আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই না বার্সেলোনা কিছু জিতুক, বিশেষত ২০০৯ আর ২০১১ এর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের পরে। লিওনেল মেসি ইভেন হেডেও গোল দিয়েছে ইউনাইটেডকে দুটো, দুটোই ফাইনালে। দুই ফাইনাল হারা অনেক বড় ব্যাপার, আর কিশোর বয়সে অনেক টক্সিক সাপোর্টার ছিলাম, যার রেশ এখনো থেকে গেছে।
তবে এখন আমি এও চাই লিওনেল মেসি বার্সেলোনায় থাকুক, এখন আর মেসি আর্জেন্টিনা তো বটেই বার্সেলোনাতেও বড় কাপ ট্রফি জিতবে না মনে হচ্ছে লিগ জিততে পারে অবশ্য, কোপা দেল রেও জিততে পারে। ২০১৫ এরপরে হারের ধরনগুলো দেখলেই মনে হয় একটা গোল খেয়ে বসলে পরে মেসি ইমপেশেন্ট হয়ে যান।
যেটা ওর স্বভাবজাত স্কিলে প্রভাব ফেলে, মেসির যে ট্রেডমার্ক হুট করে ভেতরে ঢুকে গোল দেয়া সেই শটটা বায়ার্নের বিপক্ষে একটা ঢুকসিলো কিন্তু শট ছিল দুর্বল, এর বাইরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য ছিল লিভারপুলের সাথে অ্যানফিল্ডে, তবে এবারে লিসবনে মেসি ডেসপারেট ছিল প্রথম দিকে কিন্তু গোল খেয়ে বসার পর দলকে উজ্জীবিত করার মতো লিডার সে না। রোমা, লিভারপুল এবারে বায়ার্নের ম্যাচে তাকে নির্বিকার দেখা গেছে।
এই জিনিসগুলোর তো টেকনিকাল এনালাইসিস করে হয়না। যেমন নাপোলির সাথে মেসির গোলটা। আকঁড়ে ধরে থাকা একটা ব্যাপার আছে। এমন কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার সাথে হয়েছিল, এমনি ক্রোয়েশিয়ার সাথে স্কোরলাইন ৩-০ কিন্তু মেসি খারাপ খেলেনি, তার অন্য সময় গোল হওয়া সব কারিশমাই ডি বক্সে আঘাত পেয়ে ফেরত এসেছে।
ঘাটতি তাঁর লিডারশিপে, ২-০ তে পিছিয়ে যাওয়ার পর মেজাজ হারানোতে যার প্রভাব প্লেয়ারদের ওপরও পড়ছে। ৮৪ মিনিটে একটা প্লেয়ার তো রাকিটিচের মুখে একটা একদম ডেড বল লাথি মেরে দিসে। আমার মনে হইসে মেসিকে টিজ করা সহজ, এখন তো আরো সহজ, জাভি-ইনিয়েস্তা চলে যাওয়ার পর মেসি যখন মেজাজ হারায় বা ম্যাচ নিয়ে আশা হারায় তখন আর বার্সায় কিছু থাকে না, একদম নাল!
বেটার প্রতিপক্ষের সাথে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে আক্রমণাত্মক হওয়া ও ভুল করানো, ভুল করতে বাধ্য করা। একটা দলের কোচের বাইরেও নিজের ফিলোসফি আছে, যেমন ২০০৬ থেকে মোটামোটি নিয়মিত মূল দলের হয়ে খেলা একটা প্লেয়ার যখন বারবার কোচের বদল চান তখন বোঝা যায় ঘাপলা আছেই। এমনও না যে বার্সায় এমন হচ্ছে আর আর্জেন্টিনা একের পর এক কাপ জিততেছে।
আর কোচ রোনালদোকে বলে না কখন জাম্প দিয়ে হেড দিতে হবে, ঠিক কখন।
বার্সেলোনার উচিৎ জাভিকেই আনা, কোম্যান কিছুদিন থাকুক, এরপর পুরো অ্যাকাডেমি থেকে পাঁচটা রত্ন বের করুক। ইংলিশ একাডেমি আর স্প্যানিশ অ্যাকাডেমির মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে স্পেনের অ্যাকাডেমিতে একটু বেশি ফ্লুইড ফুটবলার বের হয়, পুইগ নামের যে তরুণ মিড দেখলাম বল পায়ে মেসির মতোই গ্লাইড করতে পারে। ডায়মন্ড ফরম্যাটে সে চারপাশে প্লেয়ার তৈরি ও বল গাইড করতে সক্ষম হবে নিশ্চিত যদি তার উচ্চ ধারণা থাকে নিজের খেলা সম্পর্কে।
যুগ শেষ যুগ শেষ বলে হাউকাউ করলেও, মেসি-রোনালদো যুগের আসল ইতি আসবে ২০২২ বিশ্বকাপে যদি দুইজন ফিট থেকে খেলে তাইলে সেটা দুর্দান্ত।