স্বল্প দৈর্ঘ্যের সিলেট পর্বের শুরুটা হয়েছে ম্যারম্যারে। ঘরের দল সিলেট স্ট্রাইকার্স হেরেছে বাজে ভাবে। স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকদের খানিকটা মনক্ষুন্নই হয়েছে। তবে দ্বিতীয় ম্যাচটা যেন পুষিয়ে দিয়েছে সবটুকু। ফরচুন বরিশাল ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মধ্যকার ম্যাচটা জমেছে বেশ। যদিও শেষ অবধি সব উৎকণ্ঠা পেরিয়ে জয়ের শেষ হাসিটা হেসেছে সাকিব আল হাসানের বরিশাল।
তবে ম্যাচের শুরুটা হয়েছিল যথাওরীতি ধীরস্থির ভাবেই। আরও একটি স্লথ গতির ম্যাচ দেখার প্রস্তুতিই যেন নিচ্ছিল সবাই। কেননা টস জিতে বরিশালের বোলিং তোপের মুখে পড়ে চট্টগ্রামের ব্যাটাররা। এমনিতেই টেবিলের তলানিতে থাকা চট্টগ্রামের ব্যাটারদের মানসিক অবস্থা বেগতিক। তার উপর বরিশালের আত্মবিশ্বাসী বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে খানিকটা নড়বড়ে শুরু। সেই অবস্থাই দলের রান তোলার গতিকে দমিয়ে দেয়।
মন্থর গতিতেই রান তুলতে থাকে চট্টগ্রামের ব্যাটাররা। উইকেট বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা অবশ্য সফলতার মুখ দেখেনি। একটা পর্যায়ে স্বল্প রানে থেমে যাওয়ার শঙ্কা জাগে। সেই পরিস্থিতি থেকে চট্টগ্রামকে পরিত্রাণ দেয় আফিফ হোসেন ও নতুন সংযোজন কার্টিস ক্যাম্ফার। এই দুই ব্যাটারের দ্রুতগতির ইনিংস লড়াই করবার মত পুঁজি এনে দেয় চ্যালেঞ্জার্সদের। ১৬৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুড়ে দিতে সক্ষম হয় শুভাগত হোমের দল।
প্রথম দুই ওভারে বরিশালের ব্যাটারদের অস্বস্তিতে ফেলে দেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি ও মেহেদি হাসান রানা। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের শেষ দুই বলে বিশাল দুই ছক্কা হাকিয়ে প্রাথমিক চাপটা ঠেলে দূরে সরিয়ে দেন এনামুল হক বিজয়। দিনটি অবশ্য বিজয়ের ঘোষণা করা যেতেই পারে। এদিন তিনি যা যা করতে চেয়েছেন ব্যাট হাতে ঠিক যেন তাই হয়েছে। সুবিশাল ছক্কা হাকিয়েছেন বেশ কয়েকটি। আবার ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক সংযোগ না হওয়া বলও ছুঁয়েছে বাউন্ডারি।
টুর্নামেন্টের পঞ্চম দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ২৭ বলে পঞ্চাশ রানের গণ্ডি পার করেন বিজয়। কিন্তু একপ্রান্তে বিজয় আক্রমণ চালিয়েছেন তো আরেক প্রান্তে উইকেট পড়েছে টপাটপ। সেই কৃতীত্ব অবশ্য চট্টগ্রামের তরুণ বোলার নিহাদুজ্জামানের। সাকিব আল হাসানকে দুর্দান্ত এক আর্মার বলে বোল্ড আউট করে শুরু। এরপর ইফতেখার আহমেদ, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও চাতুরাঙ্গা ডি সিলভার উইকেট নিয়ে ক্ষান্ত হন নিহাদুজ্জামান।
চার ওভারে ১৭ রান দিয়ে পকেটে পুরেন চারটি মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেট। নিহাদের এমন বোলিং তাণ্ডবে জয়ের আশা ক্ষীন হতে শুরু করে বরিশালের। ৫০ বলে ৭৮ রানের বিজয়ের ইনিংসটিও ব্যর্থ ঠেকতে লাগল। তবে তেমনটা আর হতে দেননি সতীর্থ করিম জানাত ও সালমান হোসেন। ২৩ বলে এই জুটি থেকে রান আসে ৫০ রান। ২৫৯ স্ট্রাইকরেটে টর্নেডো চালান জানাত। আর তাতেই উড়ে যোজন যোজন দূরে দলে যায় চট্টগ্রামের জয়ের আশা। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে আসে ফরচুন বরিশাল।