একজন খবর তৈরী করেন এবং একজন খবর সরবরাহ করেন। এই দু জনের জুটি হলে কেমন হয়?
আছে, এরকম কিছু জুটি। যেখানে ক্রিকেটার ও তাঁর স্ত্রী দু’জনই আলোচনায় থাকেন। ক্রিকেটার মাঠে খেলেন। আর তার স্ত্রী সে নিয়ে সংবাদ করেন।
শুধু ক্রিকেটাররা নন, তাঁদের স্ত্রীরাও থাকেন সংবাদমাধ্যমের লাইম লাইটে। সাধারণ দর্শকদের মধ্যেও তাঁদেরকে নিয়ে থাকে অনেক আলোচনা-সমালোচনা। ক্রিকেট মাঠে এমন অনেক ক্রিকেটার আছেন যারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন মাঠের বাইরের তারকাদের সাথে। যেমন, ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি বিয়ে করেছেন বলিউড অভিনেত্রী আনুশকা শর্মাকে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ অনেক গোপনীয়তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন। তাঁর স্ত্রী সানাজানা গানেশা একজন টিভি উপস্থাপক। শুধু জাসপ্রতি বুমরাহ নন, আরো অনেক ক্রিকেটারই এমন টিভি উপস্থাপককে বিবাহ করেছেন। সেই তালিকা নিয়ে আজকের এই আয়োজন।
- মরনে মরকেল (দক্ষিণ আফ্রিকা)
প্রোটিয়া পেসার মরনে মরকেল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন ২০১৮ সালে। তিনি বিয়ে করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট সাংবাদিক রোজ কেলিকে।
রোজ কেলি অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। তিনি অস্ট্রেলিয়ান টিভি চ্যানেল চ্যানেল নাইনের একজন ক্রিকেট সাংবাদিক ছিলেন। ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ চলাকালীন সময়ে পরিচয় রোজ কেলি এবং মরনে মরকেলের মধ্যে। আর ২০১৪ সালে আবুধাবিতে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ চলাকালীন সময়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন মরনে মরকেল। একই বছরের ডিসেম্বরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এই জুটি।
এই জুটির ঘরে আছে দুই সন্তান। বিয়ের পর অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান রোজ কেলি। আর দক্ষিণ আফ্রিকায় এসে ফ্রিল্যান্স ক্রিকেট সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। মরনে মরকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর এই জুটি অস্ট্রেলিয়াতে স্থায়ী হন। আর সেখানে ফিরে আবারো চ্যানেল নাইনে ক্রিকেট সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন রোজ কেলি।
- মার্টিন গাপটিল (নিউজিল্যান্ড)
নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওপেনার হলেন মার্টিন গাপটিল। নিউজিল্যান্ডকে ২০১৫ এবং ২০১৯ বিশ্বকাপে ফাইনালে তোলার পিছনে বেশ ভালো অবদান ছিলো মার্টিন গাপটিলের।
মার্টিন গাপটিল বিয়ে করেছেন নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট টিভি শো উপস্থাপক লাওরা ম্যাকগোল্ডকে। লাউরা ম্যাকগোল্ড শুধু একজন টিভি শো উপস্থাপক নন, তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি শুধু একজন টিভি উপস্থাপক নন, পাশাপাশি অভিনয়ও করেন। এছাড়াও রেডিও শো করেন এবং ক্রিকেট সাংবাদিক। ম্যাকগোল্ড বিশ্বাস করেন তাঁর বড় ভাইদের ক্রিকেট খেলার সুবাদে তিনি ক্রিকেট সাংবাদিকতায় আসতে পেরেছেন।
ম্যাকগোল্ডের উত্থান ছিলো ক্রিকেট শো নামে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই এই অনুষ্ঠান করার সুযোগ পান ম্যাকগোল্ড। আর এখানে থাকাকালীন সময়ে মার্টিন গাপটিলের সাক্ষাৎকার নেন। আর সেখান থেকেই পরিচয় তাঁদের মধ্যে। ২০১৭ সালে এই জুটি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই জুটির ঘর আলো করে এসেছে এক মেয়ে। যার নাম হার্লি।
- স্টুয়ার্ট বিনি (ভারত)
ভারতীয় তারকা রজার বিনির ছেলে স্টুয়ার্ট বিনি। স্টুয়ার্ট বিনি ছিলেন একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। তিনি ২০১৪-১৫ সালে জাতীয় দলের হয়ে নিয়মিত খেলেছেন।
স্টুয়ার্ট বিনি বিবাহ করেছেন ভারতের জনপ্রিয় স্পোর্টস শো উপস্থাপক মায়ান্তী লাঙ্গার। মায়ানতি ল্যাঙ্গার জনপ্রিয়তা পান ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে স্টার স্পোর্টসের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। স্টার স্পোর্টসে যোগদানের আগে তিনি কাজ করতেন ভারতের আরেক ব্রডকাস্ট জায়ান্ট টেন স্পোর্টসে। টেন স্পোর্টসে থাকাকালীন সময়ে ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২০১০ কমনওয়েলথ গেমসের অনুষ্ঠানেও কাজ করেন মায়ান্তি ল্যাঙ্গার।
এই জুটি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ২০১২ সালে। ২০২০ সালে এই জুটির ঘর আলো করে এসেছে এক ছেলে সন্তান।
- বেন কাটিং (অস্ট্রেলিয়া)
বেন কাটিং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফ্রাঞ্চাইজি লিগের অন্যতম সেরা আকর্ষণ। জাতীয় দলের হয়ে নিয়মিত না খেললেও ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে বেশ সুনামের সাথে খেলে যাচ্ছেন তিনি। তিনি বিবাহ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার টিভি উপস্থাপক এরিন হল্যান্ডকে।
এরিন হল্যান্ড শুধু একজন ক্রিকেট উপস্থাপক নন। তিনি একজন মডেলও বটে। ২০১৩ সালে এরিন হল্যান্ড মিস ওয়ার্ল্ড অস্ট্রেলিয়া নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি মিস ওয়ার্ল্ড কন্টিনেন্টাল কুইন অফ বিউটি, ওশেনিয়া নির্বাচিত।
এই জুটির বাগদান সম্পন্ন হয়েছিলো ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে। করোনা মহামারীর কারণে তাঁরা দুইবার তাঁদের বিয়ের তারিখ পিছিয়েছিলো। শেষ পর্যন্ত এই বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি তাঁদের মধ্যে বিবাহ সম্পন্ন হয়।
- শেন ওয়াটসন (অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়া কিংবদন্তি অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন সাম্পতিক সময়ে ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়াকে অনেক সাফল্য এনে দেয়া এই অলরাউন্ডার প্রায় এক দশক ধরে সুখী সংসার করছেন। বিবাহিত জীবনে তাঁর স্ত্রী লি ফুরলং একজন টিভি উপস্থাপক।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী ২০০৪ সালে তাঁদের মধ্যে পরিচয় হয়। আর ২০০৬ সাল থেকে এই জুটি সম্পর্কে জড়িয়েছেন। লি ফুরলং অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় একজন টিভি উপস্থাপক। তিনি মূলত তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছেন একজন ক্রিকেট টিভি উপস্থাপক হিসেবে। এই জুটি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিন জুন, ২০১০ তারিখে।
এই জুটি নিজেদের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন দাতব্য কাজে নিয়োজিত আছে। তাঁরা দুই জনই গ্লেন ম্যাকগ্রা ফাউন্ডেশনের ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছেন।