেখ্য, সেবার লজ্জাজনকভাবে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াইশ হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

২০০১ সালের অ্যাশেজ সফরের দলে থাকলেও মাঠে নামার সুযোগ হয়নি একটি ম্যাচেও। ম্যাকগিল তাঁর পরবর্তী টেস্ট ম্যাচটি খেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, ২০০২ সালে সিডনিতে। ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন যথারীতি আরও একবার।

২০০২-০৩ অ্যাশেজে ওয়ার্নের অনুপস্থিতিতে মাত্র দুটো টেস্টে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ম্যাকগিল। দুই টেস্টে তিনি নেন ১২ উইকেট।

২০০৩ সালে ডোপ কেলেঙ্কারির দায়ে ওয়ার্ন সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ হলে কপাল খুলে যায় ম্যাকগিলের। সে বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরসহ দেশের মাটিতে বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে ও ভারতের বিপক্ষে সিরিজে অংশ নিয়েছিলেন মূল স্পিনারের ভূমিকায়। ওয়ার্ন ফেরার আগ পর্যন্ত ১১ টেস্টে নিয়েছিলেন ৫৩ উইকেট।

বারবাডোজের কেনসিংটন ওভালে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠবারের মত ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করেন তিনি। দুই ইনিংস মিলে ৯ উইকেট (৪/৮৬ ও ৫/৭৫) নিয়ে হন ম্যাচসেরা; অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জেতে নয় উইকেটে।

কেয়ার্নসে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মত লাভ করেন ১০ উইকেট। সাবেক এই লেগ স্পিনার দুই ইনিংসেই নিয়েছিলেন ৫ উইকেট (৫/৭৭ ও ৫/৫৬)। অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল এক ইনিংস ও ৯৮ রানে।

২০০৩-০৪ মৌসুমে ওয়ার্ন ফিরলেও ম্যাকগিলকে রেখেই একাদশ সাজিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে দুই ম্যাচে ৪৬ গড়ে মাত্র ৫ উইকেট নিয়ে নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিতে ব্যর্থ হন তিনি।

এরপর প্রায় এক বছরেরও বেশি সময়ের জন্য দলের বাইরে চলে যান তিনি। অবশেষে ফেরেন পাকিস্তানের বিপক্ষে, ২০০৫ সালের সিডনি টেস্টের দলে। এবং আবারও ফিরেই বাজিমাত! দুই ইনিংস মিলিয়ে আট উইকেট (৫/৮৭ ও ৩/৪৩) নিয়ে হন ম্যাচসেরা। কিন্তু এরপরও দলে থিতু হতে পারেননি।

২০০৫ সালে আইসিসি বিশ্ব একাদশের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের মূল একাদশে রাখা হয় ম্যাকগিলকেও। দু’ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট (৪/৩৯ ও ৫/৪৩) নিয়ে নিজেকে আরও একবার প্রমাণ করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ২১০ রানে।

দলে অনিয়মিত হবার পরেও সীমিত সুযোগে অসাধারণ পারফরমেন্স দিয়ে তিনি জায়গা করে নেন ২০০৫ অ্যাশেজের দলে। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! পুরো সফরটাই তাঁকে কাটাতে হয়েছিল দর্শক হিসেবে। ওই সফর নিয়ে একবার ঠাট্টার ছলে বলছিলেন, ‘মনে হচ্ছিল টাকা দিয়ে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলাম!’

২০০৫-০৬ মৌসুমে মাত্র তিনটি টেস্ট পেয়েছিলেন ম্যাকগিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচে সাতটি ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একমাত্র ম্যাচে নিয়েছিলেন ছয় উইকেট।

২০০৬ সালে বাংলাদেশ সফরে আসা অস্ট্রেলিয়া দলটিরও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন ম্যাকগিল। সেবার সিরিজে অস্ট্রেলিয়া পরিকল্পনা সাজিয়েছিল দুজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে (আরেকজন ওয়ার্ন)। ফতুল্লা ও চট্টগ্রামে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ম্যাকগিল একাই নিয়েছিলেন ১৬ উইকেট। জানিয়ে রাখা ভাল, ফতুল্লা টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাওয়া ১০৮ রানে আট উইকেটের স্পেলটিই তাঁর ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার।

বাংলাদেশ সফরে দুর্দান্ত পারফর্ম করার পরেও প্রায় দেড়টা বছর ম্যাকগিলকে কাটাতে হয় সাইড বেঞ্চে বসে। ২০০৭ সালে ওয়ার্নের অবসরের পর আর মাত্র চারটা টেস্টে খেলার সুযোগ পান ম্যাকগিল। ততদিনে অবশ্য বল হাতে পুরনো ধারটাও হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।

