অশ্বিন, অক্ষর ও সুন্দর – ভারতের ত্রিমুখী লড়াই

মাসখানেক আগেও পুরো ভারত যখন বিশ্বকাপ স্কোয়াড নিয়ে আলোচনায় মগ্ন, তখন কোথাও উচ্চারিত হয়নি রবিচন্দ্রন অশ্বিনের নাম। এমনকি অশ্বিন নিজেও জানতেন পরিকল্পনায় রাখা হয়নি তাঁকে। কিন্তু ভাগ্যচক্রে এখন বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেয়ার লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি, যেখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দী তরুণ ওয়াশিংটন সুন্দর।

অক্ষর প্যাটেল ইনজুরিতে পড়ার পরেই ব্যাকআপ অপশন হিসেবে রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং ওয়াশিংটন সুন্দরকে প্রস্তুত করেছিল টিম ইন্ডিয়া। তবে অক্ষরের শারীরিক উন্নতি সন্তোষজনক গতিতে না হওয়ায় অশ্বিন এবং সুন্দরের মধ্যে যেকোনো একজনের বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুজনের পারফরম্যান্স তাই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন নির্বাচকরা।

সাবেক নির্বাচক এমকে প্রসাদ অবশ্য এগিয়ে রাখছেন অভিজ্ঞ অশ্বিনকে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় অশ্বিন কিছুটা এগিয়ে থাকবে। আমি সর্বদা অনুভব করেছি যে দল যখন ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরিকল্পনা শুরু করেছে তখন থেকেই অশ্বিনকে সেখানে রাখা উচিত ছিল। দুটো পথ এখন খোলা আছে – যদি বোলিং ব্যাটিং দুইদিকই চায় তবে সেটা ওয়াশি-ই। তবে স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে অশ্বিন প্রথম পছন্দের।’

যদিও এই প্রাক্তন এই ক্রিকেটারের মতে অক্ষর সুস্থ হয়ে উঠলে তাঁকেই দলে নেয়া উচিত। সেক্ষেত্রে অশ্বিন কিংবা ওয়াশিংটন যতই ভাল করুক সেটা বিবেচনা করার প্রয়োজন নেই।

অন্যদিকে হরভজন সিং উল্টোটা বিশ্বাস করেন। যেহেতু এশিয়া কাপের ফাইনালে দলের সঙ্গে ছিলেন ওয়াশিংটন, ফিল্ডিংও করেছেন তাই তিনিই অক্ষরের বদলি হওয়া উচিত। হরভজন জানান যে, ‘ওয়াশিংটন পাওয়ার প্লে-তে দারুণ বোলিং করে, সে দুর্দান্ত ফিল্ডারও। আবার লোয়ার মিডল অর্ডারে বাঁহাতি ব্যাটিংও করতে পারে – সবমিলিয়ে সে একটা প্যাকেজ।’

নাম না প্রকাশ করার শর্তে বর্তমান একজন নির্বাচকও মন্তব্য করেছেন ‘ওয়াশি-অ্যাশ’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘অক্ষরের চোট আশীর্বাদ হতে পারে দলের জন্য, আগেই একজন বামহাতি অফ স্পিনার নেয়া উচিত ছিল। এবার শেষ সময়ে সেই ভুল শুধরানোর সুযোগ এসেছে। অক্ষর ব্যাটার হিসেবে এশিয়া কাপে ভাল খেলেছে ঠিকই, কিন্তু বোলিংয়ে? যে পিচে আসালঙ্কা চার উইকেট পায়, সেখানে অক্ষর টার্ন-ই করাতে পারেনি।’

এই অজ্ঞাতনামা আরো যোগ করেন যে, ‘পিচের সাহায্য পেলে জাদেজা অপ্রতিরোধ্য বোলার। তখন যদি অন্য পাশ থেকে অশ্বিন বল করে প্রতিপক্ষের জন্য বিপদ দ্বিগুণ হবে। এছাড়া টিম ম্যানেজম্যান্ট অশ্বিনকে তার ফিটনেস আপডেট রিপোর্ট করতে বলেছিল। আপনি বুঝতে পারছেন যে তাঁকে পরিকল্পনায় রাখা হয়েছে, যদিও টিম ম্যানেজম্যান্ট সেরা অপশন কে তাতে একমত হতে পারেনি এখনো।’

অশ্বিনকে নিয়ে বলা এসব কথায় একমত হয়েছেন এমএসকে প্রসাদও। তিনি বলেন, ‘কিছু ম্যাচে স্পিনাররা সাহায্য পাবে। চেন্নাইতে স্টিভ স্মিথ কিংবা ডেভিড ওয়ার্নারের বিপক্ষে অশ্বিনকে ভাবুন। হ্যাঁ, এদের বিপক্ষে অশ্বিনের সাফল্য লাল বলেই বেশি; তবে, সাদা বলেও তো সম্ভাবনা আছে।’

ভারতকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে দ্রুতই; অশ্বিন, ওয়াশিংটন নাকি অক্ষর – কে হবেন দলের দ্বিতীয় স্পিনিং অলরাউন্ডার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ শেষেই হয়তো জানা যাবে উত্তর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link