লিপুকে ট্রল করবেন না সময় দেবেন – সিদ্ধান্ত আপনার!

১৯৮৬ সালে নিজেদের আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচটা লিপুর অধীনেই খেলে বাংলাদেশ দল। সেই হিসেবে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক অধিনায়ক। সাত ওয়ানডেতে থেমে যাওয়া ক্যারিয়ারের উর্ধ্বে গিয়ে লিপু বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক ছিলেন।

গুঞ্জন ছিল আগ থেকেই, এবার সেই গুঞ্জন সত্যি হল। নির্বাচকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হলো মিনহাজুল আবেদীন নান্নু আর হাবিবুল বাশার সুমনকে। লম্বা সময় জাতীয় দলের নির্বাচক হিসেবে থাকার পর অবশেষে বিদায় বলতে হলো তাঁদের। এই দু’জনের জায়গায় নতুন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) প্রবেশ করছেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু এবং হান্নান সরকার।

গাজী আশরাফ হতে যাচ্ছেন এই নির্বাচকমণ্ডলীর প্রধান, তাঁর সঙ্গে কাজ করবেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সাবেক নির্বাচক হান্নান সরকার। বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে তাঁদের পরিচিত ব্যাপক, ভক্ত-সমর্থকদের কাছেও সম্মানিত তাঁরা দু’জনেই।

কিন্তু এতদিন নির্বাচকের আসনে থাকা নান্নুকে যেই কারণে বাজেভাবে ট্রল করা হয়েছিল সেই রকম কারণ গাজী আশরাফের মাঝেও রয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনো ছক্কা মারেননি নান্নু এই অজুহাতে কতশত ব্যঙ্গ বিদ্রুপ সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাচকেরও সমৃদ্ধ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার নেই, কখনো হাফসেঞ্চুরিও করতে পারেননি তিনি।

যদিও, বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গণে খুবই সমৃদ্ধ একটি চরিত্র তিনি। ১৯৮৬ সালে নিজেদের আন্তর্জাতিক ওয়ানডেটা লিপুর অধীনেই খেলে বাংলাদেশ দল। সেই হিসেবে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক অধিনায়ক। সাত ওয়ানডেতে থেমে যাওয়া ক্যারিয়ারের উর্ধ্বে গিয়ে লিপু বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক ছিলেন।

লম্বা সময় অধিনায়ক হিসেবে মোহামেডানের হয়ে সফল ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ী দলের ম্যানেজার ছিলেন। ফলে, সাংঘঠনিক দক্ষতা, দলের বাইরে থেকে দলের জন্য কাজ করার সামর্থ্য তাঁর মধ্যে দারুণ ভাবেই আছে।

সাবেক এই ক্রিকেটার যখন খেলেছেন তখন বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটটা ঠিকঠাক চালু হয়নি। তাই তো কখনো চারদিনের ম্যাচ খেলা হয়নি তাঁর – সেজন্যই প্রশ্ন উঠতে পারে এমন একজনকে কি তৃণমুল দর্শেকরা মেনে নিতে পারবে, নাকি ছোটখাটো ভুলের অজুহাতে ক্যারিয়ার টেনে বিদ্রুপ শুরু হবে।

অথচ,  ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেটে যিনি ১০০৮ রান করেছিলেন তিনি। দেশের ক্রিকেটের শুরুর কাণ্ডারিদের একজত নিতি। হাফ সেঞ্চুরি নেই কিংবা প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেননি এসব কিছু আসলে তাঁর মর্যাদার কাছে তুচ্ছ।

তিনি দায়িত্ব পেয়ে কি কি করবেন – সেটা পরের ব্যাপার। এর আগে তিনি যে পরিবর্তন আনার সামর্থ্য রাখেন – সেই ব্যাপারে বিশ্বাস রাখতে হবে।

নির্বাচক প্যানেলে বড় সড় পরিবর্তনের সাথে সাথে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এখন সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা দুইটার সঙ্গেই দেখা হয়ে যেতে পারে; সফলতা পেলে ধরে রাখা হবে মূল চ্যালেঞ্জ, অন্যথায় নতুনদের সময় দিতে হবে, হয়তো সময় দিলে দেশকে ভাল কিছু দিতে পারবেন তাঁরা।

মোদ্দা কথা একটাই, অযাচিত সমালোচনার আগে নতুন অধিনায়ক কিংবা নতুন প্রধান নির্বাচক – দু’জনকেই সময় দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...