যথেষ্ট প্রতিভা ও স্কিল থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র ভুল সময়ে জন্ম নেয়ার কারণে নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি ম্যাকগিলের। শেন ওয়ার্নের একচ্ছত্র প্রাধান্যের কারণে স্পিনার হিসেবে কখনোই ‘ফার্স্ট চয়েস’ হতে পারেন নি, কিন্তু যখনই সুযোগ পেয়েছেন নিজের লেগ স্পিন জাদুতে ঠিকই ঘোল খাইয়ে ছেড়েছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের!

প্রায় দশ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে টেস্ট খেলেছেন মাত্র ৪৪ টা। এই ৪৪ টেস্টেই নিয়েছেন ২৯.০২ গড়ে ২০৮ উইকেট, স্ট্রাইক রেট ৫৪.০। ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছেন ১২ বার এবং এক ম্যাচে ১০ কিংবা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন ২ বার।

এছাড়া ঘরোয়া ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটেও প্রায় আটশ’র কাছাকাছি উইকেট আছে তাঁর। ১৮৪ ম্যাচে নিয়েছেন ৭৭৪ উইকেট! ‘দুর্ভাগা’ ম্যাকগিল ওয়ানডে খেলেছেন খুব কম। মাত্র ৩টি; তাতে উইকেট পেয়েছেন ৬টি। ইকোনমি রেটও মাত্র সাড়ে তিন! এই তিন ম্যাচের একটাতে আবার ম্যাচসেরাও হয়েছিলেন।

ওয়ানডেতে তাঁর ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ হওয়ার একমাত্র কৃতিত্বটি পাকিস্তানের বিপক্ষে, ২০০০ সালে সিডনিতে। ১০ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৯ রান দিয়ে তাঁর শিকার ছিল চার উইকেট।

টেস্টে বলের হিসাবে দ্রুততম ১৫০ উইকেট লাভের কৃতিত্বটি স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলের দখলে। টেস্টে দেড়শ উইকেট নিতে তাঁর লেগেছিল ৮,৩১২ বল। দ্বিতীয় স্থানে আছেন যিনি তিনিও একজন লেগ স্পিনার; পাকিস্তানের ইয়াসির শাহ ৮,৩৯৫ বল।

টেস্টে কমপক্ষে ১৫০ উইকেট আছে, এমন ‘স্পিনার’দের মধ্যে স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলের স্ট্রাইক রেটই সেরা! প্রতিটি উইকেটের পেছনে তাঁকে খরচ করতে হয়েছে মাত্র ৫৪ বল!

মজার ব্যাপার হল, টেস্টে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের জন্য রীতিমতো যম ছিলেন সাবেক এই লেগ স্পিনার। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ টেস্টে ১৫.৭ গড়ে নিয়েছেন ৩৩ উইকেট; ২৯.২ স্ট্রাইক রেটে!

খেলা ছাড়ার পর ম্যাকগিল প্রথমে কমেন্ট্রি, তারপর টেলিভিশন এ্যাঙ্করিং, সবশেষ বেছে নিয়েছেন কোচিং। এই তো কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের সম্ভাব্য স্পিন বোলিং কোচ হিসাবে ম্যাকগিলের নামটাই শোনা গিয়েছিল সবচাইতে বেশি।

২০১১ সালে চল্লিশ বছর বয়সে সিডনি সিক্সার্সের হয়ে একবার বিগ ব্যাশেও অংশ নিয়েছিলেন এই ডানহাতি লেগ স্পিনার। ৫ ম্যাচে ৮ উইকেট দলকে সেমিফাইনালেও তুলেছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মুখোমুখি হওয়া সবচেয়ে কঠিন ব্যাটসম্যান কে এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ম্যাকগিল বলেছিলেন লারার কথা।

লারার হাতে একবার বেধড়ক পিটুনি খাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে ম্যাকগিলের বক্তব্যটা ছিল এরকম, ‘অ্যাডিলেডের প্রকাশ্য দিবালোকে ২০০০ সালের শেষদিকে আমাকে লারা বেধরক পেটলো। যে জায়গাগুলোও পেটালো, ওসব জায়গায় আমি আগে কখনো মার খাইনি। বলও অনেক টার্ন করছিল, যদিও লারার তাতে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ ছিল না। এটাই আসলে ওর ব্যাটিংয়ের রহস্য।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...