ছলনার নতুন কৌশল: বাজিকরদের চোখে আইপিএল ছাই

আইপিএলকে ঘিরে আগ্রহের কমতি নেই। আবার ভারতকে ধরা হয় ক্রিকেটের আঁতুড়ঘর। কতশত আয়োজন ক্রিকেটকে ঘিরে। আর সেকারণেই জুয়াড়িদের নজর যেন স্থির থাকে ভারতের উপর। আর কিছু জুয়াড়িদের বোকা বানিয়ে অর্থ আত্মসাতের পথ খুঁজে বের করে ভারতীয় চার যুবক।

কোটি আলোর রোশনাই। কয়েকশ কোটি চোখের অনড় দৃষ্টি। সীমানা ছাড়িয়ে খেলোয়াড়দের মিলনমেলা। আর অঢেল অর্থের ছড়াছড়ি। এসব নিয়েই তো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। কতশত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। জনপ্রিয়তায় সবার উপরে অবস্থান আইপিএলের। আর অর্থের দিক থেকেও পৃথিবীর সেরা ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট।

আর তাইতো আইপিএলকে ঘিরে আগ্রহের কমতি নেই। আবার ভারতকে ধরা হয় ক্রিকেটের আঁতুড়ঘর। কতশত আয়োজন ক্রিকেটকে ঘিরে। আর সে কারণেই জুয়াড়িদের নজর যেন স্থির থাকে ভারতের উপর। আর কিছু জুয়াড়িদের বোকা বানিয়ে অর্থ আত্মসাতের পথ খুঁজে বের করে ভারতীয় চার যুবক। রীতিমত আয়োজন করে রাশিয়ান জুয়াড়িদের অর্থ বাগিয়ে নেওয়ার পথ খুঁজে বের করে গুজরাটের চার যুবক।

তবে স্বাভাবিক ক্রিকেটের ছিটেফোঁটাও ছিল না। সবকিছুই ঘটেছে একেবারে সিনেমার শ্যুটিংয়ের মত করেই। চারিদিকটা বালুতে আচ্ছন্ন। পিচের জায়গায় সাদা এক কার্পেট ছড়ানো। আম্পায়ারদের কাছে থাকছে ওয়াকি-টকি। ব্যাটাররা থাকছেন পুরো ক্রিকেট সরঞ্জামে সুসজ্জিত। তবে ক্রিকেটটা ঠিক ঠাক খেলা হচ্ছে না। হবেই বা কি করে? ক্রিকেট খেলা কেউই তো আর পেশাদার ক্রিকেটার না।

এতসব আয়োজনের মূলমন্ত্র অর্থ আয়। তবে এমন প্রতারণা খুব বেশি সময় ধরে চলতে দেয়নি গুজরাট পুলিশ। অচিরেই এই মিথ্যে আয়োজনের খবর পৌঁছে যায়। পুলিশের তদন্তের ফলে বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। আয়োজনের সব ফিরিস্তি বেড়িয়ে আসে পুলিশ মারফত। আয়োজক চার যুবককে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।

সেই চার যুবকের একজন এক সময় কাজ করতেন রাশিয়ার এক নাইটক্লাবে। সেখানেই ক্রিকেটে আগ্রহী জুয়াড়িদের সাথে পরিচয় হয় তাঁর। সেখান থেকেই তাঁর মাথায় সহজে অর্থ উপার্জনের চিন্তা আসে। আর তিনি তাঁর বাকি তিন সঙ্গীকে নিয়ে আয়োজন করে ফেলেন মিথ্যে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। এখানে প্রতিটা বলই মনিটর করতেন আম্পায়াররা। তাঁদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হত আয়োজকদের কাছ থেকে।

ক্যামেরা মারফত সে খেলাগুলো সরাসরি সম্প্রচারও করা হত ইউটিউবে। সেখান থেকেই মূলত রাশিয়ান জুয়াড়িরা খেলা দেখতেন এবং বাজি ধরতেন। এমন অভিনব কায়দায় প্রতারণা বেশ বিরল। তাছাড়া ভারতের আইনে একমাত্র ঘোড়াদৌড় বাদে যেকোন খেলাধুলায় বাজি ধরা একেবারেই নিষিদ্ধ। সে আইনের আওতায় মূলত দণ্ডবিধির মুখোমুখি হবেন ভারতীয় সেই চার যুবক।

তবে একটা জিনিস ভাবিয়ে তোলে। ভারতের ক্রিকেট নিয়ে ঠিক কতটা পরিমাণ আগ্রহ রয়েছে পুরো বিশ্বের মানুষদের। তাছাড়া আইপিএলকে ঘিরে নানা সময়ে ওঠা ফিক্সিং গুঞ্জন একেবারেই ফেলে দেওয়ার মত নয়। মিথ্যে আয়োজনে এত পরিমাণ বাজির আয়োজন হলে আইপিএলকে ঘিরেও নিশ্চয়ই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে জুয়াড়িরা। বিশাল অর্থের প্রলোভন এড়িয়ে যাওয়াও তো দুষ্কর।

খেলোয়াড়দের সেই প্রলোভন থেকে মুক্ত রেখে একটা স্বচ্ছ আয়োজন করাও তো আর চাট্টিখানি কথা নয়। তবে ভারতের আনাচে-কানাচে এমন আয়োজন আরও যে হচ্ছে না সে নিশ্চয়তা তো নেই। ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অপকর্ম। ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটকে কলুষিত করতে দেওয়া যায় না নিশ্চয়ই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...