লড়াইটা বাংলাদেশের যেন নিজেদের মধ্যেই

৬ ওপেনার নিয়ে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজের জন্য দল সাজিয়েছিল বাংলাদেশ। নিয়মিত ওপেনার লিটন-তামিম একই সঙ্গে দলে থাকা আর মিডল অর্ডারে সাকিব, মুশফিকদের অনুপস্থিতিতে একটা ব্যাপার অনুমিতই ছিল। কিউইদের বিপক্ষে সিরিজে টপ অর্ডার থেকে মিডল অর্ডার পর্যন্ত হাল ধরতে হবে ওপেনারদেরই। মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের একাদশে দেখা মিলল সেই চিত্রই। ৪ ওপেনার নিয়ে খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপ ভাবনায় নিয়মিত ওপেনার তামিম-লিটন তো থাকছেনই। সাথে এশিয়া কাপের দলে থাকা তানজিদ হাসান তামিমও একাদশে জায়গা পেয়েছেন। আর বহুদিন বাদে বাংলাদেশ একাদশে ফিরেছেন সৌম্য সরকার। বাংলাদেশের একাদশে ৪ ওপেনার খেলানোর নজির এটাই অবশ্য প্রথম নয়।

এর আগে ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে এক ম্যাচে ৪ ওপেনার খেলিয়েছিল বাংলাদেশ। মজার ব্যাপার হলো, সেই ৪ ওপেনারের মধ্যে ৩ ওপেনার রয়েছেন এ ম্যাচের একাদশেও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সে ম্যাচের একাদশে ছিলেন তামিম, লিটন, সৌম্য আর ইমরুল।

অবশ্য এবারে নিউজিল্যান্ড সিরিজ জুড়েই একাদশে এমন আজগুবি পরীক্ষা নিরীক্ষা চলারই সম্ভাবনা বেশি। সৌম্য সরকার ওপেনার হিসেবে খেলতে পারেন। আবার ৭ নম্বরে নেমে পরবর্তীতে পেসার ভূমিকায় অলরাউন্ডারের ভূমিকাতেও আবর্তিত হতে পারেন। বাংলাদেশ হন্যে হয়ে বিকল্প খুঁজছে আবার এই দুই জায়গাতেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আশেপাশে না থাকা সৌম্যর প্রত্যাবর্তনে তাই একটা ব্যাপার স্পষ্টই বটে- এই সিরিজই হতে পারের সৌম্যর বিশ্বকাপ খেলার ভাগ্য নির্ধারক।

অবশ্য নিউজিল্যান্ডের এই সিরিজটাই অনেকের জন্য বিশ্বকাপ স্বপ্নের নিয়ামক। ১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ১২ টা জায়গা প্রায় নির্ধারিত। টিম ম্যানেজমেন্ট দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে বাকি ৩ টি জায়গা নিয়ে। আর সেই ৩ টি জায়গার দৌড়েই রয়েছে নিউজিল্যান্ড সিরিজের স্কোয়াডে থাকা সিংহভাগ ক্রিকেটার। অর্থাৎ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলতে নামলেও মূল লড়াইটা হবে একাদশেও। কারণ একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়েই যে খুলে যাবে বিশ্বকাপ খেলার ভাগ্য।

এই যেমন একাদশে তানজিদ তামিম আর সৌম্য রয়েছেন। বিশ্বকাপ স্কোয়াডে এ দুজনের একই সাথে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা একদম শূন্যের কোঠায় বলা চলে। এ দুই ক্রিকেটারের মধ্যে পারফর্ম করে যে এগিয়ে যাবে, সেই থাকবেন বিশ্বকাপ খেলার দৌড়ে।

আবার ৭ নম্বর পজিশনে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে একই একাদশে রয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর নুরুল হাসান সোহান। সৌম্যকে বিবেচনা করলে এই পজিশনে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে তিনে। অর্থাৎ এই ৩ ক্রিকেটারের মধ্যে যে এই সিরিজে নজর কাড়তে পারবেন, সে-ই সুযোগ পেতে পারেন বিশ্বকাপের স্কোয়াডে।

বিসিবি’র বিবৃতি অনুযায়ী, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করার কথা রয়েছে। এখন দেখার পালা, নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে কে ঐ স্কোয়াডে চমক জাগাতে পারেন। বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট যে বিশ্বকাপ স্কোয়াড তৈরির জন্য নিউজিল্যান্ড সিরিজকে শেষ মানদণ্ড মানছে, তা স্কোয়াড ঘোষণার দিনক্ষণ দেখলেই বুঝা যায়।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link