বিশ্বকাপের আগেই প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর সাথে এক বছরের নতুন চুক্তি করেছিল বিসিবি। মূলত চাপের মুখে পড়ে, অসহায় অবস্থায়ই এই চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তবে বিশ্বকাপে চূড়ান্ত ব্যর্থতার পর থেকেই রাসেলকে বিদায় জানানোর সুযোগ খুজছিল বিসিবি। আজ হঠাতই ক্রিকেট পাড়ায় গুঞ্জন নিউজিল্যান্ড সিরিজই বাংলাদেশের সাথে ডোমিঙ্গোর শেষ সিরিজ।
যদিও চুক্তি অনুযায়ী এখন রাসেল ডোমিঙ্গোকে বরখাস্ত করতে হলে বেশ মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে বিসিবিকে। কেননা তাঁকে বিদায় করতে হলে এক বছরের বেতন পরিশোধ করতে হবে আগে। এমন অবস্থায় বিসিবির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা খেলা ৭১ কে জানান রাসেল ডোমিঙ্গোকে বরখাস্তের ব্যাপারে এখনো কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বিসিবি। আবার এই বাস্তবতাকে একেবারে অস্বীকারও করেননি সেই কর্মকর্তা।
ফলে বোঝা যাচ্ছে এই গুঞ্জনকে একেবারে অস্বীকার করারও উপায় নেই। ওদিকে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে রাসেল ডোমিঙ্গোর সাথে চুক্তিতে একবছরের মধ্যে বরখাস্ত করার কোন উপায় নেই। করলেও পুরো এক বছরের বেতন প্রায় ২ লাখ ইউএস ডলার দিতে হবে এই কোচকে। ফলে আপাতত গলার কাটার মত রাসেরল ডোমিঙ্গকে দিয়েই কাজ চালাতে চাইছিল বিসিবি।
ওদিকে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী রাসেল ডোমিঙ্গোকে ইতোমধ্যেই বরখাস্ত করেছে বিসিবি। তবে নিউজিল্যান্ড সিরিজে তিনি যাচ্ছেন আপৎকালিন কোচ হিসেবে। সেই পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী রাসেলকে বরখাস্ত করতে এক আইনজীবীর সহায়তা নিয়েছে বিসিবি। আগের চুক্তি অনুযায়ী নভেম্বর পর্যন্ত কোন কারণ ছাড়াই তাঁকে বরখাস্ত করতে পারে বিসিবি।
তবে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরি খেলা৭১ কে অবশ্য জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। ডোমিঙ্গোকে বরখাস্ত করার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘একটা প্রতিষ্ঠানে সবাই নিশ্চয়ই চিরকাল থাকবেনা। ফলে রাসেল ডোমিঙ্গো থাকছেন কী থাকছেন না সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে আমরা এখনো কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌছাইনি আমরা। ফলে সিদ্ধান্ত আসার আগে বরখাস্ত করা হয়েছে এই ধরনের কথা বলা ঠিক না।’
ফলে সবমিলিয়ে ডোমিঙ্গোকে বরখাস্ত করার ব্যাপারটা শুধু গুঞ্জন বলে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছেনা। ওদিকে আগের চুক্তিতে তাঁকে বরখাস্ত করা হলেও ডোমিঙ্গো চাইলে বাঁধা দিতে পারেন। কারণ তাঁর সাথে নতুন চুক্তি করেছে বিসিবি। তবে জানা যায়, বাংলাদেশের এই প্রধান কোচও বাংলাদেশে থাকার ব্যাপারে এখন আর খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
যতটুকু জানা যায় দলে দিন দিন নিজের গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছেন এই কোচ। এছাড়া দলের গুরুত্বপূর্ণ নানা আলোচনাতেও এখন তাঁকে প্রায়ই এড়িয়ে যাওয়া হয় বলে শোনা যায়। এছাড়া দলের মাথা হিসেবে এখন টিম ডিরেক্টর পদে আছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। ফলে নিজের সেই কতৃত্বটা হারিয়ে ফেলেছেন রাসেল ডোমিঙ্গো।
এখন সবমিলিয়ে যা পরিস্থিতি তাতে এটা মোটামুটি নিশ্চিত যে নিউজিল্যান্ড সিরিজের পরে আর হেড কোচ হিসেবে থাকছেন না রাসেল ডোমিঙ্গো। বাংলাদেশের সাথে এটিই হতে যাচ্ছে তাঁর শেষ সফর। সত্যিই এমন হলে আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে কে হবেন বাংলাদেশের নতুন কোচ সেই প্রশ্নও উঠে